অগ্ন্যাশয়ের চিকিৎসা কী?

প্যানক্রিয়াস বা অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহকে প্যানক্রিয়াটাইটিস বলে। মদ্যপান, রক্তে চর্বি জমে যাওয়া, ধূমপান ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে এই রোগ হয়। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৫৮৯তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. মো. মহসিন চৌধুরী। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোবিলিয়ারি সার্জারি বিভাগের ইউনিট প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : একিউট প্যানক্রিয়াটাইটিস নিশ্চিত হওয়ার পর এর চিকিৎসা কী?
উত্তর : রোগনির্ণয়ের পর আমরা রোগীকে বলি যে, আপনি দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হোন। এটা বাসায় বসে চিকিৎসা করা যাবে না। তাকে স্যালাইন দিতে হয়। অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হয়। চর্বিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে বলা হয়। বেশির ভাগ একিউট প্যানক্রিয়াটাইটিস এভাবে চিকিৎসা করলে ভালো হয়ে যায়। পাশাপাশি কী কারণে প্যানক্রিয়াটাইটিস হলো সেটিও বের করতে হয়। যেমন, গলস্টোন হলে গলব্লাডার ফেলে দিতে হবে। অ্যালকোহল খেলে তাকে বলতে হবে এটি খাওয়া যাবে না।
প্রশ্ন : সাধারণত কতদিন ধরে এই চিকিৎসা চলতে থাকে?
উত্তর : আসলে একিউট প্যানক্রিয়াটাইটিস প্রথম হলে ৯০ ভাগ স্যালাইন, অ্যান্টিবায়োটিক, গলস্টোন বা কোলেরোক্টোমি করার পর ভালো থাকে। কিন্তু কিছু কিছু রোগীর ক্ষেত্রে জটিলতা হয়, ভয়াবহ পরিস্থিতিতে যায়, তাদের খুব ভয়ঙ্কর অবস্থা হয়।
প্রশ্ন : কাদের ক্ষেত্রে এই জটিলতা হয়?
উত্তর : যারা আগেভাগে না আসে, অবহেলা করে, তাদের ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যা হয়। একিউট কেসে বেশি আশঙ্কা থাকে। বারবার একিউট অ্যাটাক হলে ক্রনিকে চলে যেতে পারে। একটি বিষয় রয়েছে প্যানক্রিয়াসে পচন ধরে গেছে। সিস্ট হয়, সিউরোসিস্ট বলি আমরা, এগুলোর জন্য সার্জারির দরকার হবে। সাধারণত একিউট প্যানক্রিয়াটাইটিসে আমরা সার্জারি করি না। স্যালাইন, ইনজেকশন, ডায়েটের ওপরেই রোগী ভালো হয়ে যায়।
প্রশ্ন : প্যানক্রিয়াসের ভূমিকা শরীরে কতখানি? এতে সমস্যা হলে শরীরে কী হয়?
উত্তর : প্যানক্রিয়াস শরীরের খুব গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। প্যানক্রিয়াসের দুটো গুরুত্বপূর্ণ কাজ। একটি হলো এক্সোকাইন, কিছু এনজাইম হজম করার জন্য প্যানক্রিয়াসের জুস খুবই দরকার। এটি প্যানক্রিয়াসের নালি দিয়ে আস্তে আস্তে পেটের খাদ্যনালিতে আসে। প্যানক্রিয়াটাইটিসের সঙ্গে ডায়াবেটিসের একটি সম্পর্ক থাকে। ইনসুলিন কিন্তু প্যানক্রিয়াস থেকে বের হয়। রোগী এগুলোতে ভোগে। ডায়রিয়াতে ভোগে। খাওয়াদাওয়া হজম হয় না।