শেষ হলো অ্যাসোসিয়েশন অব ক্লিনিক্যাল এন্ডক্রিনোলজিস্টের সপ্তম বার্ষিক সম্মিলন

রাজধানীতে শেষ হলো তিন দিনব্যাপী অ্যাসোসিয়েশন অব ক্লিনিক্যাল এন্ডক্রিনোলজিস্ট এন্ড ডায়াবেটোলজিস্ট অব বাংলাদেশের সপ্তম বার্ষিক সম্মিলনী। রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হলেও পরবর্তী দুই দিনের অনুষ্ঠান আজ ও গতকাল শনিবার (১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর) হয় ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ডা. রোবেদ আমিন এবং সংগঠনের সভাপতি প্রফেসর ডা. ফরিদ উদ্দিন উপস্থিত থেকে সম্মিলনী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।
প্রি কনফারেন্স অনুষ্ঠানে সার্বিক সহযোগিতা করেছে রেনাটা লিমিটেড। অনুষ্ঠান শুরুর আগে একটি প্রি-কনফারেন্সে মানবদেহের থাইরয়েড রোগ নিয়ে আলোচনা এবং একটি ট্রেনিং সেশনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৪০ জন ডাক্তার অংশগ্রহণ করেন। প্রফেসর ডা. মো. দেলোয়ার হোসেন সেশনে অংশ নেওয়া ডাক্তারদের থাইরয়েড আল্ট্রাসাউন্স নিয়ে বিস্তারিত ধারণা দেন। এরপর ডাক্তাররা উল্লিখিত থাইরয়েড আল্ট্রাসাউন্ড বিষয়ে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণ শেষে ডাক্তারদের সনদপত্র প্রদান করেন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. ফরিদ উদ্দিন ও প্রফেসর ডা. মো. দেলোয়ার হোসেন। এসময় তিনি বলেন, এ প্রশিক্ষণ থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা ডাক্তাররা মানবকল্যাণে ব্যয় করবেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার উপস্থিত এন্ডক্রিনোলজিস্ট ও ডায়াবেটোলজিস্টদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আমাদের এসব ডাক্তাররা অত্যন্ত কঠিন ও জটিল বিষয়ের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। আমি ডাক্তারদের অনুরোধ করব, তারা যেন রোগীর সাথে রোগ নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেন। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে রোগীর সব সমস্যা জেনে চিকিৎসা পরামর্শ দেন। এখন বিজ্ঞান ও টেকনোলজির উন্নতি হওয়ায় এ চিকিৎসার পরীক্ষা-নিরীক্ষায় অনেক গতি এসেছে।
ডায়াবেটিক চিকিৎসায় ধর্মের মেলবন্ধন ঘটানোর জন্য তিনি সংগঠনের সভাপতি প্রফেসর ড. ফরিদ উদ্দিনকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, মানবদেহের বহু রোগের জন্য ডায়াবেটিক দায়ী। এসব জটিল রোগ নিয়ে যারা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, তাদের সাফল্য কামনা করছি।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ডা. রোবেদ আমিন তার বক্তব্যে স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন পরিসংখ্যান নিয়ে কথা বলেন। ডায়াবেটিক রোগ ও রোগের চিকিৎসা নিয়ে কথা বলেন। সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে কথা বলেন। দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে এই বিষয় অন্তর্ভুক্তির জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান।
অ্যাসোসিয়েশন অব ক্লিনিক্যাল এন্ডক্রিনোলজিস্ট এন্ড ডায়াবেটোলজিস্ট অব বাংলাদেশের সভাপতি প্রফেসর ডা. ফরিদ উদ্দিন তার বক্তব্যে বাংলাদেশের এন্ডক্রিনোলজিস্ট ও ডায়াবেটোলজিস্টদের নিয়ে কথা বলেন। বিষয় ভিত্তিক জ্ঞান অজর্নের উপর তিনি জোর দেন। এন্ডক্রিনোলজির খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে জানার জন্য ডাক্তারদের আহ্বান জানান।
সংগঠনের গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে ডা. ফরিদ উদ্দিন বলেন, কোন বড় কিছু একা করা সম্ভব না। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বড় কিছু করতে হয়। বাংলাদেশে যারা ডাক্তারির এই বিশেষ শাখায় সেবা প্রদান করছেন তাদের জন্য একটি প্লাটফর্ম তৈরি করা ছিল এই সংগঠনের উদ্দেশ্য। এছাড়া ডাক্তাররা যাতে এই বিষয়ে বিভিন্ন সেমিনার কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করতে পারেন সেদিকে খেয়াল রাখা। এতে তারা আরও জানবে এবং তাদের ক্যারিয়ার আরও উজ্জ্বল হবে। এছাড়া এই সংগঠনের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্য দেন অ্যাসোসিয়েশন অব ক্লিনিক্যাল এন্ডক্রিনোলজিস্ট এন্ড ডায়াবেটোলজিস্ট অব বাংলাদেশের মহাসচিব প্রফেসর ডা. মো. রুহুল আমিন। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ।
এছাড়া অনুষ্ঠানে দেশ বিদেশের বিশেষজ্ঞ, ডাক্তার, গবেষক ও ছাত্ররা উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সংগীতশিল্পীদের পাশাপাশি ডাক্তাররাও গান পরিবেশন করেন।