আর গাইবে না পিংক ফ্লয়েড
‘গেঁথো না দেয়ালে আর একটিও ইট’। সত্তর দশকের বেপরোয়া সময়ে এমনভাবেই সংকীর্ণ সমাজের সিস্টেমের বিরুদ্ধে গেয়ে উঠেছিল এক গানের দল। তারপর কয়েক দশক ধরে ‘অ্যানাদার ব্রিক ইন দ্য ওয়াল’-এর মতো আরো দারুণ সব গান উপহার দিয়েছে কালোত্তীর্ণ এই ক্লাসিক ব্রিটিশ প্রোগ্রেসিভ সাইকাডেলিক রক ব্যান্ড। সিড ব্যারেট, রজার ওয়াটার্স, নিক ম্যাসন, রিচার্ড রাইট; পরে ডেভিড গিলমোর-এই নিয়ে পিংক ফ্লয়েড। ১৯৬৫ থেকে ২০১৫, এই অর্ধশতাব্দী সময় ধরে এগিয়ে চলা ব্যান্ডটি অবশেষে তাদের সমাপ্তি ঘোষণা করেছে।
ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য এবং লিড ভোকালিস্ট ডেভিড গিলমোর ঘোষণা দিয়েছেন, আর কখনোই এক হয়ে গান করতে দেখা যাবে না পিংক ফ্লয়েডের সদস্যদের। এর মানে, ২০১৪ সালে রিলিজ পাওয়া ‘দি এন্ডলেস রিভার’ দিয়েই সমাপ্তি টানা হয়ে গেল পিংক ফ্লয়েডের।
এ নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন গিলমোর এভাবে-‘পিংক ফ্লয়েডে আমার ৪৮ বছর কেটেছে, রজারের (রজার ওয়াটার্স) সঙ্গে সময় কেটেছে। সে সময়টায় প্রায় পুরো অংশই আমাদের গানবাজনা নিয়ে কেটেছে, হাসি আর আনন্দের সঙ্গে কেটেছে। বাকি অংশটুকুকে আমি কখনোই এই সুন্দর সময়টায় প্রভাব ফেলতে দেব না। তবে আমাদের যতটুকু যাওয়ার গিয়েছি, আমাদের কাজ শেষ। এরপরেও যদি আমরা আবারও ওই সময়টায় ফেরার চেষ্টা করি বা কাজ করার চেষ্টা করি, তাহলে সেটা প্রতারণা হবে।
আমি জানি যে এমন অনেক মানুষ রয়েছেন, যাঁরা কিংবদন্তি পিংক ফ্লয়েডের আওয়াজ আবারও শুনতে চান, কিন্তু সেটা আমার কাজ নয়। আমার জন্য পিংক ফ্লয়েড কেবলই দুটো শব্দ, এমন একটা কাজ যা চারজন মানুষ একসঙ্গে করেছে। এটা শুধুই একটা পপ গ্রুপ। আমার আর এটা দরকার নেই। আমি আর ওখানে যেতে চাই না।’
পিংক ফ্লয়েড ভক্তদের জন্য খবরটি কষ্টের, তবে এটাও তো ঠিক যে অনেক লম্বা সময় ধরেই ঠিক ‘পিংক ফ্লয়েড’ ঠিক ‘আসল’ ছিল না। ১৯৮২ সালে রিচার্ড রাইটের দলত্যাগ, ১৯৮৫ সালে রজার ওয়াটার্সের দলত্যাগ- এগুলো দলে অনেক প্রভাব ফেলেছিল নেতিবাচকভাবে। এরপর রাইট ফিরলেও ঠিক আগের মতো পিংক ফ্লয়েডের সুরটা কখনোই যেন টের পাওয়া যায়নি। ২০০৮ সালে রাইটের মৃত্যুর পর সবাই তখনই পিংক ফ্লয়েডের সমাপ্তি হিসেবে করে ফেলেছিলেন। দলের আরেক প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সিড ব্যারেট মারা যান ২০০৬ সালে। দলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যের মধ্যে একমাত্র নিক ম্যাসনই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত থেকেছেন দলে।
২০১৪ সালের ৭ নভেম্বর মুক্তি পায় পিংক ফ্লয়েডের শেষ স্টুডিও অ্যালবাম ‘দি এন্ডলেস রিভার’। তাদের মোট ১৫টি অ্যালবামের (স্টুডিও অ্যালবাম) মধ্যে ‘দ্য পাইপার অ্যাট দ্য গেটস অব ডন (১৯৬৭), দ্য ডার্ক সাইড অব দ্য মুন (১৯৭৩), উইশ ইউ ওয়্যার হেয়ার (১৯৭৫), দ্য ওয়াল (১৯৭৯) দারুণ জনপ্রিয়।