১০ টি কাজ করলে আফসোস থাকবে না

জীবনের প্রতি মুহূর্তই পরিবর্তিত হচ্ছে। আজকের দিনটা গতকালের চেয়ে আলাদা। আগামীকাল আবার আজকের থেকে আলাদা হবে। এই পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েই মানুষকে চলতে হয়।
তারপরও কিছু সিদ্ধান্ত বা কাজ থাকে যা করার জন্য বয়স থাকে। অনেকে জীবনে সাফল্য পেলেও ঠিক বয়সে ঠিক কাজটি করতে না পারার জন্য তাদের আফসোস থেকে যায়।
অনেকেই কাজকে বেশি গুরুত্ব দিতে গিয়ে নিজের পারিবারিক বা ব্যক্তিগত জীবনকে ধ্বংস করে ফেলে। আবার অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় নিজের যত্ন ঠিকমত নেওয়া হয়নি। তাই নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে জীবনটা দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। জীবনধারা বিষয়ক ভারতীয় ওয়েবসাইট মেনএক্সপি ডটকম জানিয়েছে কিছু পরামর্শ।
১. নিজের খেয়াল রাখুন
নিজেকে ভালোবাসুন, নিজের খেয়াল রাখুন। সময়মত খাওয়া দাওয়া করুন, সঠিক পরিমাণে সুষম খাবার খান। সুন্দর করে সাজুন, ফিটফাট থাকুন। নিজেকে ভালো না বাসলে কখনোই সুখী হতে পারবেন না। যত্ন না নিলে বুড়িয়ে যাবেন সহজেই। কাজের চাপে শরীরের ওপর অত্যাচার করাটা মোটেই ঠিক নয়। এখন থেকেই ফিটনেস ঠিক রাখার জন্য ব্যায়াম করা শুরু করুন। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খান, শরীরকে ফিট রাখুন।
২. সঞ্চয় করুন
সঞ্চয়ের প্রবণতা তৈরি করুন। আয় কম হলেও তার মধ্যে থেকেই সঞ্চয় করুন। বিপদ কখন, কীভাবে আসবে কেউ বলতে পারেনা। আয় যতই সীমিত হোক, নিজের আয়ের একটি অংশ দিয়ে নিয়মিত সঞ্চয় করুন। বিপদে সেটাই আপনার কাজে লাগবে।
৩. ভালোবাসার কথা জানিয়ে দিন
কাউকে কখনো ভালো লাগলে সেটা জানিয়ে দেওয়াই ভালো। ভালোবাসার কথা নিজের মধ্যে রেখে দিলে কোনোদিন গিয়ে হয়তো আফসোস হবেই। সময় মতো নিজের ভালোবাসার কথা জানালে হয়তো আপনার জীবনটা আরো সুন্দর হতে পারত।
৪. নিজের পছন্দের কাজ করুন
জীবনটাকে নিজের মতো করে উপভোগ করুন। নিজের পছন্দের কাজ করুন। হয়তো শুরুতে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পাবেন না তবে হাল ছেড়ে দেবেন না। সাফল্য আসবেই এই আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করে যান, নিজেকে আরো যোগ্য করে তোলার চেষ্টা করুন। অন্যের কথা শুনে নিজের জীবন ভুল পথে পরিচালিত করবেন না। মনে রাখবেন, যে সময় চলে যায় সেটি আর কখনো ফিরে আসে না।
৫. হুটহাট সম্পর্কে জড়াবেন না
সম্পর্ক তৈরির ক্ষেত্রে জগাখিচুড়ি পাকাবেন না। হুটহাট যার তার প্রেমে পড়া থেকে বিরত থাকুন। সম্পর্কের মূল্য বুঝতে চেষ্টা করুন। অনেক সময় অসফল বা সামঞ্জস্যহীন সম্পর্ক দীর্ঘদিন মানুষকে ভুগিয়ে থাকে। জীবনের স্বাভাবিকতায় ছন্দপতন ঘটায়। অনেকেই সম্পর্ক ভাঙার পর তা থেকে আর বেরিয়ে আসতে পারেন না। তাই সাবধানে সম্পর্কে জড়ান, প্রিয় মানুষের যত্ন নিন। ভুল মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর জন্য যেন আগামীতে আফসোস করতে না হয়।
৬. ঘুরতে বেরিয়ে পড়ুন
আজ নয় কাল। আরেকটু পয়সা জমিয়ে নেই, ছুটি নেই- এই সব অজুহাতে বারবার ঘুরতে যাওয়াটা পিছিয়ে যাচ্ছে। এর সাথে সাথে আপনিও কিন্তু পিছিয়ে যাচ্ছেন। জীবনে অর্থ উপার্জন করেও যদি জীবনটাকে উপভোগ করতে না পারেন সেটা আপনার ব্যর্থতা। কাজের চাপ থেকে ছুটি নিতে ঘুরতে বেরিয়ে পড়ুন। যত ঘুরবেন, ততই অভিজ্ঞতা বাড়বে। জীবনটা মোটেই এক জায়গায় বসে কাটিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়। সময় ও শক্তি থাকতে ঘুরতে বেরিয়ে পড়ুন।
৭. পরিবারকে সময় দিন
পরিবারের সদস্যদের সুখের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন অথচ তাদেরকেই ঠিকমতো সময় দিচ্ছেন না। এই ভুল করবেন না। পরিবারে শুধু অর্থ নয় প্রচুর সময়ও দিতে হয়। পারিবারিক অশান্তি ও বিশৃঙ্খলার অন্যতম কারণ এই বিচ্ছিন্নতা। পরিবারের সদস্যদের সময় দিন। ছুটির দিনে বাইরে কোনো কাজ রাখবেন না। বাড়িতে থাকুন, সবার সঙ্গে আড্ডা দিন। দূরে থাকা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ফোনে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন।
৮. মাত্রাতিরিক্ত কাজ করবেন না
‘কাজপাগল’ মানুষ বলে নিজেকে জাহির করে অনেকেই তৃপ্তিবোধ করেন। কাজ করুন, তবে কখনোই অতিরিক্ত চাপ নেবেন না। কাজের বাইরেও আরেকটি জগত আছে। সিনেমা দেখুন, গান শুনুন, বই পড়ুন। কাজ থেকে কয়েকদিনের বিরতি নিন।
৯. বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রাখুন
সবাই ব্যস্ত। তারপরও চেষ্টা করুন যোগাযোগ রাখতে। সপ্তাহে না হোক দুই-তিন মাসে একবার সবাই মিলে আড্ডা দেওয়ার চেষ্টা করুন। সহজে ভালো বন্ধু মেলে না। তাই বন্ধুদের হেলায় হারাবেন না। দূরত্ব যেকোনো সম্পর্কের জন্যই ক্ষতিকারক।
১০. অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা নয়
কখনোই কোনো কিছু নিয়ে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করবেন না। জীবনে বিপদ যেমন আসে তেমনি আবার তা কেটেও যায়। বিপদে ধৈর্য ধরুন। দুশ্চিন্তা করে কখনোই কোনো ভালো ফল হয় না, উল্টো শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি হয়।