Skip to main content
NTV Online

মত-দ্বিমত

মত-দ্বিমত
  • অ ফ A
  • প্রতিক্রিয়া
  • সমসাময়িক
  • বহির্বিশ্ব
  • ব্যঙ্গ রঙ্গে
  • ফিরে দেখা
  • স্মরণ
  • বিদেশি কলাম
  • নগর দর্পণ
  • অতিথি কলাম
  • খেলাধুলা
  • পাঠকের কলাম
  • বিবিধ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • মত-দ্বিমত
ছবি

লাল টুকটুকে মিম

একান্তে তাহসান-রোজা

মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর ৫ খাবার

মেট গালা ফ্যাশনে দ্যুতি ছড়ালেন কিয়ারা

গ্রীষ্মের ফুলে ভিন্নরূপে রাজধানীর প্রকৃতি

বিমান বাহিনীর অনুশীলন পর্যবেক্ষণে প্রধান উপদেষ্টা

বিমান বাহিনীর অনুশীলন পর্যবেক্ষণ প্রধান উপদেষ্টার

পুলিশ সপ্তাহ শুরু

স্টাইলিশ মিম

পোপের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে ড. ইউনূস

ভিডিও
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৩২
টেলিফিল্ম : রঙিন চশমা
টেলিফিল্ম : রঙিন চশমা
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, পর্ব : ১০
ফাউল জামাই : পর্ব ৯১
ফাউল জামাই : পর্ব ৯১
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
মিউজিক নাইট : পর্ব ১৯৫
মিউজিক নাইট : পর্ব ১৯৫
নাটক : প্রণয় ফাল্গুনে
নাটক : প্রণয় ফাল্গুনে
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৫৮
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৫৮
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ০৫
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ০৫
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:১৫, ২০ মে ২০১৬
আপডেট: ০৯:১৯, ২০ মে ২০১৬
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:১৫, ২০ মে ২০১৬
আপডেট: ০৯:১৯, ২০ মে ২০১৬
আরও খবর
সাদাসিধে কথা: রুখে দাঁড়াবে বাংলাদেশ

সাদাসিধে কথা

সর্বজিৎ কিংবা শ্যামল কান্তির দেশ

মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:১৫, ২০ মে ২০১৬
আপডেট: ০৯:১৯, ২০ মে ২০১৬
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:১৫, ২০ মে ২০১৬
আপডেট: ০৯:১৯, ২০ মে ২০১৬

এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হওয়ার দিনটি আসলে সারাদেশের জন্য একটি আনন্দের দিন, সারাদেশেই মিষ্টি খাবার ধুম পড়ে যায়। সরকার পক্ষ থেকে ছেলে-মেয়েদের পরীক্ষায় বেশি নম্বর দেওয়ার অলিখিত নিয়ম করে দেওয়ার পর আনন্দের পরিধিটি আরও অনেক বেড়েছে। এই আনন্দের দিনটিতেও আমি এক ধরনের আশঙ্কা অনুভব করি। কারণ আমি জানি যখন কারও না কারও পরীক্ষার ফল মনের মতো হবে না, তখন সেই কমবয়সী আবেগপ্রবণ ছেলে বা মেয়েটি যা কিছু একটা করে ফেলতে পারে। এবারের পরীক্ষার পর আমার আশঙ্কাটা আবার সত্যি প্রমাণিত হলো, খবরের কাগজে দেখতে পেলাম বরিশালে সর্বজিৎ ঘোষ হৃদয় নামে একটি কিশোর সাত তলা বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছে। খবরটি পড়ে আমার বুকটা ভেঙে গিয়েছিল।

কিন্তু এরপর যখন আরও কিছু খবর পেলাম তখন দুঃখের সঙ্গে সঙ্গে বুকের ভেতর অসহনীয় এক ধরনের ক্ষোভের জন্ম নিল। আমরা জানতে পেলাম, সর্বজিৎ জানতো সে হিন্দু ধর্ম পরীক্ষায় ফেল করেছিল। তাই সে আত্মহত্যা করেছিল। আসলে সে পরীক্ষায় ফেল করেনি। বরিশাল বোর্ডের কোনও এক ধরনের অব্যবস্থার জন্য হিন্দু ধর্ম পরীক্ষার ফল ঠিক করে প্রক্রিয়া করা হয়নি। শুধু সর্বজিৎ নয় সম্ভবত পাঁচ হাজার ছেলে-মেয়ের পরীক্ষার ফল ভুল এসেছে। ফল শুদ্ধ করার প্রক্রিয়া চলছে এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বী অসংখ্য ছেলে-মেয়ে এক ধরনের যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে।

যখন মন খারাপ হওয়ার ঘটনা ঘটে তখন কিভাবে কিভাবে জানি একসঙ্গে অনেকগুলো মন খারাপ করার ঘটনা ঘটে। একই সময়ে দ্বিতীয় মন খারাপ করা ঘটনাটি ঘটেছে নারায়ণগঞ্জে। স্কুলের  প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে আক্রমণ করে তাকে শুধু যে হেনস্থা করা হয়েছে তা নয়, তাকে কানে ধরে ওঠবোস করতে বাধ্য করা হয়েছে। অনলাইনে তার ভিডিও আছে, সেখানে একবার ‘ক্লিক’ করলেই সেটা দেখা সম্ভব হতো। কিন্তু আমার পক্ষে সেটা দেখা সম্ভব নয়। একজন শিক্ষক হয়ে আমি আরেকজন শিক্ষকের এত বড় অবমাননার দৃশ্য দেখতে পারব না। যারা দেখেছেন তাদের কাছে শুনেছি ‘জয়বাংলা’ স্লোগানের মাঝে এ কে এম সেলিম ওসমান নামে একজন সংসদ সদস্যের নেতৃত্বে তাকে এই অবিশ্বাস্য অপমানটি করা হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ সুপার বলেছেন কোনও ‘আইন ভঙ্গ’ হয়নি, তাই তার কিছু করার নেই। আজকে খবরে দেখলাম আইনমন্ত্রী বলেছেন, যারা কান ধরে ওঠবোস করিয়েছেন তাদের শাস্তি হবে—আমরা কার কথা বিশ্বাস করব?

যখন খবরটি আরেকটু প্রচারিত হয়েছে তখন আমরা জানতে পেরেছি স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার একটি অভিযোগ এনে তাকে আক্রমণ করা হয়েছে। এই ধরনের আক্রমণ করে মানুষকে মেরে ফেলা এখন আর খুব বিস্ময়ের ব্যাপার নয়। তাই প্রধান শিক্ষক যে প্রাণে বেঁচে আছেন সেটি নিয়েই আপাতত সান্ত্বনা পেতে হচ্ছে। ধর্ম অবমাননার কথাটি মাইকে ঘোষণা করে মানুষ জড়ো করা হয়েছে, সবচেয়ে বিস্ময়ের কথা হচ্ছে মসজিদের মোয়াজ্জিন মোটেও মাইকে এ ধরনের কথা ঘোষণা করতে চাননি, তার কথা না শুনেই মাইকে কোনও একজন তা প্রচার করে দিয়েছেন। প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত বলেছেন, তিনি মোটেও ধর্মকে অবমাননা করে কিছু বলেননি। তাকে কোনও একটি দুর্নীতি করতে বলা হয়েছিল। তিনি করতে রাজি হননি। সেটাই হচ্ছে তার অপরাধ।

একজন মানুষকে অপমান করার অধিকার কারও নেই, একটি সভ্য সমাজ কখনোই সাধারণ মানুষ দূরে থাকুক, একজন অপরাধীকেও এভাবে জনসমক্ষে অপমান করা যায় না। কিন্তু একজন সংসদ সদস্য কিছু মানুষকে নিয়ে একটা মিথ্যা অপবাদ দিয়ে একজন শিক্ষককে এত বড় অপমান করতে পারেন সেটি বিশ্বাস করা কঠিন। আমি নিজে একজন শিক্ষক, আমি জানি আমাদের দেশের সব শিক্ষকের কাছে মনে হয়েছে এটি তার নিজের অপমান। শ্যামল কান্তি ভক্তকে একা কান ধরে ওঠবোস করানো হয়নি, এদেশের সব শিক্ষককে এক সঙ্গে কানে ধরে ওঠবোস করানো হয়েছে। যে দেশে একজন শিক্ষককে প্রকাশ্যে এভাবে শাস্তি দিয়ে অপমান করা হয়— সেই দেশ যদি অর্থ-বিত্ত সম্পদ ক্ষমতায় পৃথিবীর সর্বোচ্চ আসনেও উঠে যায় তারপরেও সেটি পৃথিবীতে পরিচিত হবে একটি অসভ্য বর্বরের দেশ হিসেবে। সারাদেশে তাই প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। অল্প কিছু অসভ্য বর্বর মানুষকে সারাদেশের সব মানুষের মুখে কালিমা লেপন করতে দেওয়া যাবে না। আমরা পৃথিবীতে সভ্য মানুষ হিসেবে পরিচিত হতে চাই।

একজন শিক্ষককে ধর্মের অবমাননার দোহাই দিয়ে শাস্তি দেওয়ার উদাহরণ মোটেও নতুন নয়। মাত্র কিছুদিন আগে বাগেরহাটে কৃষ্ণপদ মাহালি এবং অশোক কুমার ঘোষাল নামে দুজন শিক্ষককে হুবহু এই একই অপরাধে ছয় মাসের জেল দেওয়া হয়েছে। তনু হত্যার বিচার দিনের পর দিন আটকে থাকে কিন্তু ধর্ম অবমাননার শাস্তি দেওয়া হয় তাত্ক্ষণিকভাবে মোবাইল কোর্টে। কী তাদের অপরাধ, কিভাবে একই স্কুলের একজন শিক্ষক এবং সেই একই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে এই শাস্তি পেতে হলো আমরা কিছুই জানি না। এই দেশের কোন আইনে কেমন করে একজন মানুষের সঠিক বিচার না করে ছয় মাসের জেল দিয়ে দেওয়া যায় আমার মোটা মস্তিষ্কে সেটা বোঝাও সম্ভব নয়। শুধু এটুকু জানি এখন ‘ধর্ম অবমাননার’ কথা বলে যেকোনও মানুষকে চরম বিপদে ফেলে দেওয়া যায়। সেই মানুষটি যদি হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয় তাহলে কাজটি আরও সহজ। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা ‘ধর্ম অবমাননা’ এবং ‘মানুষের মনে আঘাত’ দেওয়া নামে দুটি বহু পুরাতন বিষয়কে একেবারে নতুন মোড়কে সবার সামনে হাজির করবে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, সরকার এখন হেফাজতে ইসলাম থেকে কোনও অংশে পিছিয়ে থাকতে রাজি নয়।

ধর্ম অবমাননার কথা বলে শুধু রাষ্ট্রীয় শাস্তি পেয়েও একজন মানুষের মুক্তি নেই। টাঙ্গাইলের নিখিল জোয়ারদার নামে একজন দর্জি এরকমভাবে ধর্ম অবমাননার জন্যে ছয় মাসের জেল খেটে বের হয়ে আসার পর তাকে একদিন চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে ফেলা হলো। সেই হতভাগ্য মানুষটি বারবার বলেছেন, তিনি মোটেও ধর্ম নিয়ে কোনও কটূক্তি করেননি। বাগেরহাটের যে দুজন শিক্ষক এখন জেল খাটছেন, জেল থেকে বের হওয়ার পর তাদের দুজনকেও কি নিখিল জোয়ারদারের মতো চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করার একটা লাইসেন্স দিয়ে দেওয়া হলো না?

স্কুলের ছাত্র তাদের শিক্ষকের নামে বাসায় এসে অভিযোগ করলে অভিভাবকেরা দল বেঁধে স্কুলে চড়াও হয়ে একজন শিক্ষকের জীবন শেষ করে দিতে পারেন। অভিযোগটি প্রমাণ করার কোনও প্রয়োজন নেই, অভিযোগ থাকলেই যথেষ্ট। আমরা এখন কোন ধরনের সমাজ তৈরি করছি? এতদিন পাকিস্তানে এগুলো ঘটতে দেখেছি, আমাদের দেশে আমরা কি সেই পাকিস্তানি কালচার আমদানি করার চেষ্টা করছি? 

২.

সর্বজিৎ নামে যে কিশোরটি মনের দুঃখে আত্মহত্যা করেছে তার হিন্দুধর্ম পরীক্ষার ফল বিপর্যয় ঘটেছিল। বিষয়টি নিশ্চয়ই ইচ্ছাকৃত নয় কিন্তু এটা নিশ্চয়ই মিথ্যা নয় যে অন্য কোনও বিষয়ের পরীক্ষা হলে কেউ এত বড় অবহেলা করার সাহস পেতো না। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা যদি মনে করেন, তাদের আলাদাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্যে এটি একটি ষড়যন্ত্র, তাহলে কি তাদের দোষ দেওয়া যাবে? আমরা তো সবাই দেখেছি এই দেশে ভিন্ন ধর্মের মানুষ হলে নানা ধরনের পীড়ন সহ্য করতে হয়। এখন তারা দেখছে শুধু অবমাননা আর অবহেলা নয়, শুধু ভিন্ন ধর্মের মানুষ হওয়ার জন্যে তাদের প্রাণও দিতে হচ্ছে। এতে তারা কি হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়তে পারে না?  যজ্ঞেশ্বর দাস অধিকারী নামে একজন হিন্দু পুরোহিতকে কিছুদিন আগে হত্যা করা হয়েছে। বান্দরবানের একটি উপাসনালয়ের একজন বৌদ্ধ ভিক্ষুকে নির্মমভাবে খুন করা হয়েছে। এর আগে খ্রিষ্টধর্মে ধর্মান্তরিত একজন খুন হয়েছেন। শিয়া হোমিওপ্যাথ ডাক্তার খুন হয়েছেন। ধর্মান্ধ জঙ্গি গোষ্ঠী নির্বিচারে মানুষ হত্যা করে, কিন্তু যদি তুলনা করি তাহলে দেখি ভিন্ন ধর্মের খুন হয়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। দেশের দশ-শতাংশের মতো মানুষ সংখ্যায় লঘু কিন্তু খুন হওয়ার বেলায় তাদের সংখ্যা প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ। এর কারণটি কী?

কারণটি আমরা অনুমান করতে পারি। যারা খুন করে তাদেরও একটা হিসাব আছে। এই দেশে যেহেতু ভিন্ন ধর্মের মানুষকে এক ধরনের অবহেলা সহ্য করতে হয়,  তাই তাদের খুন করা সহজ। ধর্মের অবমাননা করার অভিযোগ কিন্তু জঙ্গিদের মুখ থেকে আসে না। এই অভিযোগ আসে তাদের আশপাশ থেকে। শিক্ষকের বেলায় ছাত্রদের অভিভাবকের কাছ থেকে। সর্বশেষ ঘটনার বেলায় শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগটিতে ধর্মের অবমাননার বিষয়টি ছিল না। কিন্তু সেই অভিযোগটির কথা বলে তাকে চূড়ান্ত অপমান করে দেওয়া হলো। কাজেই নারায়ণগঞ্জের ঘটনাটি শুধু একজন বিকৃত রুচির সংসদ সদস্যের তাণ্ডব ছিল না, একইসঙ্গে সেটি ছিল এই দেশের ভিন্ন ধর্মের মানুষের ওপর আক্রমণ।

আমাদের সবারই পরিচিত জন আছেন, যারা এই দেশের সংখ্যালঘু ধর্মের মানুষ। তাদের সঙ্গে এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলে দেখেছি, তারা সবাই দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেছেন, এই দেশে তারা এক ধরনের বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। শুধু যে বড় ধরনের বৈষম্য তা নয়, দৈনন্দিন জীবনে অসংখ্য ছোটখাটো বৈষম্য, অসংখ্য মন খারাপ করার ঘটনা। একটি দেশ কেমন চলছে সেটা বোঝার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে সেই দেশের সংখ্যালঘু মানুষদের জিজ্ঞেস করা, তারা কেমন আছেন। তারা যদি বলেন যে তারা ভালো আছেন, তাহলে বুঝতে হবে দেশটি ভালো চলছে। আমাদের দেশে সংখ্যালঘু মানুষেরা ভালো নেই। 

তাই আমরা যদি শুধু ধর্মান্ধ জঙ্গিদের মূলোত্পাটনের কথা বলি,  তাহলে হবে না। আমাদের একই সঙ্গে নিঃশব্দে যে সাম্প্রদায়িক মনোভাবের জন্ম হচ্ছে, সেটাকেও থামাতে হবে। আমার কেন জানি মনে হয়, ধর্মান্ধ জঙ্গিদের থেকেও বুঝি নিঃশব্দে জেগে ওঠা সাম্প্রদায়িক মনোভাবটুকু আরও অনেক বিপদের। এটার বিস্তৃতি অনেক বেশি হওয়া সম্ভব, এর গভীরতাও অনেক বেশি হওয়া সম্ভব। একটা সময় ছিল যখন রাজনৈতিক দল, সাংস্কৃতিক দলগুলো অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি গড়ে তোলার দায়িত্ব পালন করত। এখন রাজনৈতিক দলের এটি নিয়ে মাথাব্যথা নেই, তাদের প্রয়োজনও নেই, সাংস্কৃতিক দলগুলোও কেমন জানি চুপচাপ হয়ে যাচ্ছে। ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক দলগুলো কিন্তু চুপ করে নেই। তারা কাজ করে যাচ্ছে। উনিশ শ একাত্তরের অভূতপূর্ব বিজয়ের পর মাত্র চার বছরের ভেতর যদি পরাজিত শক্তি ছোবল মারার মতো শক্তি পেয়ে যায়, তাহলে এখন তাদের নিরুত্সাহিত হওয়ার কী কারণ আছে? একটা মাইকে যখন ঘোষণা করা হয় অমুক মানুষ ধর্মের অবমাননা করেছেন এত সহজে সবাই এটি কেন বিশ্বাস করে ফেলে? অভিভাবকেরা কেন এত সহজে দল বেঁধে একজন নিরপরাধ শিক্ষকের ওপর চড়াও হন? রামুর মতো জায়গায় কেন সাধারণ মানুষ মন্দির কিংবা উপাসনালয় পুড়িয়ে ফেলতে ছুটে আসেন? সাধারণ মানুষের ভেতর ধর্মের সেই শান্তির কথাটি কেমন করে সরিয়ে দিয়ে সেখানে একটা উগ্র অসহিষ্ণু ধর্ম জায়গা করে নিচ্ছে?

আমার মনে হয় আমাদের দেশটিকে যদি আমরা সত্যি সত্যি স্বপ্নের দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই তাহলে শুধু পদ্মা ব্রিজ, মেট্রো রেল, ডিজিটাল বাংলাদেশ দিয়ে হবে না। দেশের মানুষকে আবার তাদের সকল ধর্মের, সকল মানুষের জন্যে শ্রদ্ধাবোধ আর ভালোবাসার জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। সেটি একদিনে হবে না, কিন্তু তার জন্যে এখনই কাজ শুরু করতে হবে।

মাঝে মাঝে আমার মনে হয় আমি চিত্কার করে বলি, ‘বঙ্গবন্ধু, আপনি কোথায়? ষাট বছর আগে আপনি আওয়ামী মুসলিম লীগকে আওয়ামী লীগে রূপান্তরিত করেছিলেন যেন এই দেশের সব মানুষকে আপনি আপনার পাশে নিতে পারেন।

ষাট বছর পরেও কেন আমরা সবাই সমানভাবে এই দেশের সব মানুষকে পাশে নিতে পারি না? কেন তার চেষ্টাও করি না?

পুনশ্চ: এই লেখাটি শেষ করার পর জানতে পেরেছি, প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটি বাতিল করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষককে পুনর্বহাল করা হয়েছে। এই দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ।  আর আমরা এখনও অপেক্ষা করে আছি যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন তাদের একটি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখার জন্য।

লেখক : কথাসাহিত্যিক, শিক্ষক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট

মুহম্মদ জাফর ইকবাল

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. বিয়ে নয়, এবার ‘লিভ ইন’ করতে চান সামান্থা!
  2. হিরানি-আমির জুটি এবার বায়োপিকে
  3. আমিরের নতুন সিনেমা মুক্তির ৮ সপ্তাহ পর দেখা যাবে ইউটিউবে
  4. সমালোচনার তীরে বিদ্ধ, তবু ভিউতে চূড়ায় ‘জুয়েল থিফ’
  5. সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতে কেন ভয় পায় তারকারা?
  6. মঞ্চে উঠেই অজ্ঞান, হাসপাতালে ভর্তি বিশাল
সর্বাধিক পঠিত

বিয়ে নয়, এবার ‘লিভ ইন’ করতে চান সামান্থা!

হিরানি-আমির জুটি এবার বায়োপিকে

আমিরের নতুন সিনেমা মুক্তির ৮ সপ্তাহ পর দেখা যাবে ইউটিউবে

সমালোচনার তীরে বিদ্ধ, তবু ভিউতে চূড়ায় ‘জুয়েল থিফ’

সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতে কেন ভয় পায় তারকারা?

ভিডিও
এই সময় : পর্ব ৩৮১৬
এই সময় : পর্ব ৩৮১৬
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৩২
টেলিফিল্ম : রঙিন চশমা
টেলিফিল্ম : রঙিন চশমা
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫১৯
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫১৯
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৫৮
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৫৮
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ০৫
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ০৫
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৫
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৫
গানের বাজার, পর্ব ২৩২
গানের বাজার, পর্ব ২৩২
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ২৯৮
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ২৯৮
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৮৬৭
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৮৬৭

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x