স্টেম সেল চিকিৎসার খরচ কেমন?

হাঁটু ও অস্থিসন্ধির চিকিৎসায় স্টেম সেল ব্যবহার করা যায়। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৬০৩তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. এ কে এম মহিউদ্দিন। বর্তমানে তিনি শিওর সেল মেডিকেলের অর্থোপেডিক্স বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : স্টেম সেলের কোনো ঝুঁকি কি আছে?
উত্তর : স্টেম সেল রোগীর নিজস্ব শরীর থেকে আমরা এটা সংগ্রহ করি। আমাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গা ঘুমন্ত অবস্থায় থাকে। যেমন আমরা চর্বির মধ্য থেকে নিতে পারব। বোন ম্যারু থেকে নিতে পারব। আমরা মূলত প্রাপ্তবয়স্ক স্টেম সেল ব্যবহার করি। সে জন্য কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। আমরা যেটা ব্যবহার করি নিজস্ব অটোলোগাস, সে ক্ষেত্রে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
প্রশ্ন : এ ধরনের চিকিৎসার ক্ষেত্রে কয়টি সেশন প্রয়োজন হয়?
উত্তর : মূলত স্টেম সেলে চারটি সেশন লাগে। দেড় মাস পর পর আমরা চারটা সেশন করে থাকি। প্রতি দেড় মাস পর পর রোগীকে আসতে হয়।
প্রশ্ন : এ ক্ষেত্রে খরচের বিষয়টি কেমন?
উত্তর : মূলত আমরা যে স্টেম সেল ব্যবহার করি, সেটি রোগীর শরীর থেকেই সংগ্রহ করি। অজ্ঞান না করে ক্যানোলা দিয়ে পেট থেকে চর্বি নিয়ে আমরা সংরক্ষণ করে রাখি। পরে ওই সংরক্ষণ থেকে, পরের সেশনগুলোতে ব্যবহার করে থাকি। সে ক্ষেত্রে দেড় মাস পর পর ৩০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়।
প্রশ্ন : চারবার চিকিৎসা শেষ হওয়ার পর কি আরো আসতে হয়?
উত্তর : অস্টিওআর্থ্রাইটিসের রোগীর ক্ষেত্রে যেহেতু আমরা স্টেম সেল ব্যবহার করি, এটাই অস্ত্রোপচারের বিকল্প। সে ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে বেশির ভাগ রোগী পাঁচ বছর পর্যন্ত ভালো থাকে। এরপর একটি টপ আপ দিতে হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা ধীরে করতে চাই অস্ত্রোপচার।
প্রশ্ন : স্টেম সেল কি কোনো ধরনের সমস্যা করতে পারে?
উত্তর : আসলে পিআরপি বা স্টেম সেলে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। এটা নিজের শরীর থেকে নেওয়া হয়। কেবল একটু সুই ঢোকাতে যতটুকু ব্যথা বা ত্বক থেকে রক্ত পড়তে পারে। এ ছাড়া আর কোনো বিষয় নেই। প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার জন্য প্রথম দু-তিন হয়তো একটু ব্যথা হতে পারে। তবে ধীরে ধীরে তার টিস্যুটা তৈরি হলে আর ব্যথা পাবে না।
প্রশ্ন : বয়স্ক রোগীরা অনেক সময় ভাবে, এখন তো আর কিছু করার নেই। এভাবে ওষুধ খেয়েই দিন কাটিয়ে দিই। এমন একটি ভাবনা কাজ করে। এ ধরনের রোগীদের ক্ষেত্রে কী বলবেন?
উত্তর : আসলে অস্টিওআর্থ্রাইটিস বয়স্ক মানুষের বেশি হয়। আমাদের দেশে সাধারণত ৫০ বছরের পর থেকে হয়। তবে উন্নত বিশ্বে ৬৫ বা ৬০ বছর বয়সের লোকদেরই এ ধরনের সমস্যা হয়। সে ক্ষেত্রে আমাদের বেশির ভাগ রোগীই হলো বয়স্ক মানুষ। ওনাদের জন্য এটা সবচেয়ে নিরাপদ চিকিৎসা। চিকিৎসার পরে রোগ থেকে মুক্তির বিষয়টি বয়স্ক মানুষই সবচেয়ে বেশি অনুভব করে। কারণ, ওনাদের ব্যথার মাত্রা অনেক বেশি থাকে। ধীরে ধীরে যখন এটা কমে যায়, ওনারা এটা বুঝতে পারেন। এটি কোনো ধরনের সার্জারি নয়। কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।