সুপারম্যান কেন প্যান্টের বাইরে আন্ডারওয়্যার পরে?
এই বিষয়টি আমরা সবসময়ই দেখি, আমরা এতে অভ্যস্ত। নীলরঙা পোশাক পরিহিত সুপারম্যান পোশাকের বাইরে আন্ডারওয়্যার পরে পুরো দুনিয়া উড়ে বেড়াচ্ছে। শুধু সুপারম্যানই নয়- ব্যাটম্যান কিংবা আরো অনেক সুপারহিরোর আন্ডারওয়্যার তাদের পোশাকের বাইরে দৃশ্যমান! নেহাতই গল্পের ছলে, নাকি এর পেছনে কোনো নির্দিষ্ট কারণ রয়েছে? ইন্ডিয়া টুডের খবরে এ নিয়ে পাওয়া গেছে বিস্তারিত।
সুপারহিরোদের গল্পগুলো যে মূলত গ্রাফিক নভেল বা কমিকস থেকে এসেছে, তা সবাই জানে। ১৯৩০ সাল, তথা পুরো তিরিশের দশকে, গ্রাফিক নভেলের জনপ্রিয়তা দারুণভাবে বেড়ে যায়। এ সময় মুদ্রণ প্রযুক্তি বা ব্যবস্থা বিশেষ উন্নত ছিল না। এগুলোর দামও ছিল কম, জিনিসগুলো উপযোগী ছিল শিশুদের জন্য। সে কারণে এগুলোকে কোনো ‘সিরিয়াস আর্ট ফর্ম’ হিসেবে গণ্য করা হতো না। দাম কম বলে গ্রাফিক নভেলের প্রকাশকরা এতে বেশি রং ব্যবহার করতে পারতেন না, রঙের ব্যবহার সীমাবদ্ধ থাকত চার রঙের মধ্যে। যেমন সুপারম্যানের ক্ষেত্রে লাল, নীল, হলুদ আর কালো। ব্যাটম্যানের ক্ষেত্রে ছাইরং, নীল, হলুদ ও কালো। ওয়ান্ডার ওম্যানের ক্ষেত্রে লাল, নীল, হলুদ ও সাদা।
ঘুরেফিরে এই একই রঙের ব্যবহারের ক্ষেত্রে সামগ্রিক দৃশ্য একঘেয়ে পরিণত হওয়ার একটা সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছিল। তার উপরে, সুপারহিরোদের শরীরের নির্দিষ্ট অংশগুলোকে আলাদা আলাদা ফর্মে দেখানো ছিল একটি বিশেষ উদ্দেশ্য। এতে দুঃসাহসী, শক্তিশালী সুপারহিরোদের ঝলকানি প্রদর্শনের একটা বাড়তি সুযোগ থাকে। পেশিবহুল শরীরের মাপকাঠি যুতসইভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্যই, গ্রাফিক নভেল নির্মাতারা একটা বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করলেন। যে সুপারহিরোর যে রঙের কস্টিউম, তার থেকে ভিন্ন রঙের একটা আন্ডারওয়্যার তাদের পরিয়ে দিলেন!
সব সুপারহিরোই কিন্তু প্যান্টের বাইরে আন্ডারওয়্যার পরে না। যেমন বলা যায় স্পাইডারম্যান, আয়রন ম্যান কিংবা গ্রিন ল্যান্টার্নের কথা। তবে এদেরও কিন্তু কোমরের নিচদিকে লক্ষ করলে দেখা যাবে, আন্ডাওয়্যারের এক ধরনের লাইনিং বা বর্ডারের টান আছে সুক্ষ্মভাবে! উদ্দেশ্য কী, তা তো আগেই বলা হয়েছে।
সুপারম্যানের নতুন ছবিতে অবশ্য তাকে ‘আন্ডারওয়্যার-মুক্ত’ করা হয়েছে। তবে ক্ল্যাসিক মার্ভেল ভক্তরা নিশ্চয়ই বিষয়টি মানতে পারবে না। সত্যিই তো, প্যান্টের বাইরে আন্ডারওয়্যার না পরলে কী আর সুপারম্যান হওয়া যায়?