‘চলচ্চিত্রের দুরবস্থার জন্য তারকাশিল্পীরা দায়ী’
চলচ্চিত্রের দূরাবস্থার জন্য তারকা শিল্পীদের দায়ী করে গতকাল মঙ্গলবার বক্তব্য দেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি ও পরিচালক মুশফিকুর রহমান গুলজার। এদিন উত্তরার এক হোটেলে ‘কুরিয়ার’ নামের একটি ছবির মহরত হয়। সেখানে চলচ্চিত্রের বিভিন্ন দিক নিয়ে বক্তব্য দেন গুলজার।
গুলজার বলেন, ‘চলচ্চিত্রের আজ এই দুরবস্থার জন্য তারকাশিল্পীরা দায়ী। একটি ছবিতে যুক্ত করার সময় তারা পুরো টাকা নিয়ে নেন। তারপর শুরু হয় শিডিউল নিয়ে তালবাহানা। শুটিংয়ের সময় ঠিক থাকে না। সকাল ৯টায় শুটিং টাইম থাকলে, অনেকেই সেটে আসেন ১২টায়। এতে নির্মাতা ঠিক মতো ছবির মেকিং নিয়ে ভাবতে পারেন না।’
গুলজার আরো বলেন, ‘ধরুন আমি চিন্তা করেছি একটি সিক্যুয়েন্সে ৫০টি শট নেব। এখন শিল্পী দেরি করে এসেছে, একদিনের খরচ অনেক বেশি। এখন দেখা যাবে ৫০ শটের জায়গাতে আমাকে নিতে হচ্ছে ৩০টি শট। কারণ ২০টি শট নষ্ট করেছেন ওই তারকা শিল্পী। হাতে যে সময় আছে সেটার মধ্যেই তো শুটিং শেষ করতে হবে, তাই না?’
তারকারা সহযোগিতা করলে নির্মাণ ব্যয় কমবে দাবি করেন গুলজার। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি যদি তারকা শিল্পীরা আমাদের চলচ্চিত্রগুলোকে সহযোগিতা করেন, মন দিয়ে শুটিং করেন, সময় মতো সেটে আসেন- তা হলে একটি সিনেমা থেকে অন্তত ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় কমে যাবে। একজন নির্মাতা যেভাবে গল্পটা বলার চিন্তা করেছেন, সেভাবে ক্যামেরায় ধরতে পারবে।’
মহরতে পরিচালক মুশফিকুর রহমান গুলজার নিজের প্রথম প্রযোজিত ও পরিচালিত ‘সুখের ঘরে দুঃখের আগুন’ (১৯৯৭) ছবিটি নিয়েও স্মৃতিচারণা করেন। বলেন, ‘আমার এই ছবিতে নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন দুই নায়িকা, দিতি ও মৌসুমী। তারা সবাই তখন অনেক ব্যস্ত শিল্পী। ইলিয়াস কাঞ্চনের একচেটিয়া বাজার। আমি যখন ছবিটি শুরু করি তখন নায়িকা মৌসুমী গর্ভবতী হয়। যে কারণে আমরা ছবির শুটিং বন্ধ করতে বাধ্য হই। আবার যখন মৌসুমী সন্তান জন্ম দেয়, কাজ শুরু করে, তখন আমি সবার কাছে শিডিউল চাইলাম। সবাই কি যে আন্তরিকতা দিয়ে আমরা কাজটি শেষ করে দিল! আমি সারাজীবন তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। কেউ টাকা নিয়ে কোনো কথা বলেনি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত টানা কাজ করেছেন কাঞ্চন ভাই, দিতি, মৌসুমীরা। আমি মনে করি, সবার এই ভালোবাসাই চলচ্চিত্রের সুদিন দিয়েছিল।’
‘কুরিয়ার’ সিনেমায় অভিনয় করছেন তৌফিক আহমেদ, আরবি আক্তার শেখা, রাশেদ প্রহর, সারা জেবিন, দেলোয়ার প্রিন্স, রোমিও রানা প্রমুখ। ছবিটি পরিচালনা করছেন সিকদার সাফিন।