মানসিক প্রশান্তির জন্য চা
পৃথিবীর পূর্ব ও পশ্চিম-দুই দিকেই চায়ের বিশেষ স্থান। হাজার বছর ধরে ক্লান্তি জুড়ানোয় চায়ের জুড়ি নেই। পশ্চিমের হাত ধরেই ভিন্ন ভিন্ন চায়ের বিভিন্ন প্রকার উপকারিতার সাথে আমরা পরিচিত হয়েছি।
আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি চা উৎপাদিত হয় মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে। বিভিন্ন প্রকার চা এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হলেও সাধারণত গ্রিন চা, ব্ল্যাক চা, হোয়াট চা, ওলং চা এবং ভেষজ চাকে আসল চা হিসেবে গণ্য করা হয়। চাগাছ ক্যামেলিয়া সাইনেনসিসপ্ল্যান্ট (Camellia sinensisplant) গোত্রের, ঝোপজাতীয় গাছ। চায়না ও ভারতে প্রথম চায়ের প্রচলন হয়।
গবেষণায় বলা হয়, চায়ের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্যান্সার ও হৃদরোগের বিরুদ্ধে কাজ করে। এ ছাড়া চা ডায়াবেটিস ও কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং মানসিক প্রশান্তি দেয়। চা বিভিন্ন প্রকার অণুজীবের বিরুদ্ধেও কাজ করে। পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, যেকোনো চা ভালো চা।
বিভিন্ন প্রকার চায়ের উপকারিতা :
গ্রিন চা : ক্যাটেচিন নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মূত্রথলি, স্তন, পাকস্থলি ও অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার কোষ সৃষ্টিতে বাধা দেয়, ধমনীতে রক্ত জমাট বাধা প্রতিরোধ করে, দেহের চর্বির পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। ক্যাটেচিন কার্টিলেজের ভাঙন প্রতিরোধ করে হাড়ের সংযোগস্থলের ব্যথা দূর করে। আলঝেইমার ও পারকিনসন্স রোগের মতো নিউরোলজিক্যাল রোগের ঝুঁকি ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে এই চা বিশেষভাবে উপকারী।
ব্ল্যাক চা : এটি গাজনকৃত চা। এতে ক্যাফেইনের মাত্রা সর্বোচ্চ। ধূমপানের ফলে ফুসফুসে যে ক্ষত সৃষ্টি হয়, তা প্রতিরোধে এই চা বিশেষ উপকারী।
হোয়াইট চা : এই অগাজনকৃত চায়ের ক্যান্সার প্রতিরোধী ভূমিকা আছে।
উলং চা : আংশিক গাজনকৃত এই চায়ের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণাগুণ দেহে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।
ভেষজ চা : ফল, বীজ, শিকড় -কে ফুটন্ত পানিতে সিদ্ধ করে এই প্রকার চা পাওয়া যায়। এর গুণাগুণ নির্ভর করে মূলত ব্যবহৃত উদ্ভিদের গুণাগুণের উপর। জিনজার (ginger), জিংকোবাইলোবা (ginkgo biloba) , জিনসেং ( ginseng), হিবিসকাস (hibiscus), জেসমিন(jasmine), রোসিপ( rosehip), মিন্ট (mint), রইবোস(rooibos ), ক্যামোমাইল(chamomile), আই ইকনেশিয়া(I Echinacea)।
এক কাপ ব্ল্যাক চা থেকে ২ ক্যালরি, ১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায়। এ ছাড়া ম্যাঙ্গানিজের দৈনিক চাহিদার ২৬ শতাংশ, সামান্য পরিমাণ রিবোফ্লাভিন, ফলেট, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম ও কপার পাওয়া যায়।
সৈয়দা তাবাসসুম আজিজ : সহকারী অধ্যাপক, খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগ,গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ
ক্যাপশন : মানসিক প্রশান্তি দেয় চা। ছবি : কিকিকারলি কোলিমি