আদিলের দাপট ছিল রাজকীয় : দেলোয়ার জাহান ঝন্টু
‘আমার ৮০ ভাগ ছবিতে কাজ করেছে অদিল। প্রচণ্ড অভিনয়প্রেমী ছিল সে। কোনো চরিত্র না বুঝলে বারবার প্রশ্ন করত। সামুরাই তলোয়ার খুব ভালো চালাতে পারত আদিল। ছবিতে তার দাপট থাকত রাজকীয়। দর্শকও তাকে পছন্দ করত। চলচ্চিত্রের অনেক উন্নয়ন হলেও অদিলের মতো অভিনেতা তৈরি হয়নি।’ এভাবেই সদ্যপ্রয়াত অভিনেতা আদিলকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করছিলেন পরিচালক দেলোয়ার জাহান ঝন্টু।
পুরোনো দিনের কথা মনে করতে গিয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অমিত হাসান বলেন, ‘আদিল ভাইয়ের সঙ্গে আমার মাত্র দুটি কাজ করার সুযোগ হয়েছিল। শিক্ষিত লোক, আচরণ অনেক ভালো। আমাকে সব সময় ছোট ভাই বলে ডাকতেন। আমিও বড় ভাই বলে ডাকতাম। এত ভালো অভিনয় করতেন যে তাঁদের কাছে আমাদের অনেক কিছুই শেখার বিষয়।’
আদিলের জন্য সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন অমিত হাসান। তিনি জানান, আগামী ৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বাদ আসর আদিলের আত্মার শান্তি কামনায় মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। ‘শিল্পী সমিতিতে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে, সেখানে ভাইয়ের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হবে,’ বলেন তিনি।
একসময়ের জনপ্রিয় খল অভিনেতা আদিল নারায়ণগঞ্জের নিজ বাড়িতে গত শনিবার (৩ অক্টোবর) রাতে মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। তাঁর হৃৎপিণ্ডেও সমস্যা ছিল।
পারিবারিক নাম রেজাউল করিম আদিল। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি মঞ্চে অভিনয়ের পাশাপাশি পাকিস্তান আমলে টেলিভিশনের নাটকে অভিনয় করেছেন। ১৯৭২ সালে হাসমত পরিচালিত ‘এখানে আকাশ নীল’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পদার্পণ করেন। ‘নসিব’, ‘নীলিমা’ ও ‘উছিলা’ ছবিতে অভিনয় করে তিনি তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। পরে ‘রাজমহল’, ‘বারুদ’, ‘বন্দুক’, ‘বুলবুল-এ-বাগদাদ’, ‘ঈমান’, ‘চন্দ্রলেখা’, ‘মোকাবেলা’, ‘তাজ ও তলোয়ার’, ‘সওদাগর’, ‘নাগিনী কন্যা’, ‘তিন বাহাদুর’, ‘শাহী দরবার’, ‘নসিব’, ‘রাজিয়া সুলতানা’, ‘নেপালী মেয়ে’, ‘পাতাল বিজয়’, ‘অশান্তি’সহ অসংখ্য ছবিতে খল চরিত্রে অভিনয় করে আদিল খলনায়ক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। অভিনয়জীবনে তিনি তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ব্যবসাসফল ছবি ‘কোটি টাকার কাবিন’ ছিল চলচ্চিত্রে তাঁর অভিনীত শেষ ছবি।