Skip to main content
NTV Online

শিল্প ও সাহিত্য

শিল্প ও সাহিত্য
  • অ ফ A
  • গদ্য
  • কবিতা
  • সাক্ষাৎকার
  • গ্রন্থ আলোচনা
  • বইমেলা
  • চিত্রকলা
  • শিল্পসাহিত্যের খবর
  • পুরস্কার ও অনুষ্ঠান
  • চলচ্চিত্র
  • আলোকচিত্র
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • শিল্প ও সাহিত্য
ছবি

মায়াবী চোখে কেয়া পায়েল

প্যারিসে রোমান্টিক মুডে মেহজাবীন-আদনান

দেশে দেশে ঈদুল আজহা উদযাপন

‘কনকা সেরা পরিবার’ সিজন- ৩ চ্যাম্পিয়ন ঢাকার শাহিদিন-ফারহানা পরিবার

কোহলির স্বপ্নজয়ে সারথি আনুশকা!

প্রকৃতিপ্রেমী বুবলী

ইউরোপের রাজাদের বিজয় উদযাপন

স্মার্ট লুকে কেয়া পায়েল

বর্ণিল আয়োজনে ‘মার্সেল হা-শো’ গ্র্যান্ড ফিনাল

জাপানে প্রধান উপদেষ্টা

ভিডিও
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
টেলিফিল্ম : প্রিয় অভিভাবক
টেলিফিল্ম : প্রিয় অভিভাবক
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৫২
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৫২
গানের বাজার, পর্ব ২৩৫
গানের বাজার, পর্ব ২৩৫
এই সময় : পর্ব ৩৮২৮
এই সময় : পর্ব ৩৮২৮
আপনার জিজ্ঞাসা : বিশেষ পর্ব ৩৩৭৯
আপনার জিজ্ঞাসা : বিশেষ পর্ব ৩৩৭৯
আলোকপাত : পর্ব ৭৭৭
আলোকপাত : পর্ব ৭৭৭
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ১৪
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ১৪
মোহাম্মদ আলি
১৩:৪০, ০৮ এপ্রিল ২০১৫
আপডেট: ১৬:৪৬, ১২ এপ্রিল ২০১৫
মোহাম্মদ আলি
১৩:৪০, ০৮ এপ্রিল ২০১৫
আপডেট: ১৬:৪৬, ১২ এপ্রিল ২০১৫
আরও খবর
কাজী নজরুল ইসলাম : দ্রোহের কবি, সম্প্রীতির কবি
আন্দোলন-সংগ্রাম, রাজনীতিতে নজরুল-সাহিত্যের প্রভাব
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এশিয়া অঞ্চলে বিজয়ী ফারিয়া বাশার
স্বাগত ১৪৩২: বাংলা নববর্ষ বাঙালির উৎসব
ঢাকার ঈদ মিছিলে মোগল ঐতিহ্য
মুক্তগদ্য

বাঙালির বৈশাখের খেলা

মোহাম্মদ আলি
১৩:৪০, ০৮ এপ্রিল ২০১৫
আপডেট: ১৬:৪৬, ১২ এপ্রিল ২০১৫
মোহাম্মদ আলি
১৩:৪০, ০৮ এপ্রিল ২০১৫
আপডেট: ১৬:৪৬, ১২ এপ্রিল ২০১৫
ছেলে কী বুড়ো— বৈশাখী মেলায় নাগরদোলায় উঠার সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না কেউই। ছবি : মোহাম্মদ আলি

পাঁচশ বছরের বেশি সময় ধরে, ইতিহাসের সূত্র ধরে বলা যায়, যেদিন সম্রাট আকবর প্রবর্তিত অভিনব বাংলা সনের ধারা এই বাংলার বুকে প্রোথিত হলো, সেদিন থেকে বৈশাখী সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধারণ করে নিল বাঙালি। বিচিত্র সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের লীলাভূমি এই বাংলায় আগে থেকে এমন অনেক খেলা প্রচলিত ছিল, যা বৈশাখের নতুন দিনগুলোকে বরণ করে নেওয়ার জন্য অনুষ্ঠিত হতো। নববর্ষকে উদযাপন করার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে যে খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হতো ঘটা করে, তার বাইরেও বাংলার ছেলেমেয়েরা অনেক খেলাকে নিজেদের চিত্তবিনোদনের সঙ্গী করে নিত। বলা বাহুল্য, এ ক্ষেত্রে বৈশাখ তথা নববর্ষের আমোদের দিনে এ উপলক্ষে আয়োজিত মেলাই ছিল বড়সড় ধরনের বিনোদন ক্ষেত্র। মেলার রংচঙে চড়কি, নাগরদোলায় চড়ে কে না সুখ পায়। আরো যদি থাকে বিভিন্ন রকম সঙের হর্ষমুখর আনাগোনা, থাকে পুতুলনাচের আয়োজন আর বায়োস্কোপের সরব উপস্থিতি, তাহলে তো কথাই নেই।

বৈশাখের দিন মাঠঘাট শুকনো থাকে, তাই মনের আনন্দে যেখানে সেখানে ইচ্ছামতো খেলা যায়। কিছু খেলা রয়েছে শুধু চৈত্র-বৈশাখের দিনগুলোতে খেলা যায়, আবার কিছু রয়েছে সারা বছরেই খেলা যায়, অথচ শুষ্ক মৌসুমে না খেললেই নয়। কিছু লোকক্রীড়া রয়েছে, যেগুলো সারা বছর ধরেই খেলা যায় এবং স্থানীয়ভাবে দারুণ জনপ্রিয় হয়েছে, সেগুলোও বৈশাখী দিনের আমোদের সঙ্গী হয়। চৈত্র-বৈশাখের শুষ্ক দিনে লৈাকিক আচারসর্বস্ব কিছু উদ্দেশ্যপূর্ণ খেলা অনুষ্ঠিত হয়, যেগুলোর সঙ্গে চাওয়া-পাওয়ার যোগ থাকে। এগুলোর বেশ কয়েকটিকে খেলা হিসেবে ধরা যেতে পারে।

শুষ্ক মৌসুমে দেশের নদ-নদী, খাল-বিল, ফসলি মাঠ শুকিয়ে গেলে অনাবৃষ্টিতে অনেক সময় হতাশা দেখা দেয় আমাদের দেশের চাষিদের মধ্যে। বিশেষ করে বৈশাখের আচানক বৃষ্টিও যখন দুর্লভ হয়ে ওঠে, তখন চলে কাদামাটি খেলা। নামে কাদামাটি খেলা হলেও এটি আসলে আমাদের লোকজীবনের সংস্কার থেকে উদ্ভূত এক ধরনের আচার-অনুষ্ঠান। সংস্কার থেকে লোকের ধারণা জন্মায়, অনাবৃষ্টির সময়ে মেঘকে আমন্ত্রণ জানালে তা মাটির বুকে নেমে আসবে এবং শস্য ফলাবে। ধর্মতুল্য জাদুবিশ্বাস থেকে উদ্ভূত সংস্কারটি খেলার মোড়কে সুদীর্ঘকাল ধরে আমাদের অঞ্চলে প্রচলিত রয়েছে। অনাবৃষ্টির দিনগুলোতে ছেলেমেয়ের দল বাড়ি বাড়ি ঘুরে এক ধরনের ছড়া আবৃত্তি করে আর গৃহস্থরা তাদের গায়ে পানি ঢেলে দিলে সবাই মিলে উঠানে গড়াগড়ি খায়। জল মাগা ছড়াটি এ রকম—তেঁতুল-বিচি পেখম ধর/ গুড়ুম গুড়ুম বাদল ঝর।/ ফাটা আসমা ছিলাইয়্যা দে/ গুটি-সুতা নাই।

এ রকম আরো কিছু আনুষ্ঠানিকতানির্ভর খেলা আমাদের দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কথা ধরা যাক। এখানকার ছোট ছোট উলঙ্গ ছেলেমেয়ে বৈশাখের অনাবৃষ্টির দিনে একটি ভাঙা কুলো মাথায় নিয়ে মানুষের বাড়িতে বাড়িতে ভিক্ষা করতে যায়। কুলোয় বোঝাই থাকে কুনো ব্যাঙ, কিছু পাকা মরিচ, ধান-দূর্বা ও শুকনো বরইগাছের ডালপালা। প্রতিটি বাড়ির বৌ-ঝিরা এদের কুলোর ওপর কলসভর্তি পানি ঢেলে দেয়। আর মাটিতে পড়া এই পানির ওপর ছেলেমেয়েরা তখন গড়াগড়ি খেতে খেতে বলে—মেঘ রাজা রে, তুই আমার সহোদর ভাই/এক ঘটি মেঘের লাগি দুয়ার ভিজ্যা যায়... ইত্যাদি। শুধু এ রকমটি যে রয়েছে তা নয়, দেশের কোনো কোনো অঞ্চলে বৈশাখী খরায় পড়লে বৃষ্টিকে আমন্ত্রণের জন্য বদনা, ব্যাঙ ও পুতুলের বিয়ের আয়োজন করা হয়।

১.

অনাবৃষ্টি আর দাবদাহের দিনে আরেকটি খেলার কথা উল্লেখ করতে হয়, সেটি মূলত মেয়েলি ব্রত। তিস্তা আমাদের উত্তরাঞ্চলের অন্যতম প্রধান নদী। প্রধানত রাজবংশী বা রাভা সম্প্রদায়ের কৃষক-বধূরা বৈশাখ মাসজুড়ে এ নদীর নামে গ্রামে গ্রামে ছোট ব্রতিনী দল তৈরি করে। কোথাও এর নাম ঘাটো ব্রত, কোথাও মেছিনি আবার কোথাও বা ভেদই-খেলী। মাটির ডেলায় সিঁদুর-টিপ দিয়ে দই, আলোচাল ও ফুল দিয়ে তাকে ডালায় সাজিয়ে গৃহস্থদের বাড়িতে বাড়িতে যায় আর বৃষ্টি-কামনার গান ধরে—‘তিস্তা বুড়ি সাজ্যেছে, সোনার খড়ম বাজ্যেছে/ছলছলাইয়া বৃষ্টি নামু, ডহর-বহর ভাস্যেছে/কুলাত কইর‍্যা ধান দাও, বাটা-ভরা পান দ্যাও/ঝিনঝিনায়া বৃষ্টি নামু, ডহর-বহর ভাস্যেছে/তিস্তা বুড়ি নামে রে, বাজে হীরামন বাঁশি রে/তিস্তা বুড়ি সালাম দে, ডহর-বহর হাস্যেছে।’ বৃষ্টির জন্য জাদুবিশ্বাসজাত ব্রত-অনুষ্ঠান তথা ধর্মীয় আবরণে রাজবংশী সম্প্রদায়ের মেয়েরা বেশ ঘটা করে বৈশাখের এ আমোদপূর্ণ খেলাটি পালন করে আসছে।

লোকবিশ্বাসজাত আরেকটি খেলার নাম ‘যাক গান’। অনুষ্ঠানভিত্তিক এ খেলা পরিবেশনরীতির চমৎকারিত্বের জন্য অনেকের কাছে বেশ আদরণীয়। সাংগীতিক দ্যোতনা বেশি থাকলেও মূলত এটি একটি খেলা। শুধু গান যে পরিবেশিত হয় এতে তা নয়, কিছু উপাদানের উপস্থিতিও থাকতে হয় ‘যাক’ গানে। পহেলা বৈশাখের ভোরে বাচ্চারা সবাই মিলে চৈত্রের ঝরা পাতা দিয়ে প্রথমে কুণ্ডলী পাকায়। এর পর তারা সমস্বরে গান ধরে। গানের বিষয়বস্তু একটাই—নিজেদের দুঃখ-অভাব বিত্তবানদের বাড়িতে যাক, বিত্তবানদের সব ব্যবহার্য সামগ্রী, আসবাব, অর্থ-সুখ যেন তাদের বাড়িতে চলে আসে।

বৈশাখকে উদযাপন করার জন্য বাংলাদেশের কোথাও কোথাও এখনো আয়োজন করা হয়ে থাকে ষাঁড়ের লড়াইয়ের। দারুণ উত্তেজনাপূর্ণ খেলাটির সঙ্গে গ্রামবাসী দারুণ পরিচিত অনেককাল আগে থেকে। ষাঁড়ে ষাঁড়ে লড়াইয়ের রোমহর্ষক খেলাটি রোমাঞ্চ সহজে ভোলার নয়। শুধু খেলার সময়ে নয়, লড়াইতে অংশগ্রহণের জন্য আনা ষাঁড়গুলোকে বিচিত্র কাপড় ও নানা রকম বেশভূষায় চিত্রিত করার সময়েও বেশ উৎসবের আমেজ পাওয়া গ্রামবাসীর মধ্যে। মোরগে লড়াইয়ের মতো দুর্ধর্ষ খেলাও বাদ পড়ে না বৈশাখী আমোদ থেকে।

চট্টগ্রাম অঞ্চলে এ সময়ে হয় কয়েকটি খেলা। এসব খেলার মধ্যে সবার আগে উল্লেখ করতে হয় বলীখেলার কথা। এটি এখন বাঙালির বৈশাখ উদযাপনের অন্যতম প্রধান আকর্ষণীয় খেলা হিসেবে পুরো জাতির কাছে সমানভাবে আদৃত। কোনো কোনো লোকক্রীড়া যে লোক-উৎসবের রূপ নিতে পারে, তার আদর্শ উদাহরণ বলীখেলা। বর্তমানে জব্বারের বলীখেলা নামে আমরা যা দেখি, তা আসলে ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের আবদুল জব্বার সওদাগর নামের ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের একজন সংগঠক কর্তৃক প্রবর্তিত আনুষ্ঠানিক এক খেলা। তাঁর লক্ষ্য ছিল ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে দেশের যুবসমাজকে একাট্টা করা।

চট্টগ্রামের দুটি খেলা সম্বন্ধে না বললেই নয়। একটি চুঁয়া খেলা, অন্যটি কইতর বাচ্চা খেলা। খেলাটির আরেক নাম চুঙ্গা খেলা। এটি আতশবাজির খেলা। বেশ বিপজ্জনক খেলা। সাধারণত শবেবরাতের রাতকে উপলক্ষ করে এটি খেলা হলেও নববর্ষকে উদযাপন করাতে ছেলের দল পিছিয়ে নেই। চট্টগ্রামে বাঁশের চুঙ্গা বা নলকে চুঁয়া বলে। এই চুঁয়ার ভেতর বারুদ, হাঁড়ি-পাতিলের ভাঙা চাড়া ইত্যাদি ঠেসে ভর্তি করা হয়। এ খেলার চুঁয়া বা চুঙ্গাগুলো ওজনভেদে পাইয়া (পোয়া), আধপাইয়া (আধপোয়া), ছডাইক্কা (ছটাক) ও লোছন ধরা প্রভৃতি নামে ডাকা হয়। চুঙ্গা খেলোয়াড়রা প্রথমে দুদলে বিভক্ত হয়ে মাঠের দুদিকে অবস্থান নেয়। প্রাথমিক পর্যায়ের খেলাতে নানা কেতায় চুঁয়ার আতশবাজি ফোটানে চলে। মাঠের রাতের আকাশ তখন অসংখ্য আলোর ফুলঝুরিতে উদ্ভাসিত হয়। দৃশ্যনীয় পরিবেশে হাজার হাজার লোকের সমাগমে খেলাটি প্রাণবন্ত রূপ লাভ করে। দ্বিতীয় পর্যায়ের খেলা আরো প্রাণ পায় যখন দ্বিপক্ষীয়, প্রতিযোগিতামূলক বাজি পোড়ানোতে মেতে ওঠে দুদল। তারা পরস্পরের প্রায় মুখোমুখি এসে একে অপরকে লক্ষ্য করে একের পর এক চুঙ্গাগুলো ছুড়তে থাকে। কোনোটি আকাশ বরাবর সোজা উঠে যায়, কোনোটি সামনের দিকে, আবার কোনোটি যে মারে ঠিক তা তার বরাবরই ধেয়ে আসে। এমনও হয়, কোনো কোনো চুঙ্গা সর্পিল ভঙ্গিতে নেচে নেচে আগুনের স্ফুলিঙ্গ ছোটাতে ছোটাতে দারুণ দৃশ্যের সূচনা করে। প্রতিপক্ষের চুঙ্গাগুলো মাঠের ওপর দিয়ে কোনো দলের দিকে ছুটে এলে সাধারণ নিয়ম হচ্ছে মাটিতে শুয়ে পড়া। আর সরাসরি ধেয়ে এলে দুই দলে ভাগ হয়ে অবস্থান নেওয়া। একসঙ্গে যখন চুঙ্গাগুলো কোনো দলের দিকে ছুটে আসে, তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। এভাবে কোনো দল একবার এগোয়, কোনো দল পেছোয়। এভাবে কোনো দলকে মাত্রাতিরিক্ত পিছু হটা অবস্থায় দেখামাত্রই প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়রা একেবারে মাঠ পার করিয়ে তাদের নিজস্ব এলাকায় নিয়ে যায়।

লাঠিখেলা ছাড়া আমাদের দেশের অনেক স্থানে বৈশাখের আমোদ তেমন একটা জম্পেশ রূপ ধারণ করে না। এ খেলার মধ্যে বীরত্বব্যঞ্জক এক ধরনের সোৎসাহ লক্ষ করা যায় বলে লোকজনের কাছে এটি দারুণ জনপ্রিয় একটি খেলা হিসেবে ধরা দেয়। বর্তমানে এটি শুধু মজাদার খেলা পরিচিত হলেও এর ইতিহাস কিন্তু অন্য কথা বলে। জমিদারি যুগে প্রজা-নিপীড়নের জন্য জমিদাররা বেশ জাঁমজমকের সঙ্গে লেঠেল-বাহিনী পুষত। আবার গ্রামের দুই বিবদমান প্রতিপক্ষের মধ্যে নানা রকম উদ্দেশ্য হাসিলের শক্তিপরীক্ষাও করা হতো এই লেঠেল বা লাঠিয়াল বাহিনীর মাধ্যমে। ফরিদপুরে বিচিত্র ধরনের লাঠিখেলার প্রচলন রয়েছে। বত্রিশ আনির খেলা, বাগান খেলা, রংপশারি, কাউন্সিল খেলা, তুড়মি ও আড় খেলা। লাঠির অনেক কসরতের মধ্যে উল্লেখ্য বেনট, পাট্টা, আলীপ্যাঁচ, রংভাজ, উস্তাদি, পায়তারা, গরম, সেলামি ইত্যাদি। লাঠিখেলার মধ্যে কিছু কিছু নাচও থাকে। যেমন : সখা নৃত্য, হাজরা নৃত্য, পেট্টা, আলী আলী নৃত্য, রায়বেশে নৃত্য, নৌকাবাইচ নৃত্য, মানুষ পোতা নৃত্য, ঢেঁকি নৃত্য, জেকের নৃত্য, ময়ূর নৃত্য ইত্যাদি। তিন-চার হাত লম্বা ও পরিমিতি ব্যাসার্ধের বাঁশের তৈলাক্ত মসৃণ লাঠি এ খেলার উপকরণ। আসরে একজন খেলোয়াড় কখনো এক হাতে, কখনো দুই হাতে দুটি লাঠি নিয়ে কৌশলে তা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে খেলা দেখায়। বিভিন্ন চালে অতি ক্ষিপ্রতার সঙ্গে লাঠি চালানোয় একেকজনের দক্ষতার পরিচয় মেলে। কৃত্রিম যুদ্ধের মহড়ায় দ্বৈত লাঠিখেলা হয়। আবার দলগত লাঠি সঞ্চালনও দেখার মতো। দলগত এ খেলায় লাঠিয়াল বা লেঠেলদের একে অপরকে বিভিন্ন কৌতুককর বাতচিত বিনিময় করে বাদ্যের তালে তালে লাঠিখেলা চলে। একক লাঠিখেলায় সামনে, পেছনে, পাশে, আড়াআড়িভাবে, মাথার ওপর দিয়ে, দু-পায়ের ফাঁক দিয়ে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে লাঠি ঘোরানোতেই এ খেলার মূল আনন্দ। তাই লাঠিখেলা দেশের নামীদামি বৈশাখী মেলার প্রায় অপরিহার্য খেলা হিসেবে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। একসময় বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গাতেই এ খেলার প্রচলন ছিল। বর্তমানে মানিকগঞ্জ, জয়পুরহাট, ফরিদপুর, নড়াইল, শ্রীমঙ্গল, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ প্রভৃতি অঞ্চলে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।

বানরনাচ দেখিয়েও লোকজনের বিনোদনের খোরাক জোগানোর ব্যবস্থা থাকে মেলাগুলোতে। কাবাডি বা হাডুডু খেলা পয়লা বৈশাখের অন্যতম খেলার একটি। বলার অপেক্ষা রাখে না, এটি আমাদের জাতীয় খেলা। বৈশাখ মাস আসার আগে থেকেই গ্রামে গ্রামে ছেলেদের হাডুডু খেলার মহড়া শুরু হয়। বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনাসহকারে ছেলে-বুড়ো সবাই খেলোয়াড়দের লড়াকু মেজাজে মাতিয়ে রাখে এ-সময়টাতে। নববর্ষের আমোদে এক গ্রামের ছেলেরা যে আরেক গ্রামের ছেলেদের সঙ্গে হাডুডু লড়াইয়ে নামবে, তা ঘটা করে গ্রামবাসীকে জানিয়ে দেয় আয়োজকরা। মাঠজুড়ে দুপক্ষের মধ্যে রোমহর্ষক লড়াই চলে। সে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে যার যার দলের সমর্থনকারীদের মধ্যে।

আমাদের আবহমান বাংলার খেলাধুলার মধ্যে কড়ি খেলা অন্যতম জনপ্রিয় একটি খেলা। মূলত মেয়েদের খেলা এটি। সমান আকারের চারটি কড়ি জুটলেই এ-খেলা শুরু করা যেতে পারে। খেলোয়াড় প্রয়োজন নিদেনপক্ষে দুজন। তবে ইচ্ছে করলে আরো কয়েকজন হলেও হয়। পাশার ঘুঁটির মতো চারটি কড়ি ছুড়ে দিলে ওগুলো উপুড় হয়ে পড়লে খেলার হাত পায়। মাটিতে ফেলার পর কড়ি গায়ে লেগে থাকলে খেলোয়াড়রা দান হারায়। জোড়ে জোড়ে মারতে পারলে দুই পয়েন্ট করে পাওয়ার সুযোগ থাকে। আবার না পারলে সেবারের মতো দান হারায়। কারো চালে চারটি কড়িই চিৎ হয়ে পড়লে যে কেউ ছোঁ মেরে তুলে নিয়ে চুমু খেলেই প্রতিটির জন্য একটি করে পয়েন্ট পায়। এভাবে যার আগে কুড়ি পয়েন্ট হয়, সে জয়লাভ করে। আর সবার শেষে যার কুড়ি পয়েন্ট পুরো হয়নি, তার হার হয়। এটি কিন্তু খেলার প্রথম পর্ব। দ্বিতীয় পর্বে জোড়-বিজোড় ধরা হয়। দুহাতের মুঠোতে জোড়-বিজোড়ের এ পদ্ধতি সম্পূর্ণ ভাগ্যনির্ভর। হাত শূন্য হওয়ার আগপর্যন্ত সে যত পয়েন্ট লাভ করে, পরাজিত খেলোয়াড়কে তত কিল মারার সুযোগ পায়। এভাবে পর্যায়ক্রমে বিজয়ী খেলোয়াড়রা তাকে শাস্তি প্রদান করে।

২.

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ঢোপের খেলা নামক একধরনের খেলা টাঙ্গাইলে অনুষ্ঠিত হতো। লোকগবেষক আশরাফ সিদ্দিকীর বয়ানে খেলাটি তুলে ধরা যাক। তিনি লিখেছেন : ‘একটি কাঠের খণ্ডে দড়ি বুনিয়ে তৈরি হতো ঢোপের বল—শিকড়সহ বাঁশের দণ্ড দিয়ে বিপরীত খেলোয়াড়দের দিকে নিয়ে যাওয়া হতো। অর্থাৎ এইভাবে ঢোপের আঘাতে পুরাতন বর্ষকে বিদায় করে দিচ্ছি।’ ঠিক একটি মাঝারি বলের মতো দেখতে হতো। উপরে শক্ত দড়ির আবরণে বলটিকে বলা হতো ঢোপ। আর মাঝারি ধরনের বাঁশের গোড়ালি কেটে যে লাঠিটা বানানো হতো, দেখতে তা অনেকটা হকিস্টিকের মতো। প্রতি দলে সমানসংখ্যক খেউরি বা খেলোয়াড়, তা হোক ১০ জন করে কিংবা ২০ জনই হোক, অংশগ্রহণ করে বলকে হকির গোলের মতোই একটি নির্দিষ্ট বেষ্টনীর মধ্যে নিতে হতো। বেষ্টনী করা হতো সাধারণ খুঁটি বসিয়ে কিংবা নেহাতই ঢেলা বসিয়ে। বেশ জমত খেলাটি। অনেকে ঢোপের লাঠির হুটহাট বাড়ি খেলেও মজার কমতি ছিল না তাতে। এ-খেলাটি এখন আর টাঙ্গাইলে দেখতে পাওয়া না গেলেও দীর্ঘকাল ধরে স্থানীয় খেলা হিসেবে বেশ জনপ্রিয় ছিল।

আমাদের দেশে প্রচলিত ছিল এমন অনেক খেলা, যাতে গাঁথা ছিল প্রাচীন বিশ্বাসের ছাপ। যেমন একটি খেলার নাম করা যেতে পারে, সেটি হচ্ছে ‘ভাড়াভ’ভূঁড়া খেলা বা ভালাবুঢ়া খেলা। কয়েক দিন আগেও এটি খেলা হতো। সাধারণত কার্তিক মাসের শেষে কিংবা চৈত্রসংক্রান্তির দিনে গ্রামের ছেলেরা পাটশোলার ‘বুন্দা’ বাঁধত। আর সেগুলো নিয়ে সারা গ্রাম প্রদক্ষিণ করত। আগুনের বুন্দায় ভরে যেত চারদিক। গ্রামের পর গ্রামে শুধু দেখা মিলত আগুনের কুণ্ডলী। দল বেঁধে সমস্বরে ছেলেরা ছড়া কাটত—ভাড়া (ভালো) আসে ভূঁড়া (বুঢ়া) যায়, বোছা কান মোছায় খায়। খেলার আনন্দে হল্লা করে উদযাপন করা হয় অনুষ্ঠানটি। ধারণা করা যায়, পুরাতন বা বিগত বছরের আবর্জনাকে দূরে ঠেলে দিয়ে নতুনকে সাড়ম্বরে আমন্ত্রণ জানানোর জন্যই এ রকমটি করত গ্রামের ছেলের দল।

ঢাকায় একসময় ঘুড়ি ওড়ানোর রেওয়াজ ছিল, মুন্সীগঞ্জের গরুদৌড় প্রতিযোগিতা ছিল একসময় অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণ। এ দুটি খেলা ছাড়াও ঘোড়ার দৌড়, পায়রা ওড়ানো, নৌকাবাইচ, বহুরূপীর সাজ, ষাঁড়ের লড়াই, মোরগ লড়াই আজকাল বৈশাখী মেলায় আর দেখা যায় না তেমন একটা।

আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর লোকেরাও নতুন বর্ষকে উদযাপন করে বেশ জাঁকজমকের সঙ্গে। মারমাদের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয়। পুরাতন বর্ষকে বিদায় জানানো ও নতুন বর্ষকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য প্রতিবছর আয়োজন করে সাংগ্রাই অনুষ্ঠানের। এ অনুষ্ঠানে মারমারা পরস্পরের গায়ে পানি ছিটানোর উৎসবে মেতে ওঠে। পুরাতন বছরের সব জরা-জীর্ণতা, পাপ-কালিমা দূর করার লোকবিশ্বাস থেকে তারা এ জলকেলিতে অংশ নেয়।

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. বড় বিপর্যয়ে হাউজফুল-৫, শুক্রবার বক্স অফিসে সর্বনিম্ন আয়
  2. ‘আমি আমার শরীরকে ভীষণ ভালবাসি’
  3. বিমান দুর্ঘটনায় প্রিয়জন হারিয়েছেন ‘টুয়েলভথ ফেল’ অভিনেতা
  4. বিবাহিত জীবনে সফল না-ই হতে পারি, বিচ্ছেদে কিন্তু সফল : আমির খান
  5. বক্স অফিস : ৪ দিনে ১৬০ কোটির ঘরে ‘হাউসফুল ৫’
  6. মুখের বিমা করলেন করণ জোহর?
সর্বাধিক পঠিত

বড় বিপর্যয়ে হাউজফুল-৫, শুক্রবার বক্স অফিসে সর্বনিম্ন আয়

‘আমি আমার শরীরকে ভীষণ ভালবাসি’

বিমান দুর্ঘটনায় প্রিয়জন হারিয়েছেন ‘টুয়েলভথ ফেল’ অভিনেতা

বিবাহিত জীবনে সফল না-ই হতে পারি, বিচ্ছেদে কিন্তু সফল : আমির খান

বক্স অফিস : ৪ দিনে ১৬০ কোটির ঘরে ‘হাউসফুল ৫’

ভিডিও
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ১৪
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ১৪
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬১
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬১
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৪০
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৪০
এই সময় : পর্ব ৩৮২৮
এই সময় : পর্ব ৩৮২৮
আপনার জিজ্ঞাসা : বিশেষ পর্ব ৩৩৭৯
আপনার জিজ্ঞাসা : বিশেষ পর্ব ৩৩৭৯
জোনাকির আলো : পর্ব ১২৪
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৭
ফাউল জামাই : পর্ব ১০০
ফাউল জামাই : পর্ব ১০০
টেলিফিল্ম : প্রিয় অভিভাবক
টেলিফিল্ম : প্রিয় অভিভাবক
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫২

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x
ইউনিজয়
ফনেটিক
English

By using this site you agree to our Privacy Policy