একদিনে ৪ লাখ ফ্যান বিক্রি করল ওয়ালটন প্লাজা
এবার একদিনে চার লাখ ফ্যান বিক্রি করল ওয়ালটন প্লাজা সেলস নেটওয়ার্ক। এর আগে গত ২৮ অক্টোবর একদিনে ওয়ালটন ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্কের আওতায় পৌনে তিন লাখ এবং মার্সেল ব্র্যান্ডের আওতায় ৮৫ হাজার ৫০০ ইউনিট ফ্যান বিক্রি হয়। সব মিলিয়ে দুদিনে সাড়ে সাত লাখের বেশি ফ্যান বিক্রি করল ওয়ালটন গ্রুপ। এসব ফ্যানের মধ্যে রয়েছে সিলিং, টেবিল, দেয়াল, রিচার্জেবল, প্যাডেস্টাল ও অ্যাগজস্ট ফ্যান।
স্থানীয় বাজারে অন্যান্য ব্র্যান্ডের তুলনায় ওয়ালটন ও মার্সেল ফ্যানে বাতাস বেশি, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী, টেকসই এবং দামও সাধ্যের মধ্যে থাকায় এ সাফল্য এসেছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। দেশের চাহিদা মিটিয়ে ওয়ালটন ফ্যান রপ্তানিও হচ্ছে বলে জানান তাঁরা।
এর আগে শনিবার রাজধানীতে ওয়ালটন গ্রুপের করপোরেট অফিসে বিশালাকার কেক কেটে একদিনে চার লাখ ফ্যান বিক্রির সাফল্য উদযাপন করা হয়। ওই সময় প্লাজা সেলস নেটওয়ার্ককে অভিনন্দন জানান ওয়ালটন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম শামছুল আলম, পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম, এস এম রেজাউল আলম, এস এম মঞ্জুরুল আলম অভি ও মাহাবুব আলম মৃদুল।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন গ্রুপের বিপণন বিভাগের প্রধান সমন্বয়ক ইভা রিজওয়ানা, প্লাজা সেলস নেটওয়ার্কের প্রধান মো. রায়হান, ডিস্ট্রিবিউটর সেলস নেটওয়ার্কের প্রধান এমদাদুল হক সরকার, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টরস এস এম জাহিদ হাসান, হুমায়ূন কবীর, উদয় হাকিমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, স্থানীয় বাজারে ব্যাপক গ্রাহকপ্রিয়তা অর্জন করেছে ওয়ালটন ব্র্যান্ডের ফ্যান। বিশেষ করে গরমের মৌসুমে ওয়ালটন ফ্যানের চাহিদা ও বিক্রি বেড়ে যায় কয়েক গুণ। এ বছর সারা দেশে ছয় লাখেরও বেশি ফ্যান বিক্রি হয়েছে ওয়ালটন গ্রুপের, যা কিনা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৯০ শতাংশ বেশি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী বছর ১৫ লাখ ফ্যান বিক্রির টার্গেট নিয়েছে ওয়ালটন।
এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ ও গরমের মৌসুমে ফ্যানের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে গত অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে ওয়ালটন ফ্যানের ‘প্রি-সেলস বুকিং’ শুরু হয়েছে। শুরুতেই ওয়ালটন প্লাজা সেলস নেটওয়ার্ক থেকে চার লাখ, ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্কের আওতায় দুই লাখ ৭৩ হাজার ২৬৩ ইউনিট এবং মার্সেল ব্র্যান্ড থেকে ৮৫ হাজার ৫০০ ইউনিট ফ্যান বিক্রি হলো। বিক্রির এই বর্তমান প্রবণতায় আগামী বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি পরিমাণ ফ্যান বিক্রি হবে বলে কর্তৃপক্ষ আশাবাদী।
ফ্যান সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং বিভাগের প্রধান সৈয়দ কোহিনূর রহমান জানান, ওয়ালটন প্লাজা, ডিস্ট্রিবিউটর, করপোরেট, ইন্টারন্যাশনাল, অনলাইনভিত্তিক ই-প্লাজা ও মার্সেল—এই ছয়টি শাখা নিয়ে ওয়ালটনের সেলস নেটওয়ার্ক। এর মধ্যে শুধু ওয়ালটন ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্ক ও মার্সেলের ডিলারদের কাছ থেকে একদিনে মিলেছিল সাড়ে তিন লক্ষাধিক ফ্যান বিক্রির অর্ডার। এদিকে ওয়ালটন প্লাজার আওতাধীন ডিলারদের কাছ থেকে একদিনে মিলেছে আরো চার লাখ ফ্যান বিক্রির আদেশ। সব মিলিয়ে আগামী গরমের মৌসুমকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে সাড়ে সাত লক্ষাধিক ফ্যান বিক্রির অর্ডার পাওয়া গেল, যা স্থানীয় বাজারে ওয়ালটন ফ্যানের এক নতুন মাইলফলক বলে মনে করেন তিনি।
ওয়ালটন ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্সের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার সোহেল রানা জানান, জার্মানি, জাপান ও তাইওয়ানের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও মেশিনারিজের সমন্বয়ে ইন্টারন্যাশনাল ইলেকট্রোটেকনিক্যাল কমিশন (আইইসি)-এর স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী ফ্যান তৈরি করছে ওয়ালটন। ফলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত ওয়ালটন ফ্যান রপ্তানি হচ্ছে।
ফ্যানে ব্যবহৃত মোটরের সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে ওয়ালটন ও মার্সেল ফ্যানেই প্রথম ব্যবহার করা হচ্ছে ইনলাইন কপার ভারনিশিং প্রসেস। সিলিং ফ্যানের সম্পূর্ণ বডি ও পাখা তৈরি হচ্ছে অ্যালুমিনিয়ামে। এর ফলে বাতাসের ধাক্কায় ফ্যানের পাখার অ্যাঙ্গেল পরিবর্তন হয় না, বাতাসও বেশি দেয়। মরিচা না পড়ায় টেকেও অনেক বছর। ফ্যানের আর্মেচার বা কয়েলে প্রায় শতভাগ (৯৯.৯৯%) বিশুদ্ধ অ্যানামেল কপার এবং এইচ ক্লাস ইন্সুলেশন কেবল ব্যবহার করায় উচ্চ ভোল্টেজ ও তাপমাত্রায় মোটর সহজে পুড়ে যায় না। আবার ফ্যানের আর্মেচার বডি ৯৯.৯৯ শতাংশ বিশুদ্ধ সিলিকন শিটে তৈরি করায় ওয়ালটন ও মার্সেল ফ্যানে তাপমাত্রা যেমন কম, তেমনি বিদ্যুৎ খরচও কম হয়। ইউরোপীয় স্ট্যান্ডার্ড বলবিয়ারিং ও উন্নতমানের ক্যাপাসিটর ব্যবহার করায় এসব ফ্যানের উচ্চগতি বজায় থাকে।
সিলিং ফ্যানে অ্যারোডায়নামিক ডিজাইনের প্রশস্ত ও লিফট অ্যাঙ্গেলযুক্ত পাখা ব্যবহারের ফলে অন্যান্য ব্র্যান্ডের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেশি বাতাস দেয় ওয়ালটন ও মার্সেল ফ্যান। বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয় ৩৫ থেকে ৪৮ শতাংশ পর্যন্ত।
সিলিং ফ্যানের বডির জন্য রয়েছে ১০ বছরের রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টি। আইএসও সনদপ্রাপ্ত সার্ভিস ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে দেশব্যাপী বিস্তৃত ৭০টিরও বেশি সার্ভিস সেন্টার এবং ৩০০টির অধিক কাস্টমার কেয়ার থেকে গ্রাহকদের দ্রুত বিক্রয়োত্তর সেবা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। রয়েছে কাস্টমার কেয়ার কল সেন্টার। গ্রাহকরা ১৬২৬৭ নম্বরে কল করে পাবেন বিক্রয়োত্তর সেবা।