‘মালয়েশিয়ায় নিব্রাসরা ব্রেনওয়াশ হয়নি’
ঢাকার গুলশানের হত্যাযজ্ঞের হামলাকারীদের দুজন মালেয়শিয়ায় ‘ব্রেনওয়াশ’ হয়নি- এমন কথা জানিয়েছেন দেশটির পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) তানশ্রি খালিদ আবু বকর। গত শুক্রবার (১ জুলাই) হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলাকারীদের অন্তত দুজন অস্ট্রেলিয়ার মনাস বিশ্ববিদ্যালয়ের মালয়েশিয়া ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী ছিল। এই সংবাদে নড়েচড়ে বসেছে মালয়েশিয়া সরকার, পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ।
আজ এক সংবাদ সম্মেলনে আইজিপি তানশ্রি খালিদ আবু বকর বলেন, সত্যিই এই তিন বাংলাদেশি তরুণ সেখানকার শিক্ষার্থী ছিল কি না, কিংবা শিক্ষার্থী হয়ে থাকলে গত তিন বছর সেখানে তাদের কর্মকাণ্ড কেমন ছিল- এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে মালয়েশিয়ান পুলিশ ও মোনাস বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
তবে, গুলশানে নিহত দুই হামলাকারী যে মোনাস বিশ্ববিদ্যালয় মালয়েশিয়া ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী ছিল তা নিশ্চিত করেছেন মালয়েশিয়া পুলিশের আইজিপি তানশ্রি খালিদ আবু বকর। তবে ওই দুইজনের নাম প্রকাশ করেননি তিনি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে খালিদ আবু বকর বলেন, ‘ঢাকার গুলশানের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের দুজন মোনাস বিশ্ববিদ্যালয়ের মালয়েশিয়া ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী ছিল। তবে আমরা এখনো নিশ্চিত নই যে ওই ঘটনায় তারা কীভাবে সম্পর্কিত ছিল। এমনকি তারা হামলাকারী নাকি ওই ঘটনার শিকার এই বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারও এখন অব্দি নিশ্চিত কিছু জানাতে পারেনি। আমরা এই বিষয়ে বাংলাদেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করব।’
মালয়েশিয়ান পুলিশ প্রধান আরো বলেছেন, ‘আমি আপাতত এটুকু নিশ্চিত করে বলতে পারি যে ওই দুজন এখানকার শিক্ষার্থী ছিল, তবে তারা হামলাকারী নাকি হামলার শিকার তা নিশ্চিত করতে পারছি না। তাই এই বিষয়ে এখনই কোনো উপসংহার টানা সম্ভব নয়। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়েছি এবং যদি তারা সত্যিই জড়িত থাকে (হামলাকারী হয়) তাহলে আমরা তদন্ত করে দেখব যে তারা এখানে নাকি অন্য কোথাও জঙ্গীবাদে দীক্ষা পেয়েছে।’
খালিদ আবু বকর মন্তব্য করেছেন,মালয়েশিয়ায় অবস্থানকালে ওই দু’জনে কর্মকাণ্ড কেমন ছিল তা খতিয়ে দেখা হবে। তবে তিনি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করেন যে মালয়েশিয়ায় অবস্থানকালে তাদের ‘ব্রেনওয়াশ’ তথা জঙ্গীবাদের দীক্ষা হয়নি।
এদিকে,মোনাস বিশ্ববিদ্যালয় মালয়েশিয়া ক্যাম্পাসের মুখপাত্র ডক্টর সুশিলা নায়ার জানিয়েছেন,ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে গুলশানের তিন হামলাকারী তাদের শিক্ষার্থী ছিল বলে জানতে পেরেছেন। তবে এই বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো নিশ্চিত তথ্য পান নি তারা। তবে বিষয়টি তারা অনুসন্ধান করছেন। এরই মধ্যে মালয়েশিয়া পুলিশের সঙ্গে তাদের প্রতিনিধিরা সাক্ষাত করেছে এবং এই বিষয়ে পুলিশকে সব রকম সহযোগিতা করছে।
উল্লেখ্য, গত ১ জুলাই রাতে গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারির ওই হামলার ঘটনায় ১৭ বিদেশি ও তিন বাংলাদেশি জিম্মিকে হত্যা করে হামলাকারীরা। এ ছাড়া পুলিশের দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকেও গুলি ও বোমা ছুড়ে হত্যা করা হয়।
পরে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে জিম্মি উদ্ধার অভিযানের সময় নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে নিহত হয় হামলাকারীরা। তাদের মধ্যে নিব্রাস ইসলাম ও মীর সামিহ মুবাশ্বের মোনাস বিশ্ববিদ্যালয় মালয়েশিয়া ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী ছিল বলে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে।