মশা কাদের বেশি কামড়ায়?
মশার প্রকোপ যে হারে বেড়েছে, তাতে এ নিয়ে উদ্বিগ্ন অনেকেই। প্রাণঘাতী জীবাণুবাহী মশার কামড়ে রোগাক্রান্ত হয়ে অনেক মানুষ মারা গেছেন, কেউ বা ভুগছেন ভয়াবহ অসুস্থতায়। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার মতো ভয়াবহ রোগ ছড়ানো মশার ভয়ে তটস্থ থাকতে হচ্ছে সবাইকে। মশা প্রতিরোধের এলাহি আয়োজনের পরও থেমে নেই কামড়ের মহোৎসব। সব মানুষকে কামড়ালেও কাউকে কাউকে নাকি একটু বেশি কামড়ায় মশা—এমন অভিযোগ অনেকের। চলুন এই অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক :
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজের প্রতিবেদনে জানা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক সম্প্রতি মশা নিয়ে একটি গবেষণা পরিচালনা করেন। এতে দেখা যায়, কিছু মানুষের শরীরে মশার প্রিয় রাসায়নিকের পরিমাণ বেশি মাত্রায় থাকে। সে গন্ধেই মশার দল সেসব মানুষের প্রতি অন্যদের তুলনায় অধিক আকৃষ্ট হয়।
গবেষণা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের ইউসি ডেভিস ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক লার্ক কফি জানান, মশারা মূলত মানুষের শরীরের গন্ধ ও নিশ্বাসের মাধ্যমে নির্গত হওয়া কার্বন ডাইঅক্সাইডের মাধ্যমে আকৃষ্ট হয়। প্রত্যেক মানুষের শরীরের গন্ধ স্বতন্ত্র। ত্বক থেকে নিঃসৃত ল্যাকটিক এসিডের গন্ধ মশাদের বেশি আকৃষ্ট করে।
এই অধ্যাপকের মতে, যাদের শরীর বেশি ঘামে, তাদের বেশি কামড়ায় মশা। এ ছাড়া অন্যদের চেয়ে যেসব ব্যক্তির শরীর থেকে বেশি ল্যাকটিক এসিড নির্গত হয়, তাদের প্রতি মশারা বেশি আকৃষ্ট হয় ও বেশি কামড়ায়।
এ ছাড়া দীর্ঘ পরীক্ষা-নিরীক্ষায় রক্তের গ্রুপের প্রভাবের কথাও উঠে এসেছে। গবেষকরা জানান, ও পজিটিভ রক্তধারীদের বেশি কামড়ায় মশা। এ ছাড়া অধিক মেদযুক্ত ব্যক্তিও থাকেন মশাদের প্রিয় মানুষের তালিকায়। যাঁরা নিয়মিত মদপান করেন, তাঁদের জন্যও দুঃসংবাদ উঠে এসেছে গবেষণায়। গবেষকদের মতে, নিয়মিত মদপান করা ব্যক্তিরা মশার আক্রমণের শিকার হন বেশি। বাদ যাচ্ছেন না গর্ভবতী নারীও। অন্যদের তুলনায় তাঁদের বেশি কামড়িয়ে থাকে মশা।
প্রিয় পাঠক, প্রাণঘাতী জীবাণুবাহী মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। ঘুমের সময় মশারি ব্যবহার করুন। এ ছাড়া মশাবাহিত রোগের উপসর্গ দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।