রিজার্ভ চুরি : ফিলিপিনো ব্যাংকের সহায়তা চায় নিউইয়র্ক
চুরি হওয়া আট কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার উদ্ধারে ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহায়তা চেয়েছে নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ। শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গত ২৩ জুন নিউইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভের উপদেষ্টা (জেনারেল কাউন্সেল) টমাস ব্যাক্সটার ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উপদেষ্টা এলমোরো ও. কাপুলের কাছে লেখা এক চিঠিতে এ সহায়তা চেয়েছেন। এতে ব্যাক্সটার চুরি হওয়া অর্থ উদ্ধার ও ফেরত দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে সহায়তার জন্য ফিলিপাইনের ব্যাংকের প্রতি যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন।
চিঠিতে নিউইয়র্কে ফেডারেল রিজার্ভের ব্যাক্সটার আরো লেখেন, অর্থ উত্তোলনের নির্দেশনার পর চারবার অর্থ লেনদেন হয়, যা ম্যানিলাভিত্তিক রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশেনের (আরসিবিসি) কয়েকটি অ্যাকাউন্টে ঢোকে। বাণিজ্যিক কারণ দেখিয়ে নিরাপত্তাব্যবস্থা ভেদ করে কয়েকজন ব্যক্তি এসব অর্থ চুরি করেন।
নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভের প্রতিবেদনের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকও জানিয়েছে, যেটি তৈরি করেছে মার্কিন সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ফায়ারআই।
শুক্রবার বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র শুভংকর সাহা রয়টার্সকে জানান, ফেডারেল রিজার্ভ ও ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থ উদ্ধারে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সহায়তা করছে। তবে এর বেশি কিছু তিনি জানাননি।
ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় জানিয়েছে, চলমান তদন্তের মধ্যে তারা এ বিষয়ে মন্তব্য করবে না।
আরসিবিসিতে অর্থ যাওয়ার পর বেশির ভাগ অর্থ ফিলিপাইনের ক্যাসিনোতে চলে যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কম্পিউটার ব্যবস্থা হ্যাক করে অর্থ চুরির পর প্রায় ছয় মাস পেরিয়ে গেছে।
এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক, নিউইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ ও অর্থ লেনদেনের নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠান সুইফটের মধ্যে বিরোধ দেখা যায়। তবে এখন অন্তত নিউইয়র্ক ও ঢাকার মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র জানিয়েছে, অর্থ উদ্ধার প্রক্রিয়ায় গতি বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা আগামী সপ্তাহে ম্যানিলায় যাচ্ছেন।
সূত্র জানিয়েছে, ব্যাক্সটারের চিঠি থেকে বোঝা যাচ্ছে নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ অর্থ উদ্ধারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কাজ করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির গত মঙ্গলবার বলেছেন, আট কোটি ১০ লাখ ডলার কীভাবে চুরি হয়েছে তার তদন্ত তাঁরা প্রায় শেষ করে ফেলেছেন। চুরি হওয়া অর্থ দ্রুত উদ্ধার হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এ জন্য তিনি আরসিবিসিকে দায়ী করতে ফিলিপাইনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আরসিবিসি এ জন্য শাখা ব্যবস্থাপক মাইয়া সান্তোস-দেগুইতোকে দায়ী করেছেন, যার শাখায় অর্থ লেনদেন হয়েছে।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে জালিয়াতি করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরি করে দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে আট কোটি ১০ লাখ ডলার যায় ফিলিপাইনে ও দুই কোটি যায় শ্রীলঙ্কায়। শ্রীলঙ্কা থেকে অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক। রিজার্ভ চুরির ঘটনার জের ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর পদ থেকে সরে দাঁড়ান ড. আতিউর রহমান।