ব্যাংক আমানতে আবগারি শুল্ক প্রত্যাহারের চায় এফবিসিসিআই
আগামী ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক আমানতের ওপর প্রস্তাবিত আবগারি শুল্ক সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)।
সংগঠনটির মতে, বাজেটে ব্যাংক আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক বাড়ানোর ফলে আমানতকারী ব্যাংকে আমানত রাখতে নিরুৎসাহিত হবেন। একই সঙ্গে বাজেটে ঘাটতি মেটাতে সরকারের ব্যাংক-নির্ভরতা উৎপাদনশীল খাতের ঋণপ্রবাহ কমাবে বলে মনে করে সংগঠনটি।
আজ শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে ফেডারেশন ভবনে এফবিসিসিআইসহ নয়টি ব্যবসায়িক সংগঠনের বাজেট-পরবর্তী যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ অভিমত তুলে ধরা হয়।
এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন লিখিত বক্তব্যে বলেন, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান তথা সামগ্রিক ব্যবসায়িক কার্যক্রমের জন্য ব্যাংক লেনদেন করে থাকে মানুষ। বাজেটে ব্যাংকে অর্থ জমা রাখার ক্ষেত্রে আবগারি শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। এতে আমানতকারী আমানত রাখতে নিরুৎসাহিত হবেন। এ ছাড়া অর্থ ব্যাংক চ্যানেলে না গিয়ে ইনফরমাল চ্যানেলে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে; যা অর্থনীতির জন্য শুভ নয়।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘স্বাস্থ্যহানি করে এমন পণ্য ছাড়া অন্য কোনো খাতে আবগারি শুল্ক আরোপ করা ঠিক নয়। তাই ব্যাংকিং খাত থেকে আবগারি শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের প্রস্তাব করছি।’
শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, বাজেটে ঘাটতি মেটাতে সরকার ব্যাংক খাত থেকে ২৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। ব্যাংকিং খাতে সরকারের এ ঋণ-নির্ভরতা উৎপাদনশীল খাতের ঋণপ্রবাহ কমিয়ে দিতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে নতুন ভ্যাট আইনে বার্ষিক টার্নওভার সীমা ৩৬ লাখ টাকা থেকে আরো বৃদ্ধি এবং টার্নওভার কর ৩ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এক লাখ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যাংকে টাকা রাখলে ৮০০ টাকা আবগারি শুল্ক দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে, যা বর্তমানে আছে ৫০০ টাকা। আর ১০ লাখ টাকার ওপর থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যাংকে টাকা রাখলে দুই হাজার ৫০০ টাকা কেটে রাখা হবে; যা বর্তমানে আছে এক হাজার ৫০০ টাকা। একই সঙ্গে এক কোটি টাকার ওপর থেকে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যাংকে রাখলে আবগারি শুল্ক দিতে হবে ১২ হাজার টাকা, যা বর্তমানে আছে সাত হাজার ৫০০ টাকা। আর পাঁচ কোটি টাকার ওপর ব্যাংকে টাকা রাখলে কেটে রাখা হবে ২৫ হাজার টাকা। বর্তমানে পাঁচ কোটি টাকার বেশি ব্যাংকে রাখলে ১৫ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক বাবদ কেটে রাখা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আবুল কাশেম খান, বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, বিকেএমইএ সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান, প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি জসিম উদ্দিন, ঢাকা উইমেন চেম্বারের সভাপতি আনিকা আগা, চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম, এফবিসিসিআই প্রথম সহসভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, সহসভাপতি মুনতাকিম আশরাফ উপস্থিত ছিলেন।