গাউট রোগের লক্ষণ কী?

গাউট অনেকের ক্ষেত্রেই হতে দেখা যায়। তবে অনেকে কেবল গাঁটের ব্যথাকেই গাউট ভেবে থাকেন। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৫৬৫তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. শামীম আহম্মেদ। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিউমাটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : গাউট রোগটি আসলে কী?
উত্তর : আসলে গাউট হলো শরীরের একটি মেটাবলিক ডিসঅর্ডার। এটা ইউরিক এসিডের কারণে স্বাভাবিকভাবে আমাদের শরীরের কোষগুলো ভাঙছে। এর মধ্যে নিউক্লিক এসিড আছে। এটা ভেঙে তৈরি হয় ইউরিক এসিড। অধিকাংশ সময় ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ইউরিক এসিড প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। আর অনেক সময় মলমূত্রের মতো বেরিয়ে যায়। কোনো কারণে যদি কোষ বেশি ভাঙতে থাকে বা কিডনির কোনো কারণে ইউরিক এসিড যদি বের না হতে পারে, তখন তো শরীরে এর পরিমাণ বেড়ে যায়। এটা বেড়ে গেলেই যেসব জায়গায় গাঁট আছে, সেখানে সাধারণত সমস্যা করে। এ ক্ষেত্রে রোগী তীব্র ব্যথা নিয়ে আসে। একেই আসলে আমরা গাউট বলি।
প্রশ্ন : গাউটের লক্ষণ কী?
উত্তর : গাউট প্রথমে একটি একক গাঁটকে আক্রান্ত করবে। বৃদ্ধাঙ্গুলের জিসটাল অংশে সাধারণত ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ক্ষেত্রে এটি প্রথমে আক্রান্ত করে। গাউটের ব্যথা তীব্র হয়, সহ্য করা যায় না। সাধারণত এই ব্যথা শুরু হয় মাঝরাতের দিকে। পা ফুলে যাবে। নড়াচড়া করতে কষ্ট হবে। তীব্র ব্যথা হলে অনেক সময় এ রকম ব্যথা হয় যে অনেক সময় এই ব্যথার কারণে আত্মহত্যা করার ইচ্ছাও তৈরি হতে পারে।
অনেক সময় হালকা হালকা ব্যথা, বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা করছে—এ রকম লক্ষণ নিয়ে কখনো গাউট হয় না। গাউট মানেই তীব্র ব্যথা।
প্রশ্ন : একজন রোগী গাউট নিয়ে এলে কী কী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন?
উত্তর : এখানে রোগীর একটি জটিল ইতিহাস থাকে। মাঝরাতে তার তীব্র ব্যথা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে আমরা হয়তো গাঁট পরীক্ষা করে দেখি চামড়াটা লাল হয়ে যাবে, ফুলে যাবে। রোগীর হাঁটতে কষ্ট হবে। অনেক সময় রোগীর জয়েন্ট থেকে ফ্লুইড নিয়ে মাইক্রোস্কোপে পরীক্ষা করি। ক্রিস্টালটা দেখি। অনেক সময় যদি নিতে না পারি তখন ক্লিনিক্যাল ফিচার দেখি এই রোগীর আসলে গাউট হয়েছে কি না।
প্রশ্ন : রোগী কীভাবে বুঝবে তার গাউটের ব্যথা হচ্ছে এবং তাকে রিউমাটোলজিস্টের কাছে যেতে হবে?
উত্তর : একটি একক গাঁটে ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ব্যথা নিয়ে আসে। মাঝরাতে ব্যথা হবে, তীব্র ব্যথা হবে। চার থেকে ছয় ঘণ্টার মধ্যে মারাত্মক ব্যথা হবে। চিকিৎসা করলে এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে ভালো হয়ে যাবে।