Skip to main content
NTV Online

ভ্রমণ

ভ্রমণ
  • অ ফ A
  • ট্রাভেলগ
  • কোথায়, কীভাবে
  • দর্শনীয় স্থান
  • টিপস
  • অন্যান্য
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • ভ্রমণ
  • কোথায়, কীভাবে
ছবি

মি. অ্যান্ড মিসেস মেসি

নিউইয়র্কে পারসা ইভানা

প্রকৃতির কোলে কৌশানী মুখার্জি

মিষ্টি হাসিতে সাবিলা নূর

মায়াবী চোখে কেয়া পায়েল

প্যারিসে রোমান্টিক মুডে মেহজাবীন-আদনান

দেশে দেশে ঈদুল আজহা উদযাপন

‘কনকা সেরা পরিবার’ সিজন- ৩ চ্যাম্পিয়ন ঢাকার শাহিদিন-ফারহানা পরিবার

কোহলির স্বপ্নজয়ে সারথি আনুশকা!

প্রকৃতিপ্রেমী বুবলী

ভিডিও
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৮৭
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৮৭
টেলিফিল্ম : তোমাকেই ছুঁতে চাই
টেলিফিল্ম : তোমাকেই ছুঁতে চাই
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮২
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮২
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫৩
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫৩
জোনাকির আলো : পর্ব ১২৮
জোনাকির আলো : পর্ব ১২৮
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৫
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৫
গানের বাজার, পর্ব ২৩৭
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ১৭
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৫১
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৫১
যাযাবর পলাশ
২২:৫৫, ০৭ নভেম্বর ২০২১
আপডেট: ২৩:০৮, ০৭ নভেম্বর ২০২১
যাযাবর পলাশ
২২:৫৫, ০৭ নভেম্বর ২০২১
আপডেট: ২৩:০৮, ০৭ নভেম্বর ২০২১
আরও খবর
মনের মধ্যে থাইক্ষ্যং পাড়া
মৃত্যুপুরী থেকে চোখে সেঁটে থাকা ডাবল ফলস
নামেই বুড়া, রূপে জোয়ান ঝর্ণা
সাপ-জোঁকের আতঙ্ক কাটিয়ে ‘বুড়ি’ ঝর্ণার কোলে
ঝর্ণা দেখতে গিয়ে শামিল হলাম নবান্ন উৎসবে
শেষ পর্ব

বীরের মতো দেখে, চোরের মতো ফেরা

যাযাবর পলাশ
২২:৫৫, ০৭ নভেম্বর ২০২১
আপডেট: ২৩:০৮, ০৭ নভেম্বর ২০২১
যাযাবর পলাশ
২২:৫৫, ০৭ নভেম্বর ২০২১
আপডেট: ২৩:০৮, ০৭ নভেম্বর ২০২১
বান্দরবানের থানচি উপজেলার বিশাল বাকত্লাই ঝর্ণায় আমরা। ছবি : সংগৃহীত

পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে সৌন্দর্য। আরও বেশি সৌন্দর্য, পাহাড়ের পেটে ঝরা ঝর্ণায়। যা চোখ ধাঁধানো, মন জুড়ানো। এ পথের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ঘুরে বেড়িয়েছি পুরো পাঁচ দিন। হেঁটেছি বান্দরবানের থানচি থেকে রুমা উপজেলার দুর্গম সব পাহাড়ে। দেখেছি, ছয়টি ঝর্ণার মায়াবী রূপ। পাহাড়ের চূড়ায় বসবাস করা পাহাড়িদের জীবনাচরণ দেখেছি, শুনেছি তাদের টিকে থাকার গল্প।

তবে পাহাড়ি এ পথ অনেক কঠিন। যদিও তারচেয়ে বেশি নান্দনিক। জীবনের ভয়ংকর ও রোমাঞ্চকর সময়গুলো নিয়ে এ লেখা। আজ থাকছে যার অষ্টম ও শেষ পর্ব। চলুন, পাহাড় অভিযানের পঞ্চম দিন মঙ্গলবার ভোর থেকে হেঁটে আসি।

আমাদের পাহাড় অভিযানের আজ পঞ্চম দিন। সেই শুক্রবার সন্ধ্যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বান্দরবানের গহিনে ঢুকেছি। এখন মঙ্গলবার, ভোর ৫টা। রুমা উপজেলার থাইক্ষ্যং পাড়া। ঘুম থেকে উঠেছি মাত্র।

বিছানা ছেড়ে গোছগাছ সেরে নিই। হাত-মুখ ধুয়ে সাড়ে ৫টার দিকে রওনা দিই আমি, স্থানীয় গাইড, রুবেল, শাকিল আর রনী ভাই। উদ্দেশ্য, লম্বা পথ হেঁটে বাকত্লাই ঝর্ণা দেখা। সেখান থেকে হাঁটা পথে বাকত্লাই পাড়া মাড়িয়ে থানচি হয়ে বাসে ঢাকায় ফেরা।

থাইক্ষ্যং পাড়া পাহাড়ের অনেক উঁচুতে অবস্থিত। আমরা পাহাড়ের নিচে নেমে চলেছি। এ পাড়ার স্থানীয় গাইড সঙ্গে রয়েছেন। আমাদের মূল গাইড বাকি তিন সহযাত্রীকে নিয়ে জাদিপাই ঝর্ণায় গেছেন গতকাল। তারাও এ পথে আসবেন আজ। তবে, দেরি হবে।

আমরা সাত অভিযাত্রী এখন দু-দলে বিভক্ত। আমাদের সঙ্গে থাকা গাইডের দাবি, আজ আমরা যে পথে হাঁটব; অধিকাংশ পথই উঁচু পাহাড় থেকে নিচে নামার। সামনে বিশাল কপিতাল পাহাড়ের ভেতর দিয়ে যেতে হবে। অজস্র পোকামাকড়ের কিচিরমিচির উপভোগ করে চলেছি, আমরা হাঁটছি।

মিনিট ৩০ হাটার পর আমরা ওয়াইজংশন নামক একটি স্থানে এসে পৌঁছেছি। এখান থেকে দুটি পথ দুদিকে বেঁকে গেছে। একটি বাকত্লাই পাড়ার দিকে, অপরটি জাদিপাই পাড়ার দিকে। আমাদের বাকি তিন সহযাত্রী জাদিপাই পাড়া হয়ে ঠিক এখানে আসবেন।

এ রাস্তার মোড়ে একটি ছোট ছাউনি আছে। ছাউনির মধ্যে দুটি কাঠের বেঞ্চ রাখা। যেখানে বসা যায়, বসলাম। মিনিট পাঁচেকের বিশ্রাম শেষে দু-একটি ছবি তুলি। এরপর আবার হাঁটা শুরু। হাঁটতে হাঁটতে তাকিয়ে দেখি, পায়ে জোঁক। মন নরম করে জোঁক ছাড়ালাম। কিন্তু, না মেরে জীবিত রাখলাম। ছেড়ে দিলাম পাহাড়ি পথে।

হাঁটতে হাঁটতে আমরা এখন কপিতাল পাহাড়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। আহ, চারিদিকে মেঘ আর মেঘ। পাহাড়টি অনেক উঁচু। কিন্তু, এখন ছোট দেখাচ্ছে। মনে হচ্ছে, মেঘের তলে পাহাড় ঢেকেছে। আসলে তা নয়, পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে মেঘ জমে পাহাড়কে ছোট করেছে! যত মেঘের মধ্যে ঢুকছি, পাহাড় ততই বড় হচ্ছে।

সকাল থেকে যে পথে হেঁটে চলেছি, সে পথ শিশিরে মোড়ানো। কপিতালের মধ্যে মেঘ-পাহাড়ের খেলা, দারুণ! হঠাৎ একটি নীল রঙের বড় পোকা ডাকতে ডাকতে মাথায় এসে বসল। ধরতে গেলাম, উড়ে গেল। অদ্ভুত সুন্দর ডাক। প্রথমে ভয় পেলেও মন ছুয়ে গেল দৃশ্যটি।

ঠিক সকাল ৯টা। একটি স্থানে গাইড বসতে বললেন। জানালেন, এখানে মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবে। হেঁটে হেঁটে ক্ষুধা লেগেছে। থাইক্ষ্যং পাড়া থেকে নাস্তা না করে বের হয়েছি। তবে, চারজনের জন্য আটটি সেদ্ধ ডিম নিয়েছি। পাহাড়ি কলা আর বিস্কুটও আছে ব্যাগে।

এ স্থানে হাত পা মেলে বসে পড়েছি। মুঠোফোনে নেটওয়ার্কও এলো। খেতে খেতে এখানে-সেখানে কথা বললাম। ১৫ মিনিট পর আবার সবুজে ঘেরা পাহাড়ি পথ মাড়ানো শুরু আমাদের। গাইডের দাবি, আমরা সেই থাইক্ষ্যং পাড়া থেকে এখন পর্যন্ত নিচে নেমেই চলেছি। অভিযানের শুরু থেকে আমরা পাহাড় টপকে একের পর এক উঁচু স্থানে উঠেছি, এখন নামছি।

সকাল পৌনে ১০টা। গাইডের দাবি, আশপাশেই বাকত্লাই ঝর্ণা। কিন্তু, বন-জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আমরা পথ হারিয়ে ফেলেছি। কোন দিকে যাব, পথ খুঁজে পাচ্ছি না। সামনে কোনো পাহাড়ি মানুষও পাচ্ছি না। এদিকে গাইডও পথ চিনছেন না। আমরা এখন একটি পাহাড়ের মধ্য চূড়ায় আছি। শুনশান নিরবতা। শুধু পোকামাকড়ের চেচামেচি শোনা যাচ্ছে।

পথ না পেয়ে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম, পাহাড় থেকে আরো নিচে নামব। বেশ অনেকটা নিচে নেমে দেখি, বাকত্লাই পাড়ার এক চাষি তাঁর পরিবারের চারজনকে নিয়ে জুমের ধান কাটছেন। দুজন কাটছেন, বাকি দুজন কাঁধে নিয়ে তা জুম ঘরে রাখছেন। পাহাড়ের চূড়ায় ফসল, এ যেন সৃষ্টিকর্তার অশেষ দান।

থাংকিং নামের ওই কৃষক যুবকের কাছে জানতে চাইলাম, বাকত্লাই ঝর্ণায় যাব কীভাবে? আপনার ধানের ক্ষতি না করে নিচে দিয়ে হেঁটে যেতে পারব? আমার প্রশ্ন শুনে ভাঙা ভাঙা বাংলায় কৃষক জানালেন, এ পথ দিয়ে যাওয়া যাবে না। তাঁকে এক হাজার টাকা দিলে তিনি রেখে আসবেন!

একটু পথ, কৃষক যুবক শুধু পথটা দেখিয়ে দেবেন; তার জন্যই এক হাজার টাকা দাবি করলেন! কৃষকের কথা শুনে বুঝেছি, আমরা ভুল পথে নিচে নেমেছি। নামার কথা ছিল অন্য পথে। আবার পাহাড়ের ওপর ওঠা শুরু করেছি। এভাবে আরও অনেক পথ হাঁটার পর দিক-নির্দেশক চিহ্ন ও চকলেট-চিপসের প্যাকেট পেলাম। বুঝতে পারলাম, সামনেই বাকত্লাই ঝর্ণা। এ ঝর্ণা উঁচু পাহাড় থেকে অনেক নিচে অবস্থিত। ভয়ংকর খাড়া পথ।

ভয়ংকর এ পথে নিচে নামতে ও উঠতে অসুবিধা হবে ভেবে, রনী ভাই জানিয়ে দিলেন; তিনি আর নিচে নামবেন না। ফলে, পাহাড়ি রাস্তার ধারে থাকা বিশ্রাম ঘরে থেকে গেলেন গাইড আর রনী ভাই। সেখানে আমাদের ব্যাগ রেখে আমি, শাকিল ও রুবেল ভাই চললাম ঝুঁকিপূর্ণ বাকত্লাই ঝর্ণা দেখতে।

এই ঝর্ণার আগেও আমরা আরো পাঁচটি ঝর্ণা দেখেছি। প্রত্যেকটি ঝর্ণায় নামার পথ ছিল অনেক খাড়া। তবে, এ ঝর্ণার পথ আরো কঠিন। আগের দেখা লুং ফির ভা, তারপি, তারতে ও ডাবল ফলস ঝর্ণায় সব সময় ভ্রমণকারীরা যেতে পারেন না। কেউ গেলে চুরি করে যান। কারণ, ওই পথ অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ। নিরাপত্তার কারণে বাঙালিদের যাওয়ার অনুমতি নেই সেখানে। যদিও আমরা ভয়-ডরহীনভাবে ঘুরে বেড়িয়েছি পাহাড়ের পেটে-বুকে।

তবে, বাকত্লাই ঝর্ণা থানচির বাকত্লাই পাড়ার কাছাকাছি হওয়ায় এখানে অনেক ভ্রমণকারী যান। ফলে, সবার কথা মাথায় রেখে নিচে নামার ঝুঁকিপূর্ণ খাড়া পথে বাঁশ পুঁতে রাখা হয়েছে। যাতে, ভ্রমণকারীরা বাঁশ ধরে ধরে নামতে পারেন। তারপরও নিচে নামার সময় গা শিউরে উঠছে। ভয় লাগছে।

সকাল ১০টা ৪০ মিনিট, আমি, শাকিল ও রুবেল ভাই এ ঝুঁকিপূর্ণ পথ ধরে হাঁটছি। কোথাও কোথাও পথ এতটাই ঝুঁকিপূর্ণ যে, প্রচণ্ড আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে উঠছি। ছবি তোলা কিংবা ভিডিও করার কোনো সুযোগ নেই। একটু এদিক-সেদিক হলে গভীর খাদে পড়ে যেতে হবে। আর নিচে পড়লেই শেষ! এভাবে ঠিক ৩৫ মিনিট নিচে নামছি। সোয়া ১১টায় আমরা একেবারে ঝর্ণার নিচে গিয়ে দাঁড়াই।

ঝর্ণার সামনে দাঁড়িয়ে ভাবছিলাম, পাহাড়ি হাঁটা পথের দূরত্ব কিলোমিটারে নির্ধারিত হয় না। পাহাড়িরা এ দূরত্ব হিসাব করে ঘণ্টা ধরে ধরে। কারণ, উঁচু-নিচু পাহাড় টপকানো পথ কিলোমিটারে হিসাব করার সুযোগ নেই। এই যেমন, রনী ভাই পাহাড়ের ঠিক ওপরে আছেন; আমরা নিচে। সামান্য পথ। অথচ, এতটুকু পথের দূরত্ব ৩৫ মিনিটের। আমাদের মূল গাইড একবার বলছিলেন, পুরো পাহাড়ি অভিযানে আমরা অন্তত ৭০ কিলোমিটার পথ হাঁটব।

অনেক হাঁটাহাঁটির পর আমাদের মনে হয়েছে, এক কিলোমিটার পাহাড়ি পথ হাঁটতে যত কষ্ট হয়; সমতলে ১০ কিলোমিটার হাঁটলে সেই কষ্ট হবে। ১০ কিলোমিটারের কথা বাদ দিলাম। ধরে নিলাম, এক কিলোমিটার পাহাড়ি পথে হাঁটলে সমতলের পাঁচ কিলোমিটারের সমান কষ্ট হয়।

এখন যদি আমরা অন্তত ৬০ কিলোমিটার পাহাড়ি পথও হেঁটে থাকি, তাহলে সমতলের ৩০০ কিলোমিটার হেঁটেছি! অর্থাৎ, চাইলে ঢাকা থেকে হেঁটে হেঁটে নিজ গ্রাম সাতক্ষীরায় পৌঁছানো যাবে।

ঠিক যখন ঝর্ণার ওপরে দাঁড়িয়ে ছিলাম, তখন মন খারাপ হচ্ছিল। এ পথে আসতে অনেক কষ্ট সহ্য করেছি। পথ হারিয়েছি, আবার খুঁজেছি। কিন্তু, ওপর থেকে ঝর্ণাটি একেবারেই ছোট দেখা যাচ্ছিল। তখন ভাবছিলাম, এটুকু ঝর্ণা দেখতে এত কষ্ট কেন করলাম?

কিন্তু, নিচে এসে মনে হচ্ছে; এ ঝর্ণা ভয়ংকর সুন্দর ও উঁচু ঝর্ণা। পাহাড়ের একদম চূড়া থেকে নিচে ঝরছে এ ঝর্ণার ধারা। আহ, ঝর্ণার পানিতে মন ফুরফুরে না হওয়ার কোনো উপায় নেই। এটিই বাংলাদেশের দ্বিতীয় উচ্চতম ঝর্ণা বলে বিবেচিত।

এবার আর দেরি নয়, ঝর্ণার ঠিক মাঝখানে গিয়ে দাঁড়ালাম। ভয় করছিল সাপের। তবু, ঝর্ণায় কূপে একাই গোসল সারলাম। ঝর্ণা মাখলাম। রুবেল আর শাকিল ভাই এদিক-ওদিক দাঁড়াচ্ছেন, ছবি তুলছেন। ভিডিও করছেন। এভাবে মিনিট ৩০ আমরা ঝর্ণার নিচেই ছিলাম।

ঝর্ণার সঙ্গে খেলে আমরা আবার আগের পথে পাহাড়ে ওঠা শুরু করেছি। হঠাৎ দেখলাম, পাঁচজন পাহাড়ি তরুণ আর এক তরুণী ঝর্ণার নিচে নামছেন। আচমকা তরুণীর পা পিছলে গেল, তিনি পড়ে যাচ্ছিলেন! তাঁদের মধ্যে একজন তাঁকে ধরে ফেলেন। ইশ, পড়ে গেলেই ছিন্নভিন্ন হয়ে যেত শরীর! এভাবে আরও ৩০ মিনিট হেঁটে আমরা ঠিক ঝর্ণার ওপরে উঠলাম।

ঝর্ণা মেখে শরীরটা বেশ ঝরঝরে লাগছে। এবার রনী ভাই আর গাইডকে নিয়ে আমরা রওনা দিলাম বাকত্লাই পাড়ার উদ্দেশে। হাঁটতে হাঁটতে আমরা দুপুর দেড়টার দিকে বাকত্লাই পাড়ায় পৌঁছাই। আমাদের মূল গাইডের বাড়ি এই পাড়ায়। তাঁর ঘরে আমাদের কিছু জিনিসপত্র রাখা ছিল। কিন্তু আধা কেজি মিক্স বাদাম সেখানে পাইনি। এ নিয়ে সময়ক্ষেপণ করার ইচ্ছে করছে না। দ্রুত ঢাকা পৌঁছাতে পারলেই এখন খুশি। ছুটি শেষ, সকালেই অফিসে যোগ দিতে হবে।

গাইডের ঘরে থাকা জিনিসগুলো নিয়ে আমরা দুপুর ২টার আগেই বাকত্লাই পাড়া ছাড়ি। উদ্দেশ্য, থানচি বাজার। তবে থানচি যেতে হবে চুরি করে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে। কোনো বাহিনীর কেউ জিজ্ঞাসা করলে ধরা খেয়ে যাব। কাছে থাকা পাহাড়ি অভিযানের বহু ভিডিও ও ছবি খোয়াতে হবে, এমন চিন্তাভর করছে মাথায়। কারণ, আমাদের যে পথে যাওয়ার অনুমতি ছিল; সে পথে যাইনি। আমরা গিয়েছিলাম অফ রোডে, যে পথ নিষিদ্ধ।

পাহাড় অভিযানের পুরো পাঁচ দিন আমরা বীরের মতো যত পথে হেঁটেছি, সব পথই অবৈধ। যেখানে যাওয়ার অনুমতি নেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে। মোট পাঁচটি পাহাড়ি পাড়া মাড়িয়ে আমরা বান্দরবানের থানচি ও রুমার গহিনে থাকা ছয়টি ঝর্ণা দেখেছি। এ জন্য প্রচুর পথ হাঁটতে হয়েছে। বহু ছোটবড় পাহাড় অতিক্রম করতে হয়েছে।

এসব পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে যেমন সৌন্দর্য, তেমনি রয়েছে ভয়ংকর বিপদের শঙ্কাও। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে পড়লে ফেরত পাঠানো বা শাস্তির মুখোমুখি হওয়ার শঙ্কা ছিল। অপহরণকারীদের হাতেও পড়তে পারতাম।

এ পথে কেউ আপনার ক্ষতি করার চেষ্টা করলে আপনার কিছুই করার থাকবে না। জীবনটাও পাহাড়ে রেখে আসতে হতে পারে। হাঁটতে হাঁটতে অসুস্থ হয়ে পড়লে দেখার কেউ থাকবে না। কোনো হাসপাতাল নেই। আমরা অসুস্থ হয়েছিলাম। আল্লাহকে ডাকতে ডাকতে সময় কেটেছে আমাদের। ফলে, এ পথে অনুমতি ছাড়া কারোই যাওয়া উচিত হবে না বলে আমার মত।

বাকত্লাই পাড়া থেকে বের হয়ে আমি, শাকিল, রুবেল আর রনী ভাই ভয়ে ভয়ে হেঁটে চলেছি। একজন থেকে আরেকজনের হাঁটার দূরত্বও অনেক, যাতে দূর থেকে কেউ দেখে সন্দেহ না করে। বাকত্লাই পাড়ার কাছে পিচঢালা থানচি-লিক্রি সড়কের কাছে গিয়ে একটি টিনের ঘরে পেছনে আমরা লুকিয়ে পড়ি। সেখান থেকে থানচি বাজারে থাকা কয়েকজনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেন রুবেল ভাই। উদ্দেশ্য, সেখান থেকে যেন ভাড়ায়চালিত দুটি মোটরসাইকেল এখানে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু নেটওয়ার্কে বারবার সমস্যা হচ্ছিল। কথা একটু বলার পর আবার লাইন কেটে যাচ্ছিল। এদিকে সড়ক দিয়ে কিছুক্ষণ পর পর গাড়ি আসা-যাওয়া করছে। আমরা আতঙ্কে আছি, এই বুঝি কোনো গাড়ি থেমে আমাদের ধরতে এলো।

এই ভয় দূর করতে আমরা কিছুটা পেছনে এসে বাকত্লাই পাড়ার বাঁশের সাঁকোর কাছে এসে আড়ালে বসি। সেখান থেকে রুবেল ভাই কল করেন থানচির এক মোটরসাইকেল চালককে। তাঁকে দুটো মোটরসাইকেল পাঠানোর অনুরোধ করেন।

বেশ কিছুক্ষণ পর দুটো মোটরসাইকেল এলে আমরা তাতে উঠে পড়েছি। নতুন হওয়া আঁকাবাঁকা আর উঁচু-নিচু পাহাড়ি রাস্তা পেরিয়ে আমরা থানচি বাজারের দিকে। এভাবে ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় মোটরসাইকেলে চলার পর আমরা থানচি সদরে গিয়ে পৌঁছাই। সেখানে আবার আগের হোটেলে ব্যাগ রাখি। এরপর সাঙ্গুর শীতল পানিতে গোসল করি আমরা চারজন। গোসল শেষে ভরপেট খাই। খেয়ে শুনি থানচি থেকে বান্দরবান যাওয়ার সবশেষ বাস চলে গেছে। বিকেল ৫টার দিকে আমরা একটি জিপ গাড়িতে উঠে পড়ি। এটি বান্দরবানের আলীকদম হয়ে কক্সবাজারের চকরিয়া পর্যন্ত যাবে।

থানচি থেকে আলীকদমের সড়কটি বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচু সড়ক। এই সড়কে অপরূপ ডিম পাহাড় অবস্থিত। একের পর এক উঁচু পাহাড়ে উঠছি, আবার নামছি আমরা। পথে উঁচু একটি পাহাড়ে সেনাবাহিনীর একটি চেকপোস্টে আমাদের গাড়ি থামল। সেখানে আমরা জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি জমা দিয়ে খাতায় নাম লেখালাম। সামনে তাকিয়ে দেখি পাহাড় আর পাহাড়। পাহাড়ের রাজ্যে উঁচু সিংহাসনে দাঁড়িয়ে আমরা। কয়েকটি ছবি তুলে ও ভিডিও করে আবার গাড়িতে উঠলাম।

গাড়ি চলছিল মেঘের মধ্য দিয়ে। দূর থেকে কিছু দেখা যাচ্ছিল না। চালক আস্তে ধীরে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। কিছুক্ষণ পর অপূর্ব ডিম পাহাড়ের পাশ দিয়ে অতিক্রম করি। এরপর সন্ধ্যা নেমে আঁধার ঘনিয়ে আসে। একপর্যায়ে আলীকদম, লামা হয়ে চকরিয়া বাসস্ট্যান্ড চলে আসি। সেখানে আমাদের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন সহকর্মী শহীদুল ইসলাম বাবর ভাই। তাঁর মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নিয়ে যান চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতিতে অবস্থিত ফোর সিজন রেস্টুরেন্টে। সেখানে আমাদের চারজনকে আপ্যায়ন করান তিনি। এরপর সাতকানিয়ায় গিয়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত একটি বাসে উঠে পড়ি। বাসে ওঠার কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে যাই।

ভোরে ঢাকায় পৌঁছে সোজা চলে যাই কারওয়ান বাজারের অফিসে। সারাদিন অফিসের কাজ-কর্ম সেরে সন্ধ্যায় ফিরি বাসায়। এত বড় ট্রেকিং শেষে সবাই মোটামুটি বিশ্রাম নেওয়ার চিন্তা করছে। আমি চিন্তা করে রেখেছি, বিশ্রাম না নিয়ে টানা অফিস করে যাব। করেছিও তাই। যদিও আমার কোনো অসুবিধা হয়নি। আলহামদুলিল্লাহ।

থানচি-রুমার গহিনে

সংশ্লিষ্ট সংবাদ: থানচি-রুমার গহিনে

০৪ নভেম্বর ২০২১
মনের মধ্যে থাইক্ষ্যং পাড়া
২৮ অক্টোবর ২০২১
মৃত্যুপুরী থেকে চোখে সেঁটে থাকা ডাবল ফলস
২২ অক্টোবর ২০২১
নামেই বুড়া, রূপে জোয়ান ঝর্ণা
  • আরও

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. ৫০০ টাকায় শুরু করা কপিল শর্মা এখন শো প্রতি নেন ৫ কোটি
  2. ঝিমিয়ে পড়ল আমিরের ‘সিতারে জমিন পার’, আয় কমে কত?
  3. সিনেমার বাজেট ৯০ কোটি, তিন দিনে ৬০ কোটির ঘরে ‘সিতারে জমিন পার’
  4. বক্স অফিসে ঘুরে দাঁড়াল আমির খান, দ্বিতীয় দিনে বাজিমাত
  5. ফের বক্স অফিসে ব্যর্থ হচ্ছেন আমির খান?
  6. করণ জোহরের শো থেকে বাদ পড়লেন চার প্রতিযোগী
সর্বাধিক পঠিত

৫০০ টাকায় শুরু করা কপিল শর্মা এখন শো প্রতি নেন ৫ কোটি

ঝিমিয়ে পড়ল আমিরের ‘সিতারে জমিন পার’, আয় কমে কত?

সিনেমার বাজেট ৯০ কোটি, তিন দিনে ৬০ কোটির ঘরে ‘সিতারে জমিন পার’

বক্স অফিসে ঘুরে দাঁড়াল আমির খান, দ্বিতীয় দিনে বাজিমাত

ফের বক্স অফিসে ব্যর্থ হচ্ছেন আমির খান?

ভিডিও
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৮
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৬৩
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৬৩
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮২
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮২
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ১৭
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০২
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০২
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
গানের বাজার, পর্ব ২৩৭
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৫
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৫

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x