স্তন ক্যানসার হলেই কি স্তন কেটে ফেলতে হয়?
স্তন ক্যানসার বর্তমানে নারীদের ক্ষেত্রে এক নম্বর ক্যানসার। অনেকের ধারণা, ক্যানসার হলেই স্তন কেটে ফেলতে হয়। আসলেই কি বিষয়টি সঠিক?
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৫৫১তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. আফরিন সুলতানা। বর্তমানে তিনি হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল ও সিটি হসপিটালের সার্জারি বিভাগে পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : স্তন ক্যানসারের রোগী কীভাবে ব্যবস্থাপনা করেন?
উত্তর : আসলে ক্যানসার রোগটি যে পর্যায়েই নির্ণয় হোক, রোগীরা খুব ভয় পেয়ে যায়। যখনই কেউ ক্যানসার রোগের কথা শুনে, খুব আতঙ্কিত হয়। খুব হতাশাতেও ভোগে। কারণ, সবার একটি ধারণা হলো, স্তন ক্যানসার হলেই স্তন কেটে ফেলতে হবে। এ ধারণা থেকে আসলে রোগীরা বেশি ভয় পেয়ে যায় বা ভাবে, ক্যানসার হয়েছে, এখন আমাকে ক্যামোথেরাপি নিতে হবে। আসলে এ ধরনের রোগীর রোগ যখন নির্ণয় হয়, তখন তার রোগটি কোন পর্যায়ে রয়েছে, এর ওপর নির্ভর করে রোগের চিকিৎসা হয়।
আমরা যদি প্রাথমিক পর্যায়ে রোগটি ধরতে পারি, যখন রোগটি কেবল স্তনে রয়েছে বা বগোলের নিচে গেছে, এ রকম অবস্থায় আমরা খুব ভালো চিকিৎসা দিতে পারি। এ সময় রোগীর নিরাময় হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ১০০ ভাগ।
আরেকটি বিষয় জানা জরুরি। এ ক্ষেত্রে রোগীরা অনেক ভয় পায় চিকিৎসকের কাছে আসতে। ভাবে, স্তন কেটে ফেলতে হবে। সেটি নিয়েই আসলে সবচেয়ে বেশি হতাশায় ভোগে। তার পারিবারিক বিষয়, সামাজিক বিষয় চিন্তা করে। অনেক সময় নিজের ফিজিক্যাল অবস্থাটি কেমন হবে, এটি নিয়েও রোগীরা অনেক হতাশ হয়ে যায়। বিশেষ করে তরুণীদের ক্ষেত্রে বেশি অসুবিধা হয়। আমাদের অঞ্চলে মেয়েরা কিন্তু আরো কম বয়সে আক্রান্ত হয়।
যখনই কারো ক্যানসার নির্ণয় হয়, আমরা পর্যায় ভাগ করি। প্রাথমিক অবস্থায় আমরা যদি ধরতে পারি, তাহলে আমরা বলি ব্রেস্ট কনজারভেটিভ সার্জারি বা ব্রেস্ট কনজারভেটিভ থেরাপি করতে। শুধু ক্যানসার আক্রান্ত জায়গাটির আশপাশের কিছু অংশ আমরা ফেলে দেই। সম্পূর্ণ স্তন আমরা কেটে ফেলি না। সেই সঙ্গে বগোলের কিছু গুঁটি আমরা বের করে নিই। এটাতে স্তন থেকে যাচ্ছে রোগীর। কিন্তু আমরা তাকে ক্যানসার থেকে মুক্ত করে দিচ্ছি।
আরেকটি সুবিধা যেটা হয়, এখানে পোস্ট অপারেটিভ জটিলতাগুলো হয় না। আর যেহেতু স্তন থেকে যায়, রোগীর জন্য খুব মানসিক শান্তির একটি বিষয় থাকে।
যেহেতু এখানে স্তন রেখে আমরা অপারেশন করছি, তাই আবার হওয়ার আশঙ্কা কতটুকু থাকছে, সেটি নিয়ে ভাবে। এক থেকে দুই ভাগ আশঙ্কা থাকে পুনরায় ক্যানসার হওয়ার। তবে সেটি কম। যদি ঠিকমতো রোগী সার্জারির পর রেডিওথেরাপি নেয়, যদি প্রয়োজন হলে ঠিকমতো ক্যামোথেরাপি নেয়, সেক্ষেত্রে আমরা অনকোলজিস্টের কাছে পাঠিয়ে দেই। তারা পরিকল্পনা করে দেয়।