স্ট্রোক হলে প্রাথমিক অবস্থায় করণীয়

স্ট্রোক মস্তিষ্কের সমস্যা। স্ট্রোক দুই ধরনের হয়—হেমোরেজিক ও ইসকেমিক। ইসকেমিক স্ট্রোকে মস্তিষ্কের ভেতরে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আর হেমোরেজিক স্ট্রোকে সাধারণত মস্তিষ্কের রক্ত চলাচলের নালি ছিঁড়ে যায়।
স্ট্রোক হলে প্রাথমিক অবস্থায় করণীয় বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৯১৯তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. সৈয়দ ওয়াহিদুর রহমান। বর্তমানে তিনি ডেল্টা মেডিকেল কলেজের নিউরোমেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : স্ট্রোক হলে হাসপাতালে নেওয়ার আগপর্যন্ত কিছু কি করণীয় রয়েছে?
উত্তর : চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে দ্রুত। যাকে পাওয়া যায়, প্রথম তার পরামর্শই নিতে হবে। স্ট্রোক কী কারণে হয়? এটি তো এখনো তেমনভাবে জানা যায়নি। তবে কতগুলো জিনিসের সঙ্গে স্ট্রোক সম্পর্কিত থাকে। এগুলোকে বলে ঝুঁকিপূর্ণ কারণ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তার উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস খুব বেশি হয়। দ্রুত তার রক্তচাপ, পালস, ব্লাড সুগার এগুলো দেখতে হবে। যদি দেখা যায় এগুলো বেশি রয়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দেরি না করে অবশ্যই দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে। হার্ট অ্যাটাক হোক আর মস্তিষ্কের অ্যাটাকই, দুটোর ক্ষেত্রেই এ কাজ করতে হবে। বাসায় খুব বেশি সময় থাকা ঠিক হবে না।
প্রশ্ন : স্ট্রোক হওয়ার পর হাসপাতালে নিলে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসকরা কী করেন?
উত্তর : চিকিৎসা পদ্ধতি বিভিন্ন রকম রয়েছে। প্রথমে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে স্ট্রোক হয়েছে কি হয়নি, এ বিষয়ে। একে ক্লিনিক্যাল বলা হয়। লোকজন আত্মীয়স্বজনের কাছে শুনে জানতে হবে তার ঝুঁকিগুলো আগে থেকে ছিল কি না। যেমন—ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, বেশি ওজন, রক্তের চর্বি বেশি, ধূমপান, মদ্যপানের ইতিহাস রয়েছে, পারিবারিক ইতিহাস জানব। এসব যদি হয়, তাহলে স্ট্রোক হওয়ার একটি সন্দেহ থাকতে পারে। তার পরে যেগুলো লক্ষণ আমরা বললাম যে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, মুখ দিয়ে লালা পড়া, তার হাত-পা দুর্বল হয়ে যাওয়া, কথা জড়িয়ে যাওয়া, প্রস্রাব-পায়খানা কাপড়ে করে দেওয়া, এগুলো যদি থাকে, তাহলে আমরা মোটামুটি ধরে নেব তার স্ট্রোক হয়েছে। তখন আমরা নিশ্চিত করি, এটি স্ট্রোক কি স্ট্রোক নয়। দেখি, এটি কি রক্ত চলাচল বন্ধের জন্য নাকি রক্তনালি ছিঁড়ে যাওয়ার জন্য। এই দুটোর ক্ষেত্রে চিকিৎসা কিন্তু আলাদা রয়েছে। সেই জিনিসটাই জানা প্রথম পর্যায়ে জরুরি।