Skip to main content
NTV Online

মত-দ্বিমত

মত-দ্বিমত
  • অ ফ A
  • প্রতিক্রিয়া
  • সমসাময়িক
  • বহির্বিশ্ব
  • ব্যঙ্গ রঙ্গে
  • ফিরে দেখা
  • স্মরণ
  • বিদেশি কলাম
  • নগর দর্পণ
  • অতিথি কলাম
  • খেলাধুলা
  • পাঠকের কলাম
  • বিবিধ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • মত-দ্বিমত
ছবি

লাল টুকটুকে মিম

একান্তে তাহসান-রোজা

মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর ৫ খাবার

মেট গালা ফ্যাশনে দ্যুতি ছড়ালেন কিয়ারা

গ্রীষ্মের ফুলে ভিন্নরূপে রাজধানীর প্রকৃতি

বিমান বাহিনীর অনুশীলন পর্যবেক্ষণে প্রধান উপদেষ্টা

বিমান বাহিনীর অনুশীলন পর্যবেক্ষণ প্রধান উপদেষ্টার

পুলিশ সপ্তাহ শুরু

স্টাইলিশ মিম

পোপের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে ড. ইউনূস

ভিডিও
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, পর্ব : ১১
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, পর্ব : ১১
আলোকপাত : পর্ব ৭৭৪
নাটক : প্রণয় ফাল্গুনে
নাটক : প্রণয় ফাল্গুনে
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫১৯
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫১৯
জোনাকির আলো : পর্ব ১২১
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৫৮
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৫৮
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
গানের বাজার, পর্ব ২৩২
গানের বাজার, পর্ব ২৩২
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:১৫, ০৬ মে ২০১৬
আপডেট: ১৫:৫৫, ০৬ মে ২০১৬
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:১৫, ০৬ মে ২০১৬
আপডেট: ১৫:৫৫, ০৬ মে ২০১৬
আরও খবর
সাদাসিধে কথা: বুকের ভেতর ঘৃণার আগুন

সাদাসিধে কথা

রুখে দাঁড়াবে বাংলাদেশ

মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:১৫, ০৬ মে ২০১৬
আপডেট: ১৫:৫৫, ০৬ মে ২০১৬
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:১৫, ০৬ মে ২০১৬
আপডেট: ১৫:৫৫, ০৬ মে ২০১৬

আজ (বুধবার) দুপুরবেলা আমি আমাদের সহকর্মীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরির সামনে বুকে কালো ব্যাজ লাগিয়ে বসেছিলাম। মাত্র কয়েক দিন আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আমাদের মতোই একজন প্রফেসর রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে কয়েকজন কমবয়সী তরুণ মোটরসাইকেলে এসে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। (আমি কী সহজেই না কথাটি লিখে ফেললাম। মানুষকে খুন করার এই প্রক্রিয়াটি কী ভয়ংকর একটি নিষ্ঠুরতা, অথচ কত দ্রুত আমরা এই নিষ্ঠুরতায় অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছি!) বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশন প্রফেসর সিদ্দিকীর এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিল, সেই ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির সামনে এসে বসে থেকেছি।

সেখানে বসে আমি ডানে-বাঁয়ে তাকিয়ে হঠাৎ করে আবিষ্কার করলাম, প্রফেসর সিদ্দিকীর মতো একজন মানুষকে যদি চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা যায়, তাহলে আমার ডানে-বাঁয়ে বসে থাকা যেকোনো শিক্ষককেও আসলে যেকোনো সময় হত্যা করে ফেলা সম্ভব। প্রফেসর রেজাউল করিম সিদ্দিকী সত্যিকারের একজন শিক্ষক। ছাত্রদের পড়ান, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকেন, সংগীতকে ভালোবাসেন, সেতার বাজাতে পারেন। নিজের গ্রামে স্কুল করে দিয়েছেন, গ্রামের মসজিদ-মাদ্রাসাকে টাকা-পয়সা দিয়ে সাহায্য করেন। ডেইলি স্টার পত্রিকায় তাঁর ছাত্রের তোলা একটা ছবি ছাপা হয়েছিল, সেই ছবিটি ছিল নিবেদিতপ্রাণ একজন শিক্ষকের পরিপূর্ণ প্রতিমূর্তি। এই মানুষটিকেই যদি হত্যা করা যায়, তাহলে দেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়েই তাঁর মতো অনেক শিক্ষক আছেন, তাঁরা সবাই নিশ্চয়ই এখন হত্যাকাণ্ডের টার্গেট।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেছেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক; স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও একই কথা বলেছেন। তাদের কথা সত্যি, আমরা যদি তাকাই তাহলে দেখতে পাই গাড়ি, বাস-ট্রেন চলছে, মানুষ চলাচল করছে, ছেলেমেয়েরা স্কুল-কলেজে যাচ্ছে, শিক্ষকেরা ক্লাস নিচ্ছেন, মানুষজন অফিস-আদালতে যাচ্ছেন, দেশের দোকানপাটে বেচাকেনা হচ্ছে, নাটক-থিয়েটার হচ্ছে, সত্যিই তো আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক না হলে দেশে এই সবকিছু কি এ রকম স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে? কিন্তু এর পাশাপাশি আরো একটি চিত্র আছে, সেটি কি সবাই জানে না।

প্রগতিশীল মানুষ, যাঁরা গল্প-কবিতা লেখেন, নাটক করেন, গান শোনেন, যাঁরা মুক্তবুদ্ধির চর্চা করেন, তাঁরা যে হঠাৎ করে এক ধরনের চাপা আতঙ্কে থাকছেন, প্রয়োজন না হলে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না, সেটি কি সবাই জানে? ২২ বছর আগে আমি দেশে ফিরে এসেছিলাম, আমি পুরো দেশটিতে চষে বেড়িয়েছি। গণিত অলিম্পিয়াড, সাহিত্য সম্মেলন, পুরস্কার বিতরণী, সায়েন্স ফেয়ার এমন কোনো অনুষ্ঠান নেই তাতে যোগ দেওয়ার জন্য আমি বাংলাদেশের এক কোনা থেকে আরেক কোনায় যাইনি। অথচ এখন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কক্ষ থেকে অন্য কক্ষে যাওয়ার সময়ও সশস্ত্র পুলিশ আমাকে চোখে চোখে রাখেন! আমাকে এভাবে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কিন্তু যদি দেশটি এমন হতো যে কাউকেই আলাদাভাবে নিরাপত্তা দিতে না হতো, তাহলে আমরা সবাই কি আরো অনেক বেশি খুশি হতাম না?

প্রফেসর রেজাউল সিদ্দিকীর মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন খাঁটি শিক্ষককে যারা ঠান্ডা মাথায় খুন করে ফেলতে পারে, তাদের সংখ্যা বাংলাদেশের মাটিতে কিছুতেই খুব বেশি হতে পারে না। ১০ বছরে একবার এ রকম একটি ঘটনা ঘটলে এবং তার সমাধান করতে না পারলে সেটা হয়তো মেনে নেওয়া যায়, কিন্তু যদি এক মাসে প্রায় আট ডজন একই রকম ঘটনা ঘটে... সেগুলোর যদি রহস্যভেদ না হয়, সেটা পৃথিবীর কেউ মেনে নেবে না। পুলিশ বাহিনী চাইলে অপরাধীকে ধরতে পারে না, সেটি বিশ্বাস হয় না। কেন জানি মনে হয়, কোথায় জানি আন্তরিকতার অভাব। যারা হত্যা করছে, রাষ্ট্রের কাছে তারা যেটুকু মনে হয় যাদেরকে হত্যা করা হচ্ছে, রাষ্ট্রের কাছে তারা বুঝি আরো বেশি অপরাধী! ধর্মের অবমাননা করা হলে কী রকম কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে, সেটি খুব কঠিন ভাষায় সরকার অনেকবার বলেছে। কিন্তু মতের মিল না হলেই চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে খুন করে ফেললে সেই খুনিকে কী শাস্তি দেওয়া হবে, সেই কথাটি কেন জানি কেউ জোর গলায় বলছেন না। কারণটি কী, কেউ কী আমাকে বুঝিয়ে দেবেন?

আমি ‘আন্তরিকতার অভাব’ কথাটি ব্যবহার করেছি, যতবার এ বিষয়ে লিখেছি আমি ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে এই কথাটা বলেছি। আমি যে একা এই কথা বলছি তা নয়, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরে বিশাল একটি প্রতিবেদন বের হয়েছে, যার শিরোনাম, ‘জামিন পাচ্ছে জঙ্গিরা’; যেখানে একবারে তথ্য প্রমাণ এবং সংখ্যা দিয়ে কীভাবে জঙ্গিদের ধরে ফেলার পরেও ছেড়ে দিওয়া হচ্ছে কিংবা অদক্ষতার কারণে বিচার হচ্ছে না, তার নিখুঁত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। সেই লেখাটি পড়লেই যে কেউ বুঝতে পারবেন পুরো ব্যাপারটিতে সত্যি সত্যি আন্তরিকতার অভাব আছে। বিশেষ করে আমাদের আশা ভঙ্গ হয় যখন দেখি এত হৃদয়বিদারক হত্যাকাণ্ডগুলোকে রাজনীতির বক্তব্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

আন্তরিকতা না থাকলে যে বিচার হয় না, আমাদের দেশে তার উদাহরণেরও কোনো অভাব নেই। সবচেয়ে জলজ্যান্ত উদাহরণ হচ্ছে তনু হত্যাকাণ্ড। আমাদের সংবাদপত্রের মেরুদণ্ডে জোর নেই বলে তারা তনু হত্যাকাণ্ডের বিষয়টা সামনে নিয়ে আসতে সাহস পায়নি, বিষয়টাকে দেশের মানুষের সামনে এনেছেন অনলাইনকর্মীরা। নতুন করে পোস্টমর্টেম হয়েছে, নতুন করে তদন্ত হয়েছে কিন্তু এখনো অপরাধী ধরা পড়েনি। কমবয়সী হাসিখুশি এই মেয়েটির বিচার যদি এই দেশের মানুষ করে যেতে না পারে, তাহলে এই অপরাধবোধ থেকে কারো মুক্তি নেই। কিন্তু পর পর এতগুলো হত্যাকাণ্ড ঘটে গেছে যে এখন কেউ যদি তনু হত্যাকাণ্ডের বিচারের কথা বলে সবাই নিশ্চয়ই অবাক হয়ে তার দিকে তাকাবে।

এই দেশে যে বিচারটুকু না করার পরিকল্পনা করা হয় সেটাকে ধীরে ধীরে ধামাচাপা দিতে হয়। তনু হত্যাকাণ্ডের বিষয়টা কি সেদিকেই এগোচ্ছে? কিন্তু আমরা কি সেই জাতি নই, যারা ৪০ বছর পার হলেও বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার কিংবা যুদ্ধাপরাধীর বিচার করিনি? কমবয়সী হাসিখুশি একটি প্রায় কিশোরী মেয়ের জীবনটি কি এখন আমাদের বিবেকের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে যায়নি? ক্যান্টনমেন্টে কী হয়েছিল, যেটি এই দেশের মানুষকে কিছুতেই জানানো যাবে না?

বিচার হয়নি এ রকম ঘটনার কথা মনে হলেই আমার সাগর-রুনির কথা মনে পড়ে। সত্যিই কি খুনিরা এতই কৌশলী ছিল যে রাষ্ট্রযন্ত্র তার পুরো শক্তি ব্যবহার করেও তাদের ধরতে পারেনি? সাগর-রুনির সঙ্গে সঙ্গে গণতন্ত্রী পার্টির প্রেসিডেন্ট নুরুল ইসলাম এবং তাঁর ছেলে তমোহর ইসলাম পুচির কথাও মনে পড়ে। এই দুজনের হত্যাকাণ্ডে সন্দেহভাজন কারা হতে পারে, সেটি সবাই জানে। তারপরও কখনো তদন্ত শেষ করে অপরাধীদের ধরা হয়নি। পরিবারের আপনজনরা বিচার না পাওয়ায় যন্ত্রণা থেকে বের হয়ে চলে যাওয়া মানুষ দুটোর জন্যে শোক করার অবসরটুকুও কখনো পায়নি। আমার মাঝেমধ্যেই ফুটফুটে কিশোর ত্বকীর কথাও মনে পড়ে। পৃথিবীটা কি এতই নিষ্ঠুর যে তার মতো একজনকে হত্যা করার পর খুনিরা সদর্পে ঘুরে বেড়াবে এবং তাদের স্পর্শ করা যাবে না?

আমি যখন খুব ছোট ছিলাম, ভালো করে কথা বলা পর্যন্ত শিখিনি তখন আমার বাবা আমাকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘প্রশ্ন’ কবিতাটি আবৃত্তি করতে শিখিয়েছিলেন। সেই কঠিন কবিতাটির একটি লাইনের অর্থও আমি বুঝতাম না, তোতা পাখির মতো আবৃত্তি করে যেতাম। কবিতায় একটি লাইন ছিল এ রকম, ‘আমি যে দেখেছি প্রতিকারহীন শক্তের অপরাধে/ বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে।’ সেই কথাটির অর্থ শৈশবে আমি বুঝিনি। এখন বুঝি। প্রতিকারহীন শক্তের অপরাধ কী ভয়ানক হতে পারে, সেটি এখন আমরা অনেকেই টের পেতে শুরু করেছি। যদি প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হতো, তাহলে আমার নিশ্চয়ই আজকে এ রকম একটা রুদ্ধশ্বাস অবস্থায় দিন কাটাতাম না।

মাঝখানে কিছুদিন বিরতি দিয়ে সাম্প্রতিক যে হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটতে শুরু করেছে, সেটা শুরু হয়েছিল জগন্নাথ ইউনিভার্সিটির ছাত্র নাজিমুদ্দিন সামাদকে দিয়ে। চাপাতির আঘাতে কাউকে খুন করে ফেলার জন্য কোনো কারণের দরকার হয় না, কিন্তু নাজিমের বেলায় খুনিরা মনে হয় একটা কারণ খুঁজে বের করেছিল। সে ছিল গণজাগরণ মঞ্চের একজন কর্মী, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি করার জন্য এর আগেও এই দেশে আগে অনেককে প্রাণ দিতে হয়েছে। নাজিম সিলেটের ছেলে, সিলেট শহরের গণজাগরণ মঞ্চে সে হাজির ছিল, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার ছেলেমেয়ের সঙ্গে আমিও অনেকবার সেখানে গিয়েছি, আমরা বেঁচে আছি সে বেঁচে নেই, যতবার বিষয়টা মনে পড়ে আমি একই সঙ্গে গভীর দুঃখ এবং তীব্র ক্ষোভ অনুভব করি।

সর্বশেষ হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে ঢাকার বাইরে টাঙ্গাইলে, যে মানুষটিকে হত্যা করা হয়েছে তার নাম নিখিল চন্দ্র জোয়ার্দার, পেশায় একজন দর্জি। হত্যা করার প্রক্রিয়া এক এবং অভিন্ন মোটরসাইকেলে এসে প্রকাশ্য দিনের বেলায় চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে লাশ ফেলে দেয়া। খবরের কাগজে দেখেছি তার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে, আমরা এক ধরনের কৌতূহল নিয়ে অপেক্ষা করছি সত্যি সত্যি খুনিদের ধরা সম্ভব হয় কি না, সেটি দেখার জন্য। এর মাঝে একজন হিন্দু পুরোহিতকে হত্যা করা হয়েছে এবং একজন কারারক্ষীকেও হত্যা করা হয়েছে।

যে দুটি হত্যা নিয়ে শুধু দেশে নয়, দেশের বাইরেও ঝড় বয়ে যাচ্ছে তার একজন হচ্ছে এলজিবিটি কর্মী জুলহাজ মান্নান, অন্যজন তাঁর বন্ধু একজন নাট্যকর্মী মাহবুব রাব্বী তনয়। অনুমান করছি জুলহাজ মান্নানকে প্রাণ দিতে হয়েছে এলজিবিটি কর্মী হওয়ার জন্য। আমি জানি না, সবাই জানে কি না যে ভিন্ন জীবন ধারার মানুষ এলজিবিটি কর্মী হিসেবে কাজ করে। পৃথিবীতে তার আনুমানিক সংখ্যা শতকরা ১০ ভাগ। যে অপরাধের জন্য জুলহাজ মান্নানকে প্রাণ দিতে হয়েছে, সেই অপরাধের অপরাধী সবাইকে শাস্তি দিতে হলে শুধু বাংলাদেশেই দেড় কোটি মানুষকে হত্যা করতে হবে।

নাট্যকর্মী মাহবুব রাব্বী তনয় নাট্য আন্দোলনের খুব জনপ্রিয় একজন কর্মী। সেগুনবাগিচার শিল্পকলা একাডেমিতে তাঁর বিশাল একটা ছবি নাট্যকর্মীরা টাঙিয়ে রেখেছেন। কৃত্রিম বিশাল গোঁফ লাগানো সেই ছবিটিতে তনয় এক ধরনের কৌতুক চোখে সবার দিকে তাকিয়ে আছেন। একজন মানুষ যখন শুধু ছবি হয়ে স্থিরদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে, তখন সেটি মেনে নিতে খুব কষ্ট হয়।

আমি এই লেখাটি লিখতে গিয়ে খুব কষ্ট অনুভব করছি। প্রায় দুই যুগ থেকে আমি নিয়মিতভাবে লিখে আসছি। যত দিন দেশের বাইরে ছিলাম, তত দিন দেশকে সমালোচনা করে একটি লাইনও লিখিনি। আমার মনে হতো, বিদেশের মাটিতে নিরাপদ জীবন কাটাকে কাটাতে দেশের সমালোচনা করার আমার কোনো অধিকার নেই। দেশে ফিরে এসে মনে হয়েছে এখন বুঝি দেশ, দেশের সমাজ, রাষ্ট্রকে নিয়ে আমার সমালোচনা করার অধিকার হয়েছে। এই সুদীর্ঘ সময়ে আমি কম লিখিনি। কিন্তু আজকে লিখতে গিয়ে আমি এক ধরনের গ্লানি অনুভব করছি।

পুরো লেখাটিতেই শুধু হত্যাকাণ্ডের কথা, শুধু হতাশার কথা, মন খারাপ করার কথা। যে ধর্মান্ধ জঙ্গিগোষ্ঠী এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে যাচ্ছে তারাও তো এটিই চায়। কিন্তু আমরা এর থেকে সহস্রগুণ বেশি দুঃসময় পার হয়ে এসেছি, কাজেই আমি নিশ্চিত আবার আমরা এই দুঃসময় পার করে যাব। বাংলাদেশের মানুষ আর যাই হোক, কখনোই ধর্মান্ধ জঙ্গি মানুষকে এই দেশের মাটিতে শিকড় গড়তে দেবে না। অবশ্যই এই দেশের সব মানুষ মিলে এই ধর্মান্ধ জঙ্গিগোষ্ঠীকে এ দেশের মাটি থেকে উৎখাত করবে, করবেই করবে।

আমি বেশির ভাগ সময়ই কমবয়সী ছেলেমেয়েদের জন্য লিখি। তাই শুনেছি পত্র-পত্রিকায় আমার এই কলামগুলোও তারা পড়ে ফেলে। আমার এই নিরানন্দ কলামটি পড়ে তারা মন খারাপ করে ফেললে আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারব না। তাই মন ভালো হতে পারে সে রকম কিছু একটা লিখে আমি এই কলামটা শেষ করতে চাই।

মন ভালো করার মতো কিছু কি ঘটেছে গত সপ্তাহে? অবশ্যই ঘটেছে, ১৪ বছরের কমবয়সী মেয়েরা টানা দ্বিতীয়বার ফুটবল খেলায় এএফসি চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ফাইনাল খেলায় এক বিলিয়ন মানুষের দেশ ভারতের টিমটাকে একটি নয়, দুটি নয়, চার-চারটি গোলে হারিয়ে দিয়েছে। ডেইলি স্টারের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে গতবারের চ্যাম্পিয়নদের কয়েকজনের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিন। হালকা-পাতলা ছিপছিপে সেই কিশোরীদের দেখে আমার মনে হয়েছিল, ফুঁ দিলে বাতাসে বুঝি তারা উড়ে যাবে। কিন্তু কী বিস্ময়কর তাদের প্রাণশক্তি। আমি তাদের দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম। আমাদের বড় মানুষেরা যেটি কখনো পারেনি, ১৪ বছরের কমবয়সী কিশোরীরা আমাদের দেশকে সেটি এনে দিয়েছে। একবার নয়, বারবার।

ধর্মান্ধরা জানে না, এই কিশোরীর দল হচ্ছে আমাদের সত্যিকার বাংলাদেশ। কার সাধ্যি আছে এই বাংলাদেশকে অবরুদ্ধ করে রাখার?

রুখে দাঁড়াবে আমাদের এই বাংলাদেশ।

লেখক : কথাসাহিত্যিক; অধ্যাপক, শাবিপ্রবি।

মুহম্মদ জাফর ইকবাল

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. বিয়ে নয়, এবার ‘লিভ ইন’ করতে চান সামান্থা!
  2. হিরানি-আমির জুটি এবার বায়োপিকে
  3. আমিরের নতুন সিনেমা মুক্তির ৮ সপ্তাহ পর দেখা যাবে ইউটিউবে
  4. সমালোচনার তীরে বিদ্ধ, তবু ভিউতে চূড়ায় ‘জুয়েল থিফ’
  5. সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতে কেন ভয় পায় তারকারা?
  6. মঞ্চে উঠেই অজ্ঞান, হাসপাতালে ভর্তি বিশাল
সর্বাধিক পঠিত

বিয়ে নয়, এবার ‘লিভ ইন’ করতে চান সামান্থা!

হিরানি-আমির জুটি এবার বায়োপিকে

আমিরের নতুন সিনেমা মুক্তির ৮ সপ্তাহ পর দেখা যাবে ইউটিউবে

সমালোচনার তীরে বিদ্ধ, তবু ভিউতে চূড়ায় ‘জুয়েল থিফ’

সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতে কেন ভয় পায় তারকারা?

ভিডিও
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৪৯
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৪৯
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
নাটক : প্রণয় ফাল্গুনে
নাটক : প্রণয় ফাল্গুনে
এই সময় : পর্ব ৩৮১৭
জোনাকির আলো : পর্ব ১২১
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
মিউজিক নাইট : পর্ব ১৯৫
মিউজিক নাইট : পর্ব ১৯৫
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
টেলিফিল্ম : রঙিন চশমা
টেলিফিল্ম : রঙিন চশমা
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫১৯
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫১৯

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x