কানে কিছু ঢুকলে

নাকের মতো কানের মধ্যে বাইরের বস্তু ঢুকতে পারে। কানের মধ্যে বলতে সাধারণত বহিঃকর্ণকেই বোঝানো হয়।
এগুলোর কোনো কোনোটি শিশুরা নিজেরাই বহিঃকর্ণে ঢোকায়। যেকোনো ধরনের শস্যদানা ও বনজ : যেমন—ছোলা, মটর, পাতার অংশ, ধান। অন্যান্য জিনিসের মধ্যে আছে : যেমন—পুঁতি বা ছোট্ট বল, ছোট পাথরের টকুরা, বোতাম, কাগজ, মুড়ি ইত্যাদি। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে জীবিত কীটপতঙ্গ : যেমন—পিঁপড়া, তেলাপোকা, মশা ইত্যাদি কানের মধ্যে ঢুকে পড়ে।
আর কিছু ক্ষেত্রে অসাবধানতাবশত কানে কিছু ঢুকে যায়। কানের মধ্যে অনিচ্ছাকৃতভাবে অনেক সময় ধান ঢুকতে দেখা যায়।
কানের মধ্যে কোনো কিছু ঢুকলে কী হয়?
রোগী নিজেই প্রথমে বিষয়টি বুঝতে পারেন। কানের মধ্যে বাইরের কোনো কিছু ঢুকলে বস্তুর ধরন অনুযায়ী উপসর্গ দেখা দেয়। কীটপতঙ্গ ঢুকলে খুব ব্যথা হয়। অন্যান্য ক্ষেত্রে কান বন্ধ হয়ে যায়। কান দিয়ে পুঁজ পড়ে, দুর্গন্ধ হয়। কানের মধ্যে অস্বস্তি তো আছেই।
কী করে বোঝা যায় কানে কী ঢুকল?
কানের মধ্যে কোনো কিছু ঢুকলে কান পর্যবেক্ষণ করেই বুঝতে পারেন নাক কান গলা রোগ বিশেষজ্ঞ। অনেক সময় অটোস্কোপির মাধ্যমে কান পর্যবেক্ষণ করলে আরো ভালোভাবে বহিঃকর্ণের ভেতরটা দেখা যায়।
কানে কিছু ঢুকলে করণীয় কী?
কী করতে হবে, সেটি নির্ভর করে কানে কী ঢুকছে তার ওপর। কানের মধ্য থেকে কোনো কিছু বের করার জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগীকে অচেতন করে নিতে হয়।
বিশেষ করে শিশুদের অচেতন করে নেওয়াই ভালো। কারণ, অচেতন না করে কানে কোনো কাজ করতে গেলে কান আঘাতপ্রাপ্ত হতে পারে।
কানের মধ্য থেকে কোনো কিছু বের করতে কখনই কোনো হাতুরে ডাক্তারের কাছে যাওয়া ঠিক নয়। একইভাবে নিজেরাও বের করার চেষ্টা করা উচিত নয়। অদক্ষ হাতে, দরকারি যন্ত্রপাতি ছাড়া এ ধরনের কাজ করতে গেলে বহিঃকর্ণ এবং কানের পর্দা আঘাতপ্রাপ্ত হতে পারে। অযাচিতভাবে অজ্ঞাতবশত খোঁচাখুঁচির জন্য বাইরের বস্তুটি কানের পর্দা ফুটো হয়ে মধ্যকর্ণে ঢুকে যেতে পারে। তখন এটি বের করে আনা আরো জটিল হয়ে যায়।
পোকা বা পিঁপড়া বা তেলাপোকা ঢুকলে সেটিকে মেরে ফেলার জন্য কানের মধ্যে বেশি করে স্পিরিট দেওয়া যেতে পারে। মেরে ফেলার পর সেটি বের করে আনতে হবে।
এ জন্য অনেক সময় অচেতন করার দরকার পড়ে। অন্যান্য বস্তু ঢুকলে সেটিও বের করে আনতে হবে।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ।