মেলার দ্বাদশ দিনে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের সংখ্যা কম

Looks like you've blocked notifications!

অমর একুশে গ্রন্থমেলার আজ  দ্বাদশ  দিনে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের সংখ্যা কিছুটা কম ছিল। অন্যদিনের তুলনায় বিকাল ৪টার দিকে মেলাপ্রাঙ্গণ বেশ ফাঁকা ছিল। তবে সন্ধ্যার দিকে লোকসমাগম বেড়েছে। রাজধানীর বাইরে থেকেও অনেকে এসেছেন। কথা হয় কুষ্টিয়া থেকে আসা একজন পাঠকের সঙ্গে। তিনি জানান, তিনদিন মেলায় থাকবেন। প্রথম দুদিন পছন্দেন বইয়ের তালিকা করে বাজেট মিলিয়ে শেষ দিন কেনাকাটা করবেন। আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা পছন্দের বইয়ের তালিকা নিয়ে এসেছেন। তালিকা ধরে বই কিনছেন।

নতুন বই

মেলার এগারতম দিনে এসে বাংলা একাডেমিতে নতুন বই জমা পড়েছে ১৪৯টি। এ নিয়ে গত এগার দিনে নতুন বই জমা পড়েছে ১ হাজার ৬ শত ৮০টি। গল্প-উপন্যাস-কবিতা-প্রবন্ধ-অনুবাদ-শিশুসাহিত্য সব ধরনের বই আছে এ তালিকায়। বাংলা একাডেমির হিসাব অনুযায়ী, গত এগার দিন পর্যন্ত সাহিত্যের বিভাগ অনুযায়ী বই জমা পড়েছে গল্প ২৪১টি, উপন্যাস ২৪৫টি, প্রবন্ধ ৯০টি, কবিতা ৪৪৫টি, গবেষণা ২৬টি, ছড়া ৩৭টি, শিশুতোষ ৪৭টি, জীবনীগ্রন্থ ৪৮টি, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গ্রন্থ ৪৪টি, নাটক ১৪টি, বিজ্ঞানবিষয়ক বই ৩০টি, ভ্রমণকাহিনি ৩৩টি, ইতিহাসমূলক ৩০টি, রাজনীতিবিষয়ক ১৩টি, চিকিৎসাসংক্রান্ত ১২টি, রম্য ১৪টি, ধর্মীয় ৮টি, অনূদিত বই ৫টি, সায়েন্স ফিকশন/গোয়েন্দা ২৩টি এবং বাকিগুলো অন্যান্য।

আলোচনা পর্ব

প্রতিদিন বইমেলার মূলমঞ্চে বিকেল চারটার সময় শুরু হয় আলোচনা পর্ব। আজকের আলোচনার বিষয় ছিল: কবি-অনুবাদক মনিরউদ্দীন ইউসুফ : জন্মশতবর্ষ শ্রদ্ধাঞ্জলি। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হাসান হাফিজ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন শফিউল আলম, রেজাউদ্দিন স্টালিন এবং মোহাম্মদ আবদুল হাই। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ। এরপর শুরু হয় কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, আবৃত্তি ও সংগীত সন্ধ্যা। লেখক বলছি অমর একুশে গ্রন্থমেলার এবারের সংযোজন ‘লেখক বলছি’ মঞ্চে আজ উপস্থিত ছিলেন প্রাবন্ধিক গবেষক বেগম আকতার কামাল, কথাসাহিত্যিক মোহিত কামাল, কথাসাহিত্যিক হামিম কামাল, কবি আকতারুজ্জামান আজাদ ও কবি নাসরিন সিমি। এ মঞ্চে বিকেল ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত প্রতিদিন পাঁচজন করে লেখক উপস্থিত থাকেন। প্রত্যেকে ২০ মিনিট করে এই মেলায় প্রকাশিত বই নিয়ে কথা বলেন। সঞ্চালনায় থাকেন বাংলা একাডেমির কর্মকর্তারা।

অংশগ্রহণের পদ্ধতি

আগ্রহী লেখক বা বইয়ের প্রকাশক মেলার মূল তথ্যকেন্দ্রে এক কপি বই জমা দেবেন। বাংলা একাডেমির ভেতরে এই তথ্যকেন্দ্রে বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত বই জমা নেওয়া হয়। এর জন্য কোনো ফি লাগবে না। নির্বাচিত বইয়ের লেখকের সঙ্গে যোগাযোগ করে নির্ধারিত সময় জানিয়ে দেওয়া হবে। বাংলা একাডেমি থেকে মনোনীত বই বাছাই উপকমিটি এই বই বাছাই করবে। বইয়ের প্রকাশকাল হতে হবে মার্চ ২০১৮ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৯।

মোড়ক উন্মোচন

মেলার দ্বাদশ দিনে মোড়ক উন্মোচন মঞ্চে মোড়ক উন্মোচন করা হয় ২০টি বইয়ের। গত ১২দিনে প্রায় চার শতাধিক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয় বইমেলার এই মঞ্চে।

অংশগ্রহণের পদ্ধতি

আগ্রহী লেখক বা বইয়ের প্রকাশক মেলার মূল তথ্যকেন্দ্রে মোড়ক উন্মোচনের জন্য বই জমা দেবেন। এজন্য তাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি জমা দিতে হবে। বাংলা একাডেমির ভেতরে এই তথ্যকেন্দ্রে বিকেলে ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত বই জমা নেওয়া হয়।

লিটলম্যাগ চত্বর

‘অন্য ভাষার সাহিত্যপাঠ’ শীর্ষক একটি বিশেষ সংখ্যা মেলায় এনেছে শালুক। কবি ওবায়েদ আকাশ সম্পাদিত এই পত্রিকায় বিষয়ভিত্তিক আয়োজনের পাশাপাশি চারটি বিভাগে ভাগ করে প্রকাশিত হয়েছে বর্তমান সময়ের তিরাশি জন কবির তিনশ’ পাঁচটিরও অধিক মৌলিক কবিতা। পাশাপাশি আছে বিশ্বখ্যাত কবিদের বেশ কিছু অনূদিত কবিতা। ‘গল্পস্বরে ভিন্নতা’ বিভাগে প্রকাশিত হয়েছে বারো জন গল্পকারের বারোটি গল্প। তবে মূল আকর্ষণ লুকিয়ে আছে ‘অন্য ভাষার সাহিত্যপাঠ’ অংশে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কবি য়েটস্’, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘বিশ্বসাহিত্যে সবচেয়ে বিখ্যাত চরিত্র’, বেলাল চৌধুরীর ‘গ্যেটে: চিরসবুজ প্রাণের উৎসব’ আর শামসুজ্জামান খানের ‘লিওপোল্ড সেদার সেঙ্ঘর: তাঁর ভাবজগৎ’-সহ এমন আরো অনেক প্রবন্ধের সন্নিবেশ ঘটেছে। মোট আটান্নটি প্রবন্ধ সংযুক্ত হয়েছে। সংখ্যাটির দাম রাখা হয়েছে ৫০০ টাকা। পাওয়া যাচ্ছে লিটলম্যাগ কর্নারে শালুকের স্টলে। আগামীকাল বুধবার মেলার ১৩তম দিন। মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায়। চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।