বিশ্ব বাবা দিবস আজ
বিশ্ব বাবা দিবস আজ রোববার (১৫ জুন)। নিঃশর্ত ভালোবাসা, দায়িত্ব আর ত্যাগের প্রতীক সেই মানুষটির প্রতি সম্মান ও কৃতজ্ঞতা জানানোর দিন, যিনি পরিবারকে ছায়ার মতো আগলে রাখেন, কিন্তু থাকেন অনেকটা নীরব ব্যাকগ্রাউন্ডে।
প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার বিশ্ব বাবা দিবস হিসেবে পালিত হয়। পৃথিবীর সব বাবার প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা প্রকাশের ইচ্ছা থেকেই বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিক থেকে বাবা দিবস পালনের প্রচলন হয়।
এই দিনটির সূচনা হয় ১৯১০ সালে, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে সোনোরা স্মার্ট ডোড নামের এক নারী তার বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রথমবারের মতো ‘ফাদার্স ডে’ উদযাপন করেন। তারই পথ ধরে এটি এখন বিশ্বের বহু দেশে পালিত একটি বিশেষ দিবসে রূপ নিয়েছে।
প্রায় সব বাবারাই তাদের সন্তানের কাছে বটবৃক্ষসম। হাজারো ব্যস্ততার মধ্যেও আমাদের জীবনকে আরও উন্নত করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যান তারা। কয়েকটি শব্দে বাবাদের সংজ্ঞা দেওয়া মুশকিল। বলা চলে নিখাদ ভালবাসা এবং স্নেহের সঠিক সংজ্ঞা বাবা।
জানা যায়, ১৯০৭ সালের ডিসেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম ভার্জিনিয়ার মোনোনগাহয় কয়লাখনিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রাণ হারান ৩৬২ জন পুরুষ। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন সন্তানের বাবা। এর ফলে প্রায় এক হাজার শিশু পিতৃহারা হয়ে পড়ে। পরের বছর ৫ জুলাই পশ্চিম ভার্জিনিয়ার ফেয়ারমন্টের এক গির্জায় স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। নিহত ব্যক্তিদের সম্মান জানাতে সন্তানরা মিলে এই প্রার্থনাসভার আয়োজন করে। এটি ছিল বাবাকে সম্মান জানাতে ইতিহাসের প্রথম আয়োজন।
১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন প্রতি বছর জাতীয়ভাবে বাবা দিবস পালনের রীতি চালু করেন। এর আগে ১৯৬৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি. জনসন জুনের তৃতীয় রোববারকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাবা দিবস হিসেবে নির্ধারণ করেন। তবে ১৯১০ সালের ১৯ জুন বিশ্বে প্রথমবারের মতো পালিত হয় বাবা দিবস। ওয়াশিংটন থেকে শুরু হলেও পরবর্তী সময়ে এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে এই দিবস পালনের কথা ছড়িয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে মা দিবসের পাশাপাশি বাবা দিবসের প্রতিও সচেতন হতে থাকেন সন্তানরা। এরপর ১৯২৪ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্যালভিন কুলি বাবা দিবসের সম্মতি দেন।
অনেকে মনে করেন শুধু একদিন কেন, প্রতিদিন হয়ে উঠুক ফাদার্স ডে (বাবা দিবস)। তবে বর্তমান সময় দাঁড়িয়ে, বাবাদের জন্য প্রতিটি দিন স্পেশাল করে তোলা কর্ম ব্যস্ততার ফাঁকে অসম্ভব। তাই একটা দিন যদি তাঁরা একটু ‘স্পেশাল ফিল’ করেন, তাহলে ক্ষতি কী?