Skip to main content
NTV Online

শিল্প ও সাহিত্য

শিল্প ও সাহিত্য
  • অ ফ A
  • গদ্য
  • কবিতা
  • সাক্ষাৎকার
  • গ্রন্থ আলোচনা
  • বইমেলা
  • চিত্রকলা
  • শিল্পসাহিত্যের খবর
  • পুরস্কার ও অনুষ্ঠান
  • চলচ্চিত্র
  • আলোকচিত্র
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • শিল্প ও সাহিত্য
ছবি

বর্ণিল আয়োজনে ‘মার্সেল হা-শো’ গ্র্যান্ড ফিনাল

জাপানে প্রধান উপদেষ্টা

কানে নজরকাড়া লুকে জাহ্নবী কাপুর

বর্ণিল সাজে সেমন্তী সৌমি

লাল টুকটুকে মিম

একান্তে তাহসান-রোজা

মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর ৫ খাবার

মেট গালা ফ্যাশনে দ্যুতি ছড়ালেন কিয়ারা

গ্রীষ্মের ফুলে ভিন্নরূপে রাজধানীর প্রকৃতি

বিমান বাহিনীর অনুশীলন পর্যবেক্ষণে প্রধান উপদেষ্টা

ভিডিও
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ২৯৯
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ২৯৯
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬০
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬০
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৭৪
গানের বাজার, পর্ব ২৩৪
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ১০
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ১০
মিউজিক নাইট : পর্ব ১৯৫
মিউজিক নাইট : পর্ব ১৯৫
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৩০
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৩০
অঞ্জন আচার্য
১২:৩৫, ২৭ জুলাই ২০১৭
অঞ্জন আচার্য
১২:৩৫, ২৭ জুলাই ২০১৭
আপডেট: ১২:৩৫, ২৭ জুলাই ২০১৭
আরও খবর
কাজী নজরুল ইসলাম : দ্রোহের কবি, সম্প্রীতির কবি
আন্দোলন-সংগ্রাম, রাজনীতিতে নজরুল-সাহিত্যের প্রভাব
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এশিয়া অঞ্চলে বিজয়ী ফারিয়া বাশার
স্বাগত ১৪৩২: বাংলা নববর্ষ বাঙালির উৎসব
ঢাকার ঈদ মিছিলে মোগল ঐতিহ্য

দ্বিতীয় পর্ব

রবির জীবনে মৃত্যুশোক

অঞ্জন আচার্য
১২:৩৫, ২৭ জুলাই ২০১৭
অঞ্জন আচার্য
১২:৩৫, ২৭ জুলাই ২০১৭
আপডেট: ১২:৩৫, ২৭ জুলাই ২০১৭

কাদম্বরী দেবী

রবীন্দ্রনাথের নতুন বউঠাকরুন, বড় ভাই জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্ত্রী।

মৃত্যু : ৮ বৈশাখ ১২৯১ বঙ্গাব্দ, ১৯ এপ্রিল ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার। আফিম খেয়ে আত্মহত্যা করেন। প্রশান্তকুমার পাল মনে করেন, ৮ ও ৯ বৈশাখ এই দুই দিন ডাক্তাররা তাঁর জীবনরক্ষার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সম্ভবত ৯ বৈশাখ, ২০ এপ্রিল, রোববার রাতে বা ১০ বৈশাখ, ২১ এপ্রিল, সোমবার প্রভাতে তাঁর জীবনাবসান ঘটে।

রবীন্দ্রনাথের কাছে জীবনের ধ্রুবতারা হিসেবে পরিচিত তাঁর বৌদি কাদম্বরী দেবী। তিনি ছিলেন রবীন্দ্রনাথের খেলার সঙ্গী, সাহিত্যের অনুপ্রেরণাদানকারী-সমালোচক। কাদম্বরী দেবীর মৃত্যু যে রবীন্দ্রনাথকে কতটা আহত করেছিল, তা তাঁর ‘জীবনস্মৃতি’ বইয়ের ‘মৃত্যুশোক’ অধ্যায়ের এক জায়গায় খুব স্পষ্ট করেই লিখেছেন :

“...আমার চব্বিশ বছর বয়সের সময় মৃত্যুর সঙ্গে যে পরিচয় হইল তাহা স্থায়ী পরিচয়। তাহা তাহার পরবর্তী প্রত্যেক বিচ্ছেদশোকের সঙ্গে মিলিয়া অশ্রুর মালা দীর্ঘ করিয়া গাঁথিয়া চলিয়াছে। শিশুবয়সের লঘু জীবন বড়ো বড়ো মৃত্যুকেও অনায়াসেই পাশ কাটাইয়া ছুটিয়া যায়, কিন্তু অধিক বয়সে মৃত্যুকে অত সহজে ফাঁকি দিয়া এড়াইয়া চলিবার পথ নাই। তাই সেদিনকার সমস্ত দুঃসহ আঘাত বুক পাতিয়া লইতে হইয়াছিল। ... জীবনের মধ্যে কোথাও যে কিছুমাত্র ফাঁক আছে, তাহা তখন জানিতাম না; সমস্তই হাসিকান্নায় একেবারে নিরেট করিয়া বোনা। তাহাকে অতিক্রম করিয়া আর কিছুই দেখা যাইত না, তাহা তাহাকে একেবারে চরম করিয়াই গ্রহণ করিয়াছিলাম। এমনসময় কোথা হইতে মৃত্যু আসিয়া এই অত্যন্ত প্রত্যক্ষ জীবনটার একটা প্রান্ত যখন এক মুহূর্তের মধ্যে ফাঁক করিয়া দিল, তখন মনটার মধ্যে সে কী ধাঁধাই লাগিয়া গেল। চারি দিকে গাছপালা মাটিজল চন্দ্রসূর্য গ্রহতারা তেমনি নিশ্চিত সত্যেরই মতো বিরাজ করিতেছে, অথচ তাহাদেরই মাঝখানে তাহাদেরই মতো যাহা নিশ্চিত সত্য ছিল, এমন-কি, দেহ প্রাণ হৃদয় মনের সহস্রবিধ স্পর্শের দ্বারা যাহাকে তাহাদের সকলের চেয়েই বেশি সত্য করিয়াই অনুভব করিতাম সেই নিকটের মানুষ যখন এত সহজে এক নিমিষে স্বপ্নের মতো মিলাইয়া গেল তখন সমস্ত জগতের দিকে চাহিয়া মনে হইতে লাগিল, এ কী অদ্ভুত আত্মখণ্ডন! যাহা আছে এবং যাহা রহিল না, এই উভয়ের মধ্যে কোনোমতে মিল করিব কেমন করিয়া!”

প্রিয় এই মানুষটির মৃত্যুবেদনার সুস্পষ্ট পরিচয় রয়েছে ‘পুষ্পাঞ্জলি’ নামের সমসাময়িক রচনাটিতে। রচনাটির এক জায়গায় আছে :

“হে জগতের বিস্মৃত, আমার চিরস্মৃত, ... এ-সব লেখা যে আমি তোমার জন্য লিখিতেছি। পাছে তুমি আমার কণ্ঠস্বর ভুলিয়া যাও, অনন্তের পথে চলিতে চলিতে যখন দৈবাৎ তোমাতে আমাতে দেখা হইবে তখন পাছে তুমি আমাকে চিনিতে না পার, তাই প্রতিদিন তোমাকে স্মরণ করিয়া আমার এই কথাগুলি তোমাকে বলিতেছি, তুমি কি শুনিতেছ না! এমন একদিন আসিবে যখন এই পৃথিবীতে আমার কথার একটিও কাহারও মনে থাকিবে না, কিন্তু ইহার একটি-দুটি কথা ভালোবাসিয়া তুমিও কি মনে রাখিবে না! যে-সব লেখা তুমি এত ভালোবাসিয়া শুনিতে, তোমার সঙ্গেই যাহাদের বিশেষ যোগ, একটু আড়াল হইয়াছ বলিয়াই তোমার সঙ্গে আর কি তাহাদের কোনো সম্বন্ধ নাই! এত পরিচিত লেখার একটি অক্ষরও মনে থাকিবে না? তুমি কি আর-এক দেশে আর-এক নূতন কবির কবিতা শুনিতেছ?”

[কাদম্বরী দেবীর মৃত্যুর পর রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, কিছুদিনের জন্য তাঁর মধ্যে ‘একটা সৃষ্টিছাড়া রকমের মনের ভাব’ দেখা দিয়েছিল। সে-সময় বহুদিন ধুতির ওপর একটা মোটা চাদর জড়িয়ে ও চটিজুতো পরে বই কিনতে গেছেন ‘কে আমাকে কী মনে করিবে’, এ কথা একেবারেই ভাবেননি (‘জীবনস্মৃতি’)।]

রবীন্দ্রগবেষক প্রশান্তকুমার পাল বলেন, “‘সরোজিনী প্রয়াণ’ রচনাটি অনেকটা লঘু ভঙ্গিতে লেখা। কাদম্বরী দেবীর শোকাবহ মৃত্যুর মাত্র এক মাসের মধ্যে এইরূপ হালকা চালে ভ্রমণবৃত্তান্ত রচনা করা রবীন্দ্রনাথের পক্ষে একটু বিসদৃশ লাগতে পারে, বস্তুত রবীন্দ্রজীবনীকার সেইরকম মন্তব্যই করেছেন। ‘বিচিত্র প্রবন্ধ’ গ্রন্থে রচনাটি যেরূপ বহুল পরিমাণে বর্জিত আকারে মুদ্রিত হয়েছে, সেটি পড়লে এইরূপ মন্তব্য খুব সংগতও মনে হবে। কিন্তু ভারতী-তে মূল রচনাটি আপাতদৃষ্টিতে হাস্যপরিহাসে মুখর লঘুচিত্ততার পরিচায়ক হলেও, সেইটিই তার শেষ পরিচয় নয়। প্রকৃতপক্ষে যে-অংশগুলি পরে পরিত্যক্ত হয়েছে, তারই মধ্যে রবীন্দ্রনাথের সমকালীন মানসিকতাটি যথার্থভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।” প্রসঙ্গত, ‘সরোজিনী প্রয়াণ’ জ্যোতিরিন্দ্রনাথের জাহাজ ব্যবসার প্রথম জাহাজের নাম। ‘সরোজিনী প্রয়াণ’ জাহাজে ভ্রমণেরও প্রথম কাহিনী।

তবে রচনাগুলোর মধ্যেও যে শোকের নীরব স্রোত বহমান ছিল, তা একটু গভীরে চিন্তা করলেই অনুধাবন করা যায়। ‘ভারতী’ পত্রিকার শ্রাবণ ১৩১৪ বঙ্গাব্দ, সংখ্যার এরূপ একটি অংশ : ‘হাসি তামাসা অনেক সময়ে পর্দ্দার কাজ করে, হৃদয়ের বে-আব্রুতা দূর করে। অত্যন্ত অন্তরঙ্গ বন্ধুদের কাছে সকলেই শোভা পায়, কিন্তু নগ্ন প্রাণ লইয়া কিছু বাহিরে বেরোন যায় না, সে সময়ে প্রাণের উপরে আবরণ দিবার জন্য গোটাকতক হাল্কা কথা গাঁথিয়া ঢিলেঢালা একপ্রকার সাদা আলখাল্লা বানাইতে হয়, সেটার রঙ কতকটা হাসির মত দেখায় বটে। কিন্তু সকল সময়ে এ রকম কাপড়ও জোটে না। সে অবস্থায় অসভ্যদের মত গায়ে রঙ করিয়া, উল্কি পরিয়া, এক ছটাক শুষ্ক দন্তচ্ছটা আধ সের জলে গুলিয়া সর্ব্বাঙ্গে তাহারি ছাপ মারিয়া সমাজে বাহির হইতে হয়, ...লেখাই লোকে দেখে, লেখকের কথা কি আর কেউ ভাবে।’

অন্যদিকে ভাদ্র সংখ্যার [ভারতী, ১৩১৪ বঙ্গাব্দ] একটি লেখার শুরুটা এমন : “আবার কেমন হৃদয়ের মধ্যে মেঘ করিয়া আসে, লেখার উপরে উপরে গম্ভীর ছায়া পড়ে, মনের কথাগুলি শ্রাবণের বারিধারার মত অশ্রুর আকারে ঝরঝর করিয়া ঝরিয়া পড়িতে চায়। কিন্তু এ লেখার বাদলা কাহারো রাখিতে চাই না, সুতরাং নিশ্বাস ফেলিয়া আমি সরিয়া পড়িলাম, আর সমস্ত প্রকাশ হউক।”

এই মনোভাব থেকেই তিনি গঙ্গাতীরের সৌন্দর্য বর্ণনা প্রসঙ্গে লিখেছেন, “এই যে-সব গঙ্গার ছবি আমার মনে উঠিতেছে, এ কি সমস্তই এইবারকার স্টীমার-যাত্রার ফল? তাহা নহে। এ-সব কতদিনকার কত ছবি, মনের মধ্যে আঁকা রহিয়াছে। ইহারা বড়ো সুখের ছবি আজ ইহাদের চারিদিকে অশ্রুজলের স্ফটিক দিয়া বাঁধাইয়া রাখিয়াছি। এমনতরো শোভা আর এ জন্মে দেখিতে পাইব না।”

‘কাদম্বরী দেবীর স্মৃতি-সুরভিত দীর্ঘ নিশ্বাস এইরূপে বার বার এই রচনার আপাত-লঘুতাকে অতিক্রম করে ধ্বনিত হয়েছে’ বলে মনে করেন প্রশান্তকুমার পাল। কাদম্বরী দেবীর মৃত্যু প্রসঙ্গে ৮ আষাঢ় ১৩২৪ বঙ্গাব্দে লেখা এক চিঠিতে রবীন্দ্রনাথ অমিয় চক্রবর্তীকে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন এভাবে :

‘এক সময়ে যখন আমার বয়স তোমারই মতো ছিল তখন আমি যে নিদারুণ শোক পেয়েছিলুম সে ঠিক তোমারই মতো, আমার যে-পরমাত্মীয় আত্মহত্যা করে মরেন শিশুকাল থেকে আমার জীবনের পূর্ণ নির্ভর ছিলেন তিনি। তাই তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে আমার পায়ের নীচে থেকে যেন পৃথিবী সরে গেল, আমার আকাশ থেকে আলো নিভে গেল। আমার জগৎ শূন্য হল। আমার জীবনের সাধ চলে গেল। সেই শূন্যতার কুহক কোনোদিন ঘুচবে এমন কথা আমি মনে করতে পারিনি। কিন্তু তারপরে সেই প্রচণ্ড বেদনা থেকেই আমার জীবন মুক্তির ক্ষেত্রে প্রথম প্রবেশলাভ করলে। আমি ক্রমে বুঝতে পারলুম, জীবনকে মৃত্যুর জানলার ভিতর থেকে না দেখলে তাকে সত্যরূপে দেখা যায় না। মৃত্যুতে আকাশে জীবনের যে বিরাট মুক্তরূপ প্রকাশ পায় প্রথমে তা বড়ো দুঃসহ। কিন্তু তার পরে তার ঔদার্য মনকে আনন্দ দিতে থাকে। তখন ব্যক্তিগত জীবনের সুখ-দুঃখ অনন্ত সৃষ্টির ক্ষেত্রে হালকা হয়ে দেখা দেয়।’

রবীন্দ্রনাথ তাঁর বহু গ্রন্থ বৌদি কাদম্বরী দেবীকে উৎসর্গ করেছেন। কোনোটি জীবিতকালে, কোনোটা বা কাদম্বরীর মৃত্যুর পরে।

‘লিপিকা’ গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত ‘কৃতঘ্ন শোক’ [কার্তিক ১৩২৬ বঙ্গাব্দ), ‘সন্ধ্যা ও প্রভাত’ [কার্তিক ১৩২৬ বঙ্গাব্দ], ‘একটি দিন’ [অগ্রহায়ণ ১৩২৬ বঙ্গাব্দ], ‘প্রথম শোক’ [আষাঢ় ১৩২৬ বঙ্গাব্দ] ইত্যাদি রচনা কাদম্বরী দেবীকে স্মরণ করেই লেখা। তা ছাড়া ‘ভগ্নহৃদয়’-এর উৎসর্গ ও তাঁকে স্মরণ করে লেখা, ‘সন্ধ্যাসংগীত’-এর ‘গান সমাপন’ এবং ‘বিবিধ প্রসঙ্গ’-এ তাঁর ইঙ্গিত আছে। ‘প্রকৃতির প্রতিশোধ’, ‘ছবি ও গান’ তাঁর উদ্দেশে উৎসর্গীকৃত হয়েছে।

“গত বৎসরকার বসন্তের ফুল লইয়া এ বৎসরকার বসন্তে মালা গাঁথিলাম। যাঁহার নয়ন-কিরণে প্রতিদিন প্রভাতে এই ফুলগুলি একটি একটি করিয়া ফুটিয়া উঠিত, তাহারি চরণে ইহাদিগকে উৎসর্গ করিলাম।”

কাদম্বরীর মৃত্যুর পর তিনি উৎসর্গ করেন ‘শৈশব সংগীত’ ও ‘ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী’। ‘ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী’র উৎসর্গে তিনি লিখেছেন : ‘ভানুসিংহের কবিতাগুলি ছাপাইতে তুমি আমাকে অনেকবার অনুরোধ করিয়াছিলে। তখন সে অনুরোধ পালন করি নাই। আজ ছাপাইয়াছি, আজ তুমি আর দেখিতে পাইলে না।’ ‘শৈশব সংগীত’-এর উৎসর্গে লেখা আছে: ‘এ কবিতাগুলোও তোমাকে দিলাম। বহুকাল হইল, তোমার কাছে বসিয়াই লিখিতাম, তোমাকেই শুনাইতাম। সেইসমস্ত স্নেহের স্মৃতি ইহাদের মধ্যে বিরাজ করিতেছে। তাই, মনে হইতেছে তুমি যেখানেই থাক না কেন, এ লেখাগুলি তোমার চোখে পড়িবেই।’

কাদম্বরী দেবীকে উদ্দেশ করে রবীন্দ্রনাথের লেখা ‘তোমারেই করিয়াছি জীবনের ধ্রুবতারা’ গান প্রসঙ্গে প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় তাঁর বইয়ে উল্লেখ করেন, “...আমেদাবাদ ও বোম্বাই বাসকালে আরো কতকগুলি গান রচনা করেন, যেমন, ‘শুন নলিনী, খোলো গো আঁখি’, ‘আঁধার শাখা উজল করি’ ইত্যাদি। ‘তোমারেই করিয়াছি জীবনের ধ্রুবতারা’ গানটির একটি খসড়া এই সময়ে লেখেন বলিয়া জানা গিয়াছে। পরে সেই গানটিকে সংস্কার করিয়া ভগ্নহৃদয়ের উৎসর্গে যোজনা করেন এবং আরো কিছুকাল পরে অদল-বদল করিয়া ব্রাহ্মসংগীতে রূপান্তরিত করেন। এখন সেটি ব্রহ্মসংগীত বলিয়াই সকলে জানে। ...ভারতী, কার্তিক ১২৮৭ (অক্টোবর ১৮৮০) সংখ্যায় ‘ভগ্নহৃদয়’-এর প্রথম সর্গ ও কাব্যারম্ভে ‘উপহার’ নামে উৎসর্গ-গীতিটি প্রকাশিত হইয়াছিল। জীবনস্মৃতিতে কবি বলিয়াছেন যে এই কাব্যটি বিলাতে আরম্ভ করেন এবং কিছুটা ষ্টীমারে বসিয়া লেখেন। দেশে ফিরিবার প্রায় আটমাস পরে ‘ভগ্নহৃদয়’ কাব্যের ‘উপহার’-প্রযোজক-রূপে ভারতীতে প্রকাশিত হয়।”

‘ভগ্নহৃদয়’ গ্রন্থাকারে মুদ্রণকালে (বৈশাখ ১২৮৮ বঙ্গাব্দ) কবিকে নূতন উপহার লিখিয়া দিতে হয়। ভারতীতে প্রকাশিত উপহারটি এরূপ—

 

রাগিণী। ছায়ানট

তোমারেই করিয়াছি জীবনের ধ্রুবতারা।

এ সমুদ্রে আর কভু হবো নাকো পথহারা।

যেথা আমি যাই নাকো তুমি প্রকাশিত থাকো

আকুল এ আঁখি ‘পরে ঢাল গো আলোকধারা।

ও মু’খানি সদা মনে জাগিতেছে সঙ্গোপনে

আঁধার হৃদয়মাঝে দেবীর প্রতিমা-পারা।

কখনো বিপথে যদি ভ্রমিতে চায় এ হৃদি

অমনি ও মুখ হেরি সরমে যে হয় সারা।

চরণে দিনু গো আনি’এ ভগ্নহৃদয়খানি

চরণ রঞ্জিবে তব এ হৃদি-শোণিত-ধারা।

এ প্রসঙ্গে প্রশান্তকুমার পাল বলেন, “‘উপহার’ হিসেবে যে গানটি ব্যবহৃত হয়েছে, তার আদি রূপটি পাওয়া যায় মালতীপুঁথি-র ২৬/১৪খ পৃষ্ঠায়, এই পৃষ্ঠায় ভগ্নহৃদয়-এ ব্যবহৃত আরও কতকগুলি গানের খসড়া রয়েছে, যা থেকে মনে হয় উক্ত গানটিও এই কাব্যে ব্যবহারের জন্যই রচিত হয়েছিল; ...পেত্রার্কার কয়েকটি কবিতার অনুবাদ দেখে অনুমান করা যায় গানগুলি আমেদাবাদ বা বোম্বাইতে রচিত। অবশ্য পাণ্ডুলিপিতে প্রাপ্ত পাঠের সঙ্গে আরও দুটি ছত্র ‘চরণে দিনু গো আনি’ এ ভগ্নহৃদয়খানি/চরণ রঞ্জিবে তব-হৃদি-শোণিত এধারা’ যুক্ত করে ‘উপহার’টি রচিত হয়েছিল; আবার এই দুটি ছত্র বাদ দিয়ে এবং একটি ছত্র ও সামান্য কয়েকটি শব্দ পরিবর্তন করে তিন মাস পরে ব্রহ্মসংগীত হিসেবে একপঞ্চাশ সাম্বৎসরিক ব্রাহ্মসমাজের সায়ংকালীন উপাসনায় গীত হয়, সেখানে সুরটিও অবশ্য সামান্য আলাদা রাগিণী ‘আলাইয়া’, তাল ‘ঝাঁপতাল’। গ্রন্থাকারে প্রকাশের সময় গানটি পরিত্যক্ত হয়ে একটি দীর্ঘ কবিতা ‘উপহার’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আসলে কাব্যটির উপহার-কবিতা নির্বাচনে রবীন্দ্রনাথ যথেষ্ট দ্বিধার পরিচয় দিয়েছেন। এর আগে প্রকাশিত তাঁর দুটি কাব্যগ্রন্থে ‘কবি-কাহিনী’ ও ‘বনফুল’ কাউকে উৎসর্গ করা হয়নি এবং এগুলির মুদ্রণের সঙ্গে তাঁর বিশেষ কোনো সম্পর্ক ছিল না, সুতরাং অনুরূপ কোনো সমস্যার দ্বারা তিনি পীড়িত হননি। কিন্তু বর্তমান কাব্যটির ক্ষেত্রে সমস্যাটিকে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। প্রথমে তিনি বহু পূর্বে আশ্বিন ১২৮৪-র শেষ সপ্তাহে রচিত ‘ছেলেবেলা হোতে বালা, যত গাঁথিয়াছি মালা’ কবিতাটিই সম্ভবত নির্বাচন করেছিলেন, এর শীর্ষনাম ‘উপহার গীতি’ ও তার ডানপাশে ‘ভগ্নহৃদয়ের/উপরে’ মন্তব্য লেখা আছে। কবিতাটির শেষ ছত্রে ‘ভগ্নহৃদয়ের এই প্রীতি উপহার’ লেখা থাকায় নির্বাচনটি সহজ হয়েছিল। কিন্তু ‘ভারতী’তে প্রকাশের সময় উপহার-টিকে কিছুটা নৈর্ব্যত্তিক করে তুললেন গানটি ব্যবহার করে। তবুও ‘আঁধার হৃদয়মাঝে দেবীর প্রতিমা-পারা’ এই ষষ্ঠ ছত্রটিতে ব্যক্তিগত হৃদয়াবেগের যে স্পর্শটুকু থেকে গিয়েছিল, সেটুকুকেও মুছে দেওয়া হয়েছে উক্ত ব্রহ্মসংগীতে ছত্রটিকে ‘তিলেক অন্তর হলে না হেরি কূলকিনারা’-রূপে পরিবর্তিত করে।”

কাদম্বরী দেবী প্রসঙ্গে চিত্রা দেব তাঁর ‘ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহল’ বইয়ে জানাচ্ছেন : ‘কবির কথায় বারবার এসেছে কাদম্বরীর কথা, ‘খুব ভালবাসতুম তাঁকে। তিনিও আমায় খুব ভালবাসতেন। এই ভালবাসায় নতুন বউঠান বাঙালি মেয়েদের সঙ্গে আমার প্রাণের তার বেঁধে দিয়ে গেছেন।’ সারাজীবন ধরে চলে তাঁর অনুসন্ধান।

প্রশান্তকুমার পালের সূত্রে জানা যায়, ‘গীতালি’র শেষ কবিতা ‘এই তীর্থ-দেবতার ধরণীর মন্দির-প্রাঙ্গণে’ এলাহাবাদে রচিত হয় ৩ কার্তিক ১৩২১ বঙ্গাব্দ, [মঙ্গলবার, ২০ অক্টোবর ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দ] প্রভাতে। এইদিন রাত্রেই রচিত হয় ‘ছবি’ [‘তুমি কি কেবলই ছবি শুধু পটে লিখা’ কবিতা]। ‘বলাকা’র প্রথম পাঁচটি কবিতা ইতোপূর্বেই রচিত হলেও ‘বলাকা’র বিশিষ্ট তত্ত্ব ও ছন্দ এই কবিতাটিতেই প্রথম প্রকাশিত হলো।

ক্ষিতিমোহন সেন জানিয়েছেন, ‘তাঁরই পরলোকগতা পত্নীর ছবি’ দেখে এই কবিতার ভাব রবীন্দ্রনাথের মনে আসে। চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়েরও একই মত। কিন্তু প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ নাকি রবীন্দ্রনাথের কাছেই শুনেছিলেন যে ছবিটি কাদম্বরী দেবীর রবীন্দ্রজীবনীকার এই অভিমতের সমর্থক।

 

তুমি কি কেবলই ছবি, শুধু পটে লিখা?

ওই-যে সুদূর নীহারিকা

যারা করে আছে ভিড়

 আকাশের নীড়,

ওই যারা দিনরাত্রি

আলো-হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী

 গ্রহ তারা রবি,

তুমি কি তাদের মতো সত্য নও?

হায় ছবি, তুমি শুধু ছবি?

....... ....

তোমার চিকন

চিকুরের ছায়াখানি বিশ্ব হতে যদি মিলাইত

তবে

একদিন কবে

চঞ্চল পবনে লীলায়িত

মর্মর-মুখর ছায়া মাধবী-বনের

হত স্বপনের।

........ ....

নয়নসম্মুখে তুমি নাই,

নয়নের মাঝখানে নিয়েছ যে ঠাঁই;

আজি তাই

শ্যামলে শ্যামল তুমি, নীলিমায় নীল।

আমার নিখিল

তোমাতে পেয়েছে তার অন্তরের মিল।

নাহি জানি, কেহ নাহি জানে,

তব সুর বাজে মোর গানে;

কবির অন্তরে তুমি কবি,

নও ছবি, নও ছবি, নও শুধু ছবি।

তোমারে পেয়েছি কোন প্রাতে।

তার পরে হারায়েছি রাতে।

তার পরে অন্ধকারে অগোচরে তোমারেই লভি।

নও ছবি, নও তুমি ছবি॥

....... ....

(চলবে)

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. কী হয়েছে অভিনেত্রী দীপিকার?
  2. আসছে এ পি জে আবদুল কালামের বায়োপিক, নায়ক ধানুশ
  3. অক্ষয়ের মামলা, সুদসহ টাকা ফেরত দিয়ে ‘হেরা ফেরি ৩’ ছড়ালেন পরেশ রাওয়াল
  4. শুধু অভিনেতা নন, পেশাদার পাইলটও ছিলেন মুকুল দেব
  5. বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই ঘরবন্দি ছিলেন মুকুল দেব
  6. পরেশ রাওয়ালের বিরুদ্ধে ২৫ কোটির মামলা ঠুকলেন অক্ষয় কুমার
সর্বাধিক পঠিত

কী হয়েছে অভিনেত্রী দীপিকার?

আসছে এ পি জে আবদুল কালামের বায়োপিক, নায়ক ধানুশ

অক্ষয়ের মামলা, সুদসহ টাকা ফেরত দিয়ে ‘হেরা ফেরি ৩’ ছড়ালেন পরেশ রাওয়াল

শুধু অভিনেতা নন, পেশাদার পাইলটও ছিলেন মুকুল দেব

বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই ঘরবন্দি ছিলেন মুকুল দেব

ভিডিও
নাটক : প্রেম আমার
নাটক : প্রেম আমার
মিউজিক নাইট : পর্ব ১৯৫
মিউজিক নাইট : পর্ব ১৯৫
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ১০
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ১০
এই সময় : পর্ব ৩৮২৪
এই সময় : পর্ব ৩৮২৪
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ২৯৯
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ২৯৯
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৭৪
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৪৪
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৪৪
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, পর্ব : ১৩
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, পর্ব : ১৩
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬০
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬০
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৬
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৬

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x