সপ্তম শতকের ছোঁয়ায়

অচেনা পথের সন্ধানে বের হওয়ার মজাই আলাদা। যান্ত্রিক জীবনে আপনি যদি একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে চান, তবে এখনই বের হয়ে পড়ুন। আর ভ্রমণ আপনার সব ক্লান্তি দূর করে দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে পুরোনো দিনের স্থাপত্য আপনার মনকে আরো বিমোহিত করবে। সিলেট শহর থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টার রাস্তা বিয়ানীবাজারের সুপাতলা গ্রামে। এখানে অবস্থিত বাসুদেব মন্দির সপ্তম শতকে প্রতিষ্ঠিত। তবে আর দেরি কেন, এখনই বেরিয়ে পড়ুন।ইতিহাস
খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে শ্রীশ্রী বাসুদেব মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়। সুপাতলা গ্রামের দুর্গাদলই নামে তৎকালীন জয়ন্তীয়া রাজ্যের একজন রাজকর্মচারীর বাড়িতে একটি পুকুর খননের সময় বাসুদেব মূর্তির সন্ধান মেলে। এ ছাড়া একটি দুর্গামূর্তিও পাওয়া যায়। এরপর ওই রাজকর্মচারী বিজয় পাঠক নামের একজন সাধকের কাছে এই মূর্তির পূজার ভার দেন। তখন থেকেই সুপাতলা গ্রামে ওই মূর্তির পূজা-অর্চনা চলে আসছে। এখানে মন্দিরের মধ্যে রয়েছে রথযাত্রা মন্দির, পুষ্প দোল মন্দির, ঝুলন মন্দির, স্নানযাত্রা মন্দির, শিবমন্দির আর বাসুদেবের মূল মন্দির। যা দেখবেন
মন্দিরের সামনে বেশ বড় পুকুর। পুকুরের টলমলে জলের মাঝে মন্দিরের ছায়া দেখতে পাবেন। মন্দিরের ফটকে লেখা শঙ্খচক্র গদা পদ্মধারী চতুর্ভুজ ত্রিবিক্রম বিষ্ণু মন্দির। খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দী হতে এই দেবতা পূজিত। অসাধারণ কারুকাজ বিদ্যমান মন্দিরটিতে। মন্দিরটি সংস্কারবিহীন অবস্থায় তবুও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বাসুদেব মন্দিরটি। মন্দিরের ভেতরে ঢুকে দেখাতে পাবেন সাতটি মন্দিরের। মূল মন্দিরের ভগ্নদশার জন্য বাসুদেবের মূর্তি নতুন মন্দিরে এনে রাখা হয়েছে। বাসুদেবের দোল মন্দিরের বিভিন্ন স্থানে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। দেয়ালে বটগাছ, শেওলা ও পরগাছা জন্মেছে। এর পরও দেখতে ভারি সুন্দর দেখায়। মূল মন্দিরে দেখা পাবেন কষ্টিপাথরের বাসুদেব মূর্তির। সেই সপ্তম শতক হতে এই কষ্টিপাথরের বাসুদেব মূর্তি পূজিত হয়ে আসছে।যাবেন কীভাবে
ঢাকা-বিয়ানীবাজার রুটে শ্যামলী, রূপসী বাংলা, এনা ইত্যাদি বাস সার্ভিস চলাচল করে। ভাড়া ৫০০ টাকার মধ্যেই। তা ছাড়া ট্রেনে করে সিলেট এসে পরে গাড়ি নিয়ে সরাসরি চলে আসতে পারবেন বিয়ানীবাজারের সুপাতলা গ্রামে।