অনলাইনে বিক্রি হবে ‘আমির’, ‘সালমান’, ‘শাহরুখ’?
কোরবানির ঈদের আগে এখন বিক্রির আশায় অনলাইন ‘কুইকারে’ তোলা হয়েছে ‘আমির’, ‘সালমান’, ‘শাহরুখ’দের! শুনে ভড়কে গেলেন নাকি? তাহলে আরো জেনে রাখুন, নাম এবং ওজন হিসেবে ধার্য হয়েছে তাঁদের দামও! যেমন ধরুন, ‘শাহরুখের’ ওজন ৮৮ কেজি, দাম ৩৮ হাজার টাকা। ৮৪ কেজি ওজনের ‘আমির’ মিলবে ৩৫ হাজার টাকায়। আবার ৭২ কেজির ‘সালমান’ বিকোবে ৩১ হাজার টাকায়। অবাক হওয়ার কিছু নেই। আসলে ভারতের কোরবানি ঈদের বাজারে এখন এসব সেলিব্রেটি নামধারী ‘সিক্স প্যাক’ খাসির বিক্রি শুরু হয়েছে অনলাইনের মাধ্যমে।
চলছে ক্রেতার মধ্যে দরকষাকষিও। কোরবানির ঈদের বাজারে জনপ্রিয় এসব সেলেবের নাম দিয়ে খাসি বিক্রির ব্যবসা করছেন ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের ধানবাদের দুই ব্যবসায়ী কাঞ্চন দে ও বাদল দত্ত। ধানবাদ কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের ওই দুই ছাত্র পড়াশোনা শেষ করে সরাসরি পশুপালন এবং পশু বিক্রির পেশায় নেমে পড়েন। ফলে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে তাঁদের পালিত খাসিগুলোকে খাইয়ে-দাইয়ে মোটাতাজা করেও ফেলেছেন তাঁরা। কিন্তু মামুলি একটা খাসি বিক্রি করলে তো আর প্রচারের আলো কেড়ে নেওয়া যায় না! কাজেই একেবারে বলিউডের সেলেবদের নাম রেখে তাঁদের পোষ্য খাসিগুলোকে এখন অনলাইনে বিক্রির আশায় ছেড়েছেন তাঁরা।
কয়েক বছর ধরে কোরবানির ঈদে পশু বিক্রি করে আসছেন কাঞ্চন ও বাদল। ধানবাদের হিরাপুরের বাসিন্দা এ দুই ব্যবসায়ী কোরবানির ঈদ উপলক্ষে এবারে শুধু ধানবাদের বাজারকেই বেছে নেননি, অনলাইনের মাধ্যমে সেলিব্রেটি নামধারী খাসিগুলোকে ছেড়ে দিয়েছেন মূলত বিশ্ববাজারে।
বুদ্ধিটা আসলে কাঞ্চন দের। তাঁর কথা, ‘এখন তো অনলাইন মার্কেটের যুগ। অনলাইনে আসবাবপত্র, খাবার-দাবার, ইলেকট্রনিক সামগ্রী থেকে কাঁচা সবজি—সবই বিকোচ্ছে। তাহলে আমরাও বা পিছিয়ে থাকি কেন? আর কোরবানির ঈদই তো পশু বিক্রির সেরা সময়। যে কারণে কোরবানির ঈদে ব্যবসায় মুনাফা ঘরে তুলতে অনলাইনের সাহায্য নিয়েছি আমরা।’
আপাতত অনলাইনে বিক্রির জন্য ‘আমির’, ‘সালমান’, ‘শাহরুখ’দেরই বেছে নিয়েছেন তাঁরা। তবে ওই তিন সুপারস্টারকে ছোট করার জন্য তাঁরা এ কাজ করেননি বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। কাঞ্চন বলেন, “আমরা ‘আমির’, ‘সালমান’, ‘শাহরুখ’-এর অন্ধ ভক্ত। শুধুই তাঁদের নামকে ব্যবহার করে ব্যবসায় মুনাফা ঘরে তুলতে চেয়েছি। অবশ্য ‘আমির’, ‘সালমান’, ‘শাহরুখে’র মাধ্যমে মুনাফা এখনো ঘরে না এলেও প্রচারের তুঙ্গে রয়েছেন তাঁরা। বাদল দত্ত জানিয়েছেন, অনলাইনে তিনটে খাসির একটাও বিক্রি না হলেও প্রচুর পরিমাণে ফোন পাচ্ছি আমরা। আর ফোনে ক্রেতাদের জানিয়ে দিচ্ছি, কোরবানির ঈদে খাসির প্রয়োজন হলে চলে আসুন আমাদের কাছে। ফলে আর কিছু না হোক, আমাদের ব্যবসার পরিধি তো বাড়ছে। সেটাই বা কম কিসের? তবে কোরবানির ঈদের এখনো বাকি রয়েছে বেশ কয়েক দিন। তার মধ্যে ‘আমির’, ‘সালমান’, ‘শাহরুখ’রা অনলাইনে বিক্রি হয়ে যাবে বলে আশাবাদী কাঞ্চন ও বাদল। জানালেন, এবারে তিনটে খাসি বিক্রি হলে আগামী বছর আরো বেশি খাসিকে নতুন নাম দিয়ে অনলাইনে তুলে দেবেন তাঁরা।