দেশজুড়ে নৌশ্রমিকদের ধর্মঘট, ভোগান্তিতে ব্যবসায়ীরা
বেতন-ভাতা বাড়ানো, নৌপথে চুরি-ডাকাতি বন্ধ ও নদী খননসহ ১৫ দফা দাবিতে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে আজ সোমবার পঞ্চম দিনের মতো দেশের বন্দরগুলোতে ধর্মঘট চলছে। এতে এই কয়দিন চট্টগ্রাম, মংলা ও আশুগঞ্জসহ অন্যান্য বন্দরে ভেড়া নৌযানে পণ্য খালাস-বোঝাই বন্ধ আছে। এতে দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে দেশের আমদানি-রপ্তানিকারকদের।
চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক পরিবহন গোলাম সারওয়ার জানান, লাইটারেজ জাহাজ শ্রমিকরা পঞ্চম দিনের মতো ধর্মঘটে থাকার ফলে বন্দরের বহির্নোঙ্গরে মাদার ভেসেল থেকে পণ্য খালাস বন্ধ আছে। এতে আজ পর্যন্ত আটকেপড়া পণ্য বোঝাই জাহাজের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৩টিতে।
লাইটারেজ জাহাজ শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক শাহাদাত হোসেন জানান, মজুরি বাড়ানোসহ অন্যান্য দাবি-দাওয়া পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবে না। তবে আজ (সোমবার) রাতে সংকট নিরসনে প্রশাসনের সঙ্গে শ্রমিক নেতাদের বৈঠক হওয়ার আশা করা হচ্ছে।
নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে অবস্থানরত সব দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য বোঝাই-খালাস ও পরিবহন বন্ধ আছে। আটকেপড়া জাহাজে ভোগ্যপণ্য, তেল ও সিমেন্ট তৈরির কাচাঁমালসহ অন্যান্য পণ্য আছে। কাঁচামাল সংকটে এরই মধ্যে দেশের কয়েকটি কারখানার সিমেন্ট উৎপাদন বন্ধ করা হয়েছে।
নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে মংলা বন্দরের হাড়বাড়িয়ায় অবস্থানরত কয়লা, সার ও ক্লিংকারবাহী জাহাজের পণ্য খালাসের কাজ বন্ধ আছে। ক্লিংকার খালাস করতে না পারার প্রভাব পড়ছে মংলার শিল্প এলাকার সুনসিং, মেঘনা ও সেভেন রিং সিমেন্ট ফ্যাক্টরিগুলোতে। এই ধর্মঘট অব্যাহত থাকলে উৎপাদন ব্যাহত ও সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কারখানা মালিকরা।
বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার অ্যাসোসিয়েশনের মংলা শাখার সভাপতি আবুল কাশেম মাস্টার বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আজ বিকেল ৪টায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হবে।
খুলনা বন্দরেও পণ্যবাহী কার্গো জাহাজ থেকে মালামাল বোঝাই ও খালাস বন্ধ রয়েছে।
ধর্মঘটের ফলে আশুগঞ্জ বন্দরেও দেড় শতাধিক পণ্যবাহী কার্গো জাহাজ আটকা পড়েছে।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে বলে জানিয়েছেন নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম।