লাইফ সাপোর্ট কী, কেন দেওয়া হয়?

অনেক সময় রোগীকে বাঁচানোর জন্য লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৬৫৫তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. সিনহা আবুল মনসুর। বর্তমানে তিনি নাসাউ ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের ফ্যাকাল্টি অ্যানেসথেসিয়ার ফ্যাকাল্টি হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : লাইফ সাপোর্ট মানে কী? সেখানে কী সাপোর্ট দেন আপনারা? কত দিন পর্যন্ত লাইফ সাপোর্টে রাখা যায়?
উত্তর : একজন রোগী যখন শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে পারছে না নিজে থেকে, সেটা যেকোনো কারণে হতে পারে। এটি মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণের কারণে হতে পারে, মস্তিষ্কের টিউমারের কারণে হতে পারে, ফুসফুসের কারণে হতে পারে বা শরীরে মারাত্মক ব্যাধি সংক্রমণের জন্য হতে পারে। বিভিন্ন কারণে হতে পারে। কিন্তু মূল বিষয় হলো, রোগী নিজে থেকে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে পারছে না। যে রোগী নিজে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে না পারবে, তার ক্ষেত্রে প্রথম কাজ হলো শ্বাসপ্রশ্বাস দেওয়া। যেটা হলো ভেন্টিলেশন। একেই আমরা বলি লাইফ সাপোর্ট।
এখন এই লাইফ সাপোর্টের রোগীগুলো এমনিতেই খারাপ থাকে। তাদের শরীরে একটা কিছু হয়েছে, যার জন্য তারা শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে পারছে না। আগে যদি শ্বাসপ্রশ্বাসের যত্ন নেওয়া হয়, বাকি কাজগুলো যদি পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ধরা পড়ে, সঠিক চিকিৎসা যদি থাকে, অনেক সময় দেখা যায় দেরি হয়ে যায়। অথবা কোনো ওষুধেই আর কাজ হয় না, সে ক্ষেত্রে আমরা যেটা করি, রোগী যখন আইসিউতে চলে আসে, রোগী হয়তো লাইফ সাপোর্টে ৭ থেকে ১০ দিন আছে।
আমরা দেখি, এই রোগী ব্রেইন ডেথ কি না। আমরা কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে বুঝতে পারি, এই রোগীটার ব্রেইন ডেথ। তার মস্তিষ্কের কার্যকলাপগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। মস্তিষ্ক থেকে যখন সংকেত যাবে, সে তখন শ্বাসপ্রশ্বাস নেবে। মস্তিষ্ক থেকে যখন সংকেত যাবে, সে হৃদযন্ত্রের কাজ শুরু করবে। যখন সংকেত দিতে পারছে না, তখন এগুলো ঠিকমতো কাজ করবে না। যখন আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে দেখি, ক্লিনিক্যালই ব্রেইন ডেথ, তখন আমরা রোগীর আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে আলাপে বসি। বলি যে এই রোগীর বাঁচার আশা কম। এখন আপনাদের একটি সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে আপনারা লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলবেন, না এটি রেখে দেবেন। এখানে রোগীর আত্মীয়স্বজনে অংশগ্রহণ খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাদের আলোচনায় আনতে হবে এবং তাদের মত অনুসারে করতে হবে।