চিড়িয়াখানায় জায়গা না থাকায় ১২ বেবুনকে হত্যা

জার্মানির নুরেমবার্গ শহরের একটি চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা ১২টি বেবুনকে মেরে ফেলেছে, যদিও এ নিয়ে তীব্র জনমত ও প্রতিবাদ হয়েছিল। চিড়িয়াখানার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বেবুনদের সংখ্যা অনেক বেড়ে যাওয়ায় ও চিড়িয়াখানায় তাদের রাখার মতো পর্যাপ্ত জায়গা না থাকার কারণেই এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
টিয়ারগার্টেন নুরেনবার্গ চিড়িয়াখানা প্রথম ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে বেবুন হত্যার এই পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিল। তারা জানিয়েছিল, কিছু প্রাণীকে অন্য জায়গায় সরানোর প্রস্তাব পরীক্ষা করা হয়েছিল, কিন্তু কোনোটিই সফল হয়নি।
এই পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করেছে প্রাণী অধিকার গোষ্ঠীগুলো। তারা চিড়িয়াখানার সামনে বিক্ষোভও করেছে। চিড়িয়াখানা গত সোমবার (২৮ জুলাই) ঘোষণা করেছিল, বেবুন হত্যার প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। মঙ্গলবার সকালে, চিড়িয়াখানা অনির্দিষ্ট ‘কার্যক্ষম কারণে’ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে।
গতকাল মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেলে পুলিশ জানায়, বেশ কয়েকজন কর্মী জোর করে চিড়িয়াখানার মাঠে প্রবেশ করে। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর কিছুক্ষণ পরেই চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ ১২টি বেবুন হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
প্রাণী অধিকার গোষ্ঠীগুলো জানিয়েছে, তারা এই ঘটনার বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করার পরিকল্পনা করছে।
চিড়িয়াখানায় গিনি বেবুনের সংখ্যা বেড়ে ৪৩ এ দাঁড়িয়েছিল। অথচ ২০০০ সালের শেষের দিকে এই প্রজাতির ২৫টি প্রাণী ও তাদের বাচ্চাদের জন্য একটি নির্দিষ্ট ঘর তৈরি করা হয়েছিল, যা বর্তমান সংখ্যার তুলনায় অনেক কম। ফলে বেবুনদের মধ্যে জায়গা নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনাও বাড়ছিল।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা অতীতে এই সমস্যা সমাধানের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিল। ২০১১ সাল থেকে ১৬টি বেবুন প্যারিস ও চীনের চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সেই চিড়িয়াখানাগুলোর নিজস্ব ধারণক্ষমতা পূরণ হয়ে গেছে। বেশ কয়েক বছর আগে জন্ম নিয়ন্ত্রণের একটি প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফল না পাওয়ায় সেটি বাতিল করা হয়।

বিভিন্ন কারণে ইউরোপীয় চিড়িয়াখানায় নিয়মিতভাবে প্রাণীদের হত্যা করা হয়। অতীতের কিছু ঘটনা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে; উদাহরণস্বরূপ, ২০১৪ সালে কোপেনহেগেন চিড়িয়াখানায় একটি সুস্থ দুই বছর বয়সী জিরাফকে হত্যা করা হয়েছিল। শিশুদের সামনে তার মৃতদেহ জবাই করে পরে সিংহদের খাওয়ানো হয়েছিল, যা বিশ্বজুড়ে সমালোচিত হয়।