করোনাকালে মানসিক চাপ কমাবেন যেভাবে
করোনাভাইরাস পরিস্থিতি পাল্টে দিয়েছে আমাদের দৈনন্দিন জীবনধারা। তাই বলে কিন্তু মানসিক চাপ থেকে রেহাই মেলেনি; বরং এই দুর্যোগকালীন মুহূর্তে অনেককেই সামলাতে হচ্ছে বাড়তি মানসিক চাপ। এ ছাড়া অল্পবয়সী বা প্রাপ্তবয়স্ক, মানসিক চাপ এখন কমবেশি সবার জীবনকেই গ্রাস করছে। পড়াশোনা, কাজ, পরিবার, কাছের মানুষের সঙ্গে সম্পর্কের রসায়ন, সমাজের প্রত্যাশা—এমন হাজারো কারণ থেকে যে কেউই মানসিক চাপে পড়তে পারেন।
অনেকে সহজেই এ পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারেন। কিন্তু অনেকেই আছেন, যাঁদের পক্ষে মানসিক চাপ সামলানো বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। সে ক্ষেত্রে এমন কতগুলো পথ বেছে নিতে হবে, যা মেনে চললে নিশ্চিতভাবে জীবন অনেক সহনীয় ও সুন্দর হয়ে উঠবে।
প্রতিদিনের জীবনযাপনে যোগ করে নিন এমন কিছু অভ্যাস, যা সহজেই আপনাকে মানসিক চাপমুক্ত হতে সাহায্য করবে। আনন্দবাজার পত্রিকার বরাত দিয়ে ইউএনবির প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
নিজেকে গুরুত্ব দিন
বাইরের কাজ, অফিস, কলেজ আর বাড়ি, এতেই দিন শেষ। নিজের জন্য নেই সামান্য অবসরটুকুও। কিন্তু মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকতে হলে নিজেকে অবহেলা করলে চলবে না। যদি নিজে ঠিক না থাকেন, তবে জীবনের সব ক্ষেত্রেই সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।
অফিস থেকে ফেরার পথে বা রাতে ঘুমানোর আগে নিজেকে খানিকটা সময় দিন। কিছুটা সময় একান্তে উপভোগ করুন। নিজের পছন্দের চা বা কফি খেতে খেতে প্রিয় বইটি পড়ুন বা গান শুনুন। এসব পছন্দ না হলে নিজের ভালো লাগার শখকে ঝালিয়ে নিন। ডায়েরি লেখার অভ্যাস থাকলে লিখুন। মাসে এক-আধবার পার্লারে গিয়ে ম্যাসাজ করান, বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে সময় কাটান। নিজেকেই নিজে কিছু উপহার কিনে দিলে অথবা পছন্দের খাবার খেলেও অনেক সময় মানসিক চাপ কমতে পারে।
প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটান
রোজ ভোরে বা সকালে হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন। তবে রাস্তায় না হেঁটে পার্কে যান। শুধু শরীরের জন্যই নয়, প্রাকৃতিক দৃশ্য আপনার মনকেও সতেজ রাখবে। গাছ, ফুল, পাখির ডাক, প্রকৃতির হাওয়া সত্যিই মন ভালো করে দেবে। রোজ সম্ভব না হলেও সপ্তাহে অন্তত তিন থেকে চার দিন রুটিন করে গেলেও ভালো লাগবে।
মন ভালো রাখবে এমন কাজ করুন
অনেকেই আছেন, যাঁরা ব্যায়াম করলে বিশেষ আনন্দ পান। কারো কারো ক্ষেত্রে আবার ভালো সিনেমা বা নাটক দেখলে সেই অনুভূতি আসে। যা-ই হোক না কেন, নিজের পছন্দগুলো খুঁজে বের করুন। এতে মন ভালো থাকে এবং মানসিক চাপ দূর হয়।
ধ্যান করুন
মানসিক চাপ কমানোর ক্ষেত্রে ধ্যান বা মেডিটেশনের কোনো বিকল্প হয় না। তাই রোজ রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে একান্তে বসে ধ্যান করুন। এই সময় হালকা কোনো মিউজিকও শুনতে পারেন। মনকে শান্ত রাখলে মানসিক চাপ অনেকটাই দূর হবে।
দুঃসময় আসে, কেটেও যায়
এই ধ্রুব সত্য মাথায় রাখতে পারলে আর কোনো সমস্যা হওয়ার কথাই নয়। নানা সময় সমস্যা আসে, আবার তা সময়ের সঙ্গে কেটে যায়। বেশি চিন্তা করলেই যে তা খুব স্বাভাবিক হয়ে যাবে, এমনও নয়। তাই অহেতুক চিন্তা না করে বরং সমস্যা থেকে বের হওয়ার উপায় খোঁজায় মন দিন।