একটি ‘সৌম্য-সুন্দর’ ইনিংস

মুশফিক, মুমিনুল ও ইমরুলের ইনজুরিতে সেরা একাদশ গঠন নিয়েই শঙ্কা দেখা দিয়েছিল। শেষে নুরুল হাসান সোহান ও নাজমুল হোসেন শান্তকেও টেনে নেওয়া হয় মূল একাদশে। তবে ইমরুলের শূন্যস্থান নিয়ে শুরু থেকেই দোলাচলে ছিলেন নির্বাচকরা। কারণ, ইমরুলের জায়গায় প্রথম পছন্দ সৌম্য সরকার। আর অনেক দিন ধরেই নিজের ছায়া হয়ে রয়েছেন সৌম্য। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ব্যাট হাতে কিছুটা দৃঢ়তা দেখিয়েছিলেন বটে। ২৬ বলে ৩৯ রানের বেশ আত্মবিশ্বাসী একটি ইনিংস খেলেন তিনি। তবে টি-টোয়েন্টি বিচার করে টেস্ট দলে জায়গা পাওয়ার আশা করাটা বোকামি।
তামিম ভরসা রাখলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের ওপর। টস হেরে বাংলাদেশ দল যখন ব্যাটিংয়ে নামে, তামিম কী যেন একটা বোঝাচ্ছিলেন সৌম্যকে। চাপ নিও না, স্বাভাবিক খেলাটাই খেল—এটাই হয়তো বলছিলেন তামিম। চতুর্থ ওভারে তামিম ফিরলেও অগ্রজের কথাটা ভালোভাবেই মনে রেখেছিলেন সৌম্য। আজ দারুণ আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছে সৌম্যকে। উইকেটের চারপাশে দুর্দান্ত সব শট খেলেন এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। ইমরুলের অভাবটা কোনোভাবেই বুঝতে দেননি সৌম্য। তার চেয়ে বড় কথা, ৩৮ রানে তামিম ও মাহমুদউল্লাহকে হারিয়ে দল বিপর্যয়ের মুখে, সে সময় সাকিবকে নিয়ে ১২৭ রানের জুটি বেঁধে বেধে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি ফিরিয়েছেন সৌম্য।
আজ আক্ষেপ বলতে এতটুকুই যে, নিজেকে ফিরে পাওয়ার দিনে শতকটা পাওয়া হলো না তাঁর। ট্রেন্ট বোল্টের বলে শর্ট কাভারে কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ৮৬ রান করেন সৌম্য। ১০৪ বলের ইনিংসে ১১টি চার মারেন তিনি। ২০১৫ সালের জুলাইয়ে ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে পরপর দুই ম্যাচে (৮৮ ও ৯০ রান) দারুণ দুটি ইনিংস খেলে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন। ওয়ানডেতে এর পর আর কোনো ভালো ইনিংস খেলতে পারেননি। গত বছর সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে ছিলেন ফ্লপ। তাই ইংল্যান্ড সিরিজের দলে জায়গা হয়নি তাঁর। নিউজিল্যান্ডে সিরিজের প্রথম ওয়ানডের দলে সুযোগ পেয়ে আবারও হতাশ করেছিলেন সৌম্য। টি-টোয়েন্টিতেও একই চিত্র, গত বছর মার্চে ঘরের মাঠে এশিয়া কাপে ৪৮ রানের একটি ইনিংস খেলার পর টানা নয় ম্যাচে কোনো রান পাননি তিনি। তা ছাড়া বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের হয়েও চরম ব্যর্থতা দেখিয়েছেন।
তবে প্রতিভাবান এই ব্যাটসম্যানের ওপর কখনই ভরসা হারাননি কোচ হাথুরুসিংহে। রানখরা থাকলেও সৌম্যকে নিউজিল্যান্ড সফরের দলে রাখেন কোচ। আর শেষ টেস্টে দলের প্রয়োজনে কী দারুণভাবেই না আস্থার প্রতিদানটা দিলেন এই ব্যাটসম্যান!