আদার স্বাস্থ্য উপকারিতা কী কী?

বিভিন্ন গবেষণায় আদার গুণের কথা জানা গেছে ৷ বিশেষ করে ক্লান্তি ও বমি বমি ভাব দূর করতে এটি বেশ উপকারী ৷ তবে যাদের পেট সংবেদনশীল এবং যাদের বুক জ্বালাপোড়া সমস্যা রয়েছে, তাদের আদা খাওয়ার পরিমাণ সম্পর্কে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা ৷
জার্মান চিকিৎসক ইয়স্ট লাঙহর্স্ট ও তার দল বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় আদা ব্যবহার করেন। ‘আমাদের ইন্টিগ্রেটিভ মেডিসিন এবং নেচারোপ্যাথি ক্লিনিকে আদার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে ৷
প্রতিদিন এটা নানান কাজে ব্যবহার করা হয়। যেমন, শরীরে মাখার পাউডার হিসেবে, কিংবা ক্ষুধা কমে যাওয়া, বদহজম বা বমি বমি ভাব, এসব অসুখের বিরুদ্ধে লড়তে চা হিসেবে। এ ছাড়া আদার ক্যাপসুলও আছে; জানান তিনি ৷
আদার মধ্যে অনেক সেসকোয়াই-তারপিন তেল আছে ৷ আরও আছে জিঞ্জারওল ও শ'গেওল নামের ঝাঁঝালো উপাদান। ভিটামিন সি'ও আছে অনেক। তাই শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় আদা।
লাঙহর্স্ট বলেন, ‘ঝাঁঝালো উপাদান ও তেলের প্রভাব জিহবাতেই শুরু হয়। এ ছাড়া পুরো হজম প্রক্রিয়ার উপরই এটা প্রভাব ফেলে। যেমন ডুডেনামে, সেখানে হজমকারী এনজাইমগুলো আংশিকভাবে হজম হওয়া খাবারকে ভেঙে দেয় ৷
সেখানে তারা হজমে সাহায্য করতে পারে, বমি বমি ভাবও দূর করতে পারে।
জার্মানির মিউনিখের লাইবনিৎস ইনস্টিটিউট ফর ফুড সিস্টেমস বায়োলজিতে ডা. গাবি অ্যান্ডারসন সুস্থ মানুষের রক্তে আদার প্রভাব পরীক্ষা করে দেখতে পেয়েছেন যে, আদার ঝাঁঝালো উপাদান শ্বেত রক্তকণিকাকে সতর্ক অবস্থায় রাখে।
অ্যান্ডারসন জানান, ‘আমরা দেখাতে সক্ষম হয়েছি যে, রক্তকণিকায় একটি রিসেপ্টর আছে, যেটা আদাতে থাকা ঝাঁঝালো উপাদান দ্বারা সক্রিয় করা যেতে পারে। এ ছাড়া আদা রোগ-প্রতিরোধক কোষগুলোকে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের বিরুদ্ধে আরও শক্তিশালীভাবে লড়তে সহায়তা করে।’
আদা প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে ৷ বমি বমি ভাবের চিকিৎসায় এর উপকারিতা নিয়েও অনেক গবেষণা হয়েছে। দিনে ৫০ গ্রাম আদা বা ৫ গ্রাম আদার গুঁড়া নিরাপদ বলে বিবেচনা করা হয় ৷
চিকিৎসক লাঙহর্স্ট জানান, ‘কিছু মানুষের আদা'য় অ্যালার্জি হতে পারে, তবে এটা খুব বিরল। গর্ভাবস্থায় শুধুমাত্র চায়ে আদা দিয়ে খাওয়া উচিত।’
ঝাঁঝালো হওয়ায় জুসে আদা মেশানোর সময় সতর্ক থাকতে হবে। পুষ্টিবিদ এফা-মারিয়া ডিলিৎস বলেন,‘আদার আসলে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, কিন্তু যাদের পেট সংবেদনশীল এবং বুকে জ্বালাপোড়া সমস্যা আছে তাদের এটা এড়িয়ে চলা উচিত।’