হাড় ক্ষয় রোগ কী, চিকিৎসায় করণীয়

অনেকেই হাড় ক্ষয় রোগের সমস্যায় ভোগেন। রোগটি কী এবং এর চিকিৎসায় করণীয় বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩১৪৫তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. ফয়সাল আহমেদ। বর্তমানে তিনি বিআরবি হাসপাতালের রিউমাটোলজি বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : হাড়ের ক্ষয়রোগ বলতে কী বুঝি?
উত্তর : হাড় আমাদের দুই ধরনের। তরুণাস্থি ও অস্থি। মানে একটি নরম হাড়, আরেকটি শক্ত হাড়। হাড়ের ক্ষয়রোগ বলতে আমরা দুটোকেই বুঝি। শক্ত হাড়ের ক্ষয়রোগ হলো অস্টিওপরোসিস, আর তরুণাস্থির ক্ষয় রোগ হলো অস্টিওআরথ্রাইটিস। অস্টিওআর থ্রাইটিস যে ক্ষয়রোগটি সেটি কিছু লক্ষণ নিয়ে আসে, সেটা আমাদের হাঁটুতে ধরতে পারে, আমাদের কোমরে ধরতে পারে, আমাদের পৃষ্ঠদেশেও ধরতে পারে। সেই ক্ষেত্রে আমাদের হাঁটুতে ব্যথা হতে পারে। হিপ জয়েন্ট ও কোমরে ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথাগুলো কাজের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। কাজ করলে ব্যথা বাড়বে আবার কাজ শেষে বিশ্রামে ব্যথা কমে যাবে। এই ধরনের লক্ষণ নিয়ে সাধারণত তরুণাস্থির ক্ষয় বাত আসে।
আর অস্টিওপরোসোসিস বা অস্থি ক্ষয়রোগ যেটি, এর প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো লক্ষণ হবে না, যখন অস্টিওপরোসিস অনেক বেশি হয়ে যাবে, হঠাৎ একটি ফ্রাকচার হতে পারে বা হাড় ভেঙ্গে যেতে পারে। তখনই আমরা লক্ষণটা বুঝতে পারব যে ব্যথা। অস্টিওপোরোসিস রোগটা আগে থেকে বোঝা যায় না, পরীক্ষা না করলে।
প্রশ্ন : এ ধরনের রোগের চিকিৎসায় করণীয় কী?
উত্তর : তরুণাস্থি ক্ষয়রোগ যেটি রয়েছে, এটিতে রোগী লক্ষণ নিয়ে আসলে আমরা প্রথমে কিছু পরীক্ষা করি। আর আমরা এক্স-রে করতে পারি। সঙ্গে অন্যান্য কিছু পরীক্ষা করি। তবে রোগটি যখন নির্ণয় করা হয়, রোগীকে আমরা দুই ধরনের চিকিৎসা দেই। একটি হলো রোগীর জীবনযাত্রার ধরন পরিবর্তন, আরেকটি হলো ফিজিওথেরাপি ও ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা।
জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আমরা যেটা বলি, রোগী ভারী কাজ করবে না, রোগী হাঁটু ভেঙ্গে কাজ করবে না, প্রয়োজন হলে রোগীর জুতার পরিবর্তন করতে হবে। আর কিছু হাঁটুর ব্যায়াম আমরা শিখিয়ে দেই। হাঁটুর চারপাশে যে মাংস সেগুলোকে সবল করার ব্যায়াম। একই সাথে রোগীর ব্যথা থাকলে আমরা ব্যথার ওষুধ দেই। প্রয়োজন হলে আমরা স্টেরয়েড দিতে পারি। যখনই বাত রোগটা খুব জটিল হয়ে যায়, যেমন একজন রোগী ১০ মিনিটের বেশি হাঁটতে পারছে না, এক্স-রে তে খুব শেষ পর্যায় দেখা যাচ্ছে, ক্ষয়টা অনেক বেশি হয়ে গেছে, তখন সে ক্ষেত্রে সার্জারির একটি পদ্ধতি রয়েছে, নি রিপ্লেসমেন্ট করতে হয়। সেটা তখন সার্জনের কাছে চলে যায়। এটা তখন আর রিউমাটোলজির কাছে থাকছে না।