অনিন্দিতা কাজীর নজরুলসন্ধ্যা
গত ১৪ জুন বিকেল ৬টা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তন দু-চারটি চেয়ার বাদে পূর্ণ মিলনায়তনের গ্যালারি। মঞ্চে কেউ নেই, তবুও সকলে অপেক্ষা করছিলেন অসীম ধৈর্য নিয়ে। ঠিক কয়েক মিনিট পরে মিলনায়তনে প্রবেশ করলেন অনিন্দিতা কাজী। এবার নীরবতা ভেঙে কিছুটা চাপা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করল দর্শক। সঞ্চালকের মুখে উচ্চারিত হলো—
এসো আনন্দিতা... ত্রিলোক বন্দিতা...
কাজী নজরুল ইসলামের এ দুটি লাইন দিয়েই স্বাগত জানিয়ে এবং নজরুল গবেষণা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ফুল দিয়ে বরণ করা হলো নজরুল-প্রমীলার পৌত্রী এবং সাংস্কৃতিকজন অনিন্দিতা কাজীকে। এর পর অনুষ্ঠানের সভাপতি উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন অতিথির হাতে।
নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে অনিন্দিতা কাজী বলেন, ‘আমি যতবার ঢাকায় এসেছি, এত সম্মান আর ভালোবাসা পেয়েছি, তা সত্যি আমার জন্য খুব বড় পাওয়া। যখনই আমি আসি, অপরিসীম ভালোবাসা নিয়ে ফিরে যাই। যতবার বাংলাদেশে এসেছি, আমি মুগ্ধ হয়েছি দাদুকে (কাজী নজরুল) নিয়ে যে কাজ হচ্ছে তা দেখে।’ তিনি আরো বলেন, ‘ওই বাংলায় আমি কিছু কাজ করার চেষ্ট করছি।’
অনুষ্ঠানের সভাপতি উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, নজরুলের চিন্তা-চেতনা, আদর্শ সমাজে প্রতিষ্ঠার জন্যই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নজরুল গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তিনি অনিন্দিতা কাজীকে বলেন, ‘আপনি যেকোনো সময় আসুন, নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের সঙ্গে কাজ করুন, তাতে আরো বেশি ভালো হবে।’
সভাপতির বক্তব্য শেষ গান পরিবেশন করেন অনিন্দিতা কাজী।
‘শ্রাবণও মেঘে নাচে নটবর’—নজরুলের সেই বিখ্যাত গান দিয়ে শুরু করে ‘এই সুন্দর ফল এই সুন্দর ফুল’, ‘আমি যার নূপুরেরও ছন্দ বেনুকার সুর’, ‘এই রাঙা মাটির পথে লো মাদল বাজে বাজে বাঁশের বাঁশি’, ‘ব্রজগোপি খেলে হরি হরিরে’, ‘পথো চলিতে যদি চোখিতে কভু দেখা হয় পরাণ প্রিয়’সহ বেশ কিছু মনোমুগ্ধকর গানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় অনিন্দিতা কাজীর নজরুলসন্ধ্যা ও সম্মাননা অনুষ্ঠান।