চল্লিশোর্ধ নারীদের ত্বকে কী কী সমস্যা হয়?

৪০ একটি গুরুত্বপূর্ণ বয়স। এ সময় হরমোনের বিভিন্ন পরিবর্তন হয়।
আর বয়স বাড়তে থাকলে ত্বকে হতে থাকে নানা সমস্যা। বলিরেখা পড়া, ত্বকের মলিনভাব, সিস্টিক অ্যাকনে ইত্যাদি হয়। চল্লিশের পরে নারীদের ত্বকে কী কী সমস্যা হয়?
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৪৪৯তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. রেবেকা সুলতানা। বর্তমানে তিনি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের চর্ম ও যৌন বিভাগের প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের বিশেষ বিশেষ কিছু সমস্যা বাড়ে-কমে। চল্লিশোর্ধ নারীদের ত্বকের বেলায় প্রচলিত সমস্যাগুলো কী?
উত্তর : আগে যেমন মনে করা হতো কুড়িতে বুড়ি। এখন তো আর সেটি মনে করা হয় না। চল্লিশোর্ধ যারা তারা কিন্তু বয়ঃসন্ধিদের কাছাকাছিই থাকে। যারা নিজেকে ব্যবস্থাপনা করে তারা থাকে।
আবার গ্রামেগঞ্জে এখনো অনেকে বাল্যবিবাহের মধ্য দিয়ে যান। অনেক সময় ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সে একেবারেই বয়স্ক মনে হয় তাঁদের।
অনেকে এসে বলেন, এত দিন তো খেয়াল করিনি। এখন তো ত্বকের একটু যত্ন নেওয়া জরুরি। আপা কী করি?
আসলে ৩৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে সাধারণত মেছতাটা বেশি হয়। বা বিভিন্ন জায়গায় ছোপ ছোপ দাগ হয়। ব্রণ কিন্তু এ বয়সে কিছুটা কমে যায়। তবে এই বয়সে একটি বিশেষ ব্রণ হয়। সেটি ভয়াবহ ফোঁড়া ধরনের। এগুলো হলো, সিস্টিক অ্যাকনে, নডিউলসিস। এগুলো আবার এ বয়সে বেশি হয়।
এই বয়সে বেশি হয় আরেকটি ত্বকের রোগ। আর এটি হলো, কনটাক্ট ডার্মাটাইটিস। বা রেলস মেলানোসিস নামে একটি রোগ রয়েছে সেটিও হয়। বিভিন্ন প্রসাধনী ব্যবহার করার পর এর প্রভাবটা পড়ে। প্রসাধনী ব্যবহার করার পড়ে সমস্যাটা শুরু হয়। যেমন : ব্রাইটেনিং ক্রিম বা ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম। ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম ব্যবহার করে শুরুতে খুব ফর্সা হয়, তখন তো আমাদের কাছে আসে না। যখন প্রভাবটা চলে যায়, তখন ছোপ ছোপ দাগ নিয়ে আসে। এটি খুবই খারাপ একটি সমস্যা। এটি মোকাবিল করতে আমরা হিমশিম খাই। আমরা যত হিমশিম খাই, ওরা তত বেশি অস্থির হয়ে যায়। বলে, তাড়াতাড়ি কমিয়ে দিতে হবে। কারণ, ওই বয়সটা ওরা ধরে রাখতে চায়। যখন চল্লিশের কাছাকাছি হয়, তখন তাদের মনে হয়, এখন তো বয়স ধরে রাখতে হবে। কিন্তু তখন কিন্তু ত্বকে কিছু ক্ষতি হয়ে যায়। বিভিন্ন উল্টোপাল্টা প্রসাধনী ব্যবহার করার জন্য এমনটা হয়।
এই জন্য আমরা এই বয়সে বাড়তি যত্ন নিতে বলি। এ সময় কিন্তু হরমোনের পরিবর্তন হয়। পাশাপাশি মানসিক চাপ বাড়ে। যেই মেয়েটা ২০ বছরে ছিল, সে বাবার সংসারে ছিল, তার নিজের কোনো চিন্তাই ছিল না। সে যখন পারিবারিক জীবন শুরু করে, বাচ্চা-কাচ্চা হয়, স্বামী ও পরিবার নিয়ে প্রচণ্ড মানসিক চাপের মধ্যে থাকে। তখন কিন্তু এই চাপটা তার ত্বকের মধ্যে ফুটে ওঠে। যেমন ত্বক একদম মলিন হয়ে যায়, বলিরেখা পড়তে থাকে। বিভিন্ন রকম দাগ হয়। চুল পড়ে যেতে থাকে। এটি তখন মেনে নেওয়া খুব কঠিন হয়ে যায়।