কী কী কারণে জ্বর হয়?

জ্বর কোনো রোগ নয়, রোগের লক্ষণ। জ্বরের নানা কারণ রয়েছে। জ্বরের বিভিন্ন কারণের বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. শরদ।
বর্তমানে তিনি বিআরবি হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগের জেষ্ঠ্য পরামর্শক হিসেবে কর্মরত। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৫৯৯তম পর্বে সাক্ষাতকারটি প্রচারিত হয়।
প্রশ্ন : কোন তাপমাত্রাকে জ্বর বলা যাবে?
উত্তর : ৯৮ দশমিক ছয় ডিগ্রির বেশি যখন হবে, তখন একে জ্বর বলা হবে।
প্রশ্ন : সাধারণত কী কারণে জ্বর বা জ্বর জ্বর ভাব হতে পারে?
উত্তর : এটা ভাইরাস জাতীয় কারণে বেশি হয়। ঋতু পরিবর্তনের কারণে হলে জ্বর থাকে, শরীর কামরায়, ব্যথা হয়, সর্দি থাকে। তিন দিনের বেশি থাকলে শরীরের ভেতর লাল লাল দানা হয়, চুলকানি হয়। এটা তো ডেঙ্গু। ডেঙ্গু রয়েছে কি না, দেখতে হবে। এটি জীবনঘাতি রোগ। রোগী হয়তো মরে যাবে না, তবে প্লাটিলেট কমে যাবে।
এর সঙ্গে জ্বর আসে, শীত লাগে। ম্যালেরিয়া হতে পারে। টাইফয়েড হতে পারে। ইউরিন ট্র্যাক্ট ইনফেকশনের কারণে সমস্যা হতে পারে। দাঁতে ব্যথা বা সাইনোসাইটিসের কারণেও জ্বর আসতে পারে, কানে সংক্রমণের কারণে জ্বর হতে পারে।
অনেক সময় দেখা যায়, রোগীর জ্বর থাকেই। রোগী বলে আমার বার বার জ্বর আসে। তিন সপ্তাহের বেশি জ্বর থাকলে একে টাইফয়েড ধারণা করা হয়। রোগী বলে, ছয় মাস ধরে আমার হালকা হালকা জ্বর থাকে, রোগী বলছে আমিতো সক্রিয় আছি। এটা হয়তো হেপাটাইটিস বি। এটা মারাত্মক।
আবার ধরুন, ৪০ বছরের নারী তার সকালে ঘুম থেকে উঠলে গাঁটে গাঁটে ব্যথা হয়, জ্বর থাকে। এটি হয়তো রিউমেটো আরথ্রাইটিস।তরুণ বয়সেও হতে পারে। এমনকি ক্যানসারেও হালকা জ্বর আসতে পারে। অটো ইমিউন রোগেও সমস্যা হয়। ভারত, বাংলাদেশে যক্ষ্মার কারণে জ্বর বেশি হয়।
প্রশ্ন : তখন কী পরীক্ষা আপনারা দেন?
উত্তর : জ্বর ১৪ দিন, ২১ দিনে না গেলে, সিটি স্ক্যান, এক্সরে তে ধরা না পড়লে ধারণা করতে হবে এটি যক্ষ্মা হয়েছে। কয়েকটি ল্যাব টেস্ট করতে হবে। কী কারণে হয়েছে, সেটি আগে নির্ণয় করতে হবে। জ্বরকে হালকা করে দেখার কোনো উপায় নেই। যখনই শরীরে কোনো সমস্যা থাকে, তখনই সেটি জ্বর হিসেবে বেড়ে যায়।
প্রশ্ন : সাধারণ জ্বর তীব্রভাবে হলে করণীয় কী?
উত্তর : এ ক্ষেত্রে আমি বলে দিই, নিজে নিজে কোনো অ্যান্টিবায়োটিক নেবেন না। সেটা খাবেন, কেবল চিকিৎসক প্রেসক্রিপশন দিলে। শুরুতে প্যারাসিটামল এবং তরল খাওয়ান। এরপর চিকিৎসকের কাছে যোগাযোগ করুন। নিজে নিজে অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না। চিকিৎসকের কাছে আসলে সিবিসি দেখা হয়।
প্রশ্ন : আরো কিছু কারণে তো জ্বর আসে। সেগুলো কী?
উত্তর : অনেক সময় দেখা যায় রোগী পাঁচদিন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। জ্বর সেরে গেছে। ছয় দিনের দিন হয়তো জ্বর এলো। এ ক্ষেত্রে দেখতে হবে ইনজেকশন বা আইভির জায়গাগুলো । ইউরিন ক্যাথেডার ইনফেকশন হতে পারে। নেকলাইন ইনফেকশন হতে পারে। লাল হয় একটি পাশে।
রোগী হাসপাতালে ছিল, ক্যাথেডার নিয়েছে এর কারণে সংক্রমণ হয়ে যাচ্ছে। এগুলোর ক্ষেত্রে একটু সচেতন থাকতে হবে।