জাপানে এটিএমে ২ ঘণ্টায় দেড় বিলিয়ন ইয়েন চুরি
জাপানজুড়ে এটিএম বুথে ‘গণচুরি’ করে বিপর্যয় নামিয়েছে চোরের দল। দেশটির প্রায় এক হাজার ৪০০ বুথ থেকে কার্ড জালিয়াতি করে ১৪৪ কোটি ইয়েন বা প্রায় এক কোটি ৩০ লাখ ডলার হাতিয়ে নিয়েছে চোরেরা।
টোকিও এবং আরো ১৬টি পৃথক অঞ্চলে (প্রেফেকচার) প্রদেশে ছড়িয়ে থাকা প্রায় এক হাজার ৪০০ এটিএম বুথে গত ১৫ মে একযোগে এই চোরচক্র হানা দেয় বলে জাপানের স্থানীয় পত্রিকাগুলোর সংবাদের বরাতে জানিয়েছে রয়টার্স।
সংবাদ অনুযায়ী, অন্তত ১০০ জন চোরের একটি সংঘবদ্ধ দল এক হাজার ৪০০টি এটিএম মেশিনে প্রতিবারে এক লাখ ইয়েন করে তুলে নিয়েছে। এভাবে ১৪ হাজারটি লেনদেনের মাধ্যমে ১ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ইয়েন লোপাট করেছে তারা।
জাপানে জাল ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে মাত্র দুই ঘণ্টায় চোরের দল বিপুল এই অর্থ লোপাটের কাজটি সারে। ঘটনাটি গত ১৫ মে রাতে ঘটলেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এর তিনদিন পরে বিষয়টি পুলিশকে জানায় বলে আজ সোমবার জাপান টাইমসের এক খবরে বলা হয়েছে।
কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম বলছে, টোকিও ছাড়াও ওই ১৬ প্রেফেকচারের মধ্যে রয়েছে ওসাকা, ফুকুওয়াকা, কানাগাবা ও আইচির মতো এলাকা। ১৫ মে ছিল সরকারি ছুটির দিন রোববার। সেদিন ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টার মধ্যে এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে নেয় চোরচক্র। বুথ থেকে প্রতিবার ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া সর্বোচ্চ এক লাখ ইয়েনও উত্তোলন করা হয়। জালিয়াতির শিকার একটি ব্যাংকের পক্ষ থেকে কর্তৃপক্ষ বরাবর রিপোর্ট করা হলে বিষয়টি আলোচনায় ওঠে। কর্মকর্তারা এ বিষয়ে অন্যান্য ব্যাংককে সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। একই সঙ্গে জালিয়াতির শিকার ব্যাংকগুলোকে তদন্ত কাজে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে পুলিশ ধারণা করছে, এই ‘মহাচুরিতে’ আন্তর্জাতিক অপরাধীচক্রের অন্তত ১০০ জন জড়িত ছিল এবং তারা মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে কাজটি সেরে ফেলে। তারা লেনদেন করেছে ১৪ হাজারবার, যার মধ্যে সর্বোচ্চ উত্তোলন ছিল এক লাখ ইয়েন।
পুলিশ এখন বুথগুলোর সিকিউরিটি ক্যামেরা পরীক্ষা করে, কারা কারা টাকাগুলো উঠিয়েছে তাদের চিহ্নিত করার কাজ করছে বলে জাপান টাইমস জানিয়েছে।
এর আগে ২০১২ ও ২০১৩ সালে ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি করে জাপানসহ ২০টি দেশের বিভিন্ন অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান থেকে সাড়ে চার বিলিয়ন ইয়েন তুলে নিয়েছিল জালিয়াতচক্র।
ওই ঘটনার জন্য মালয়েশিয়ার একটি অপরাধীচক্রকে দায়ী করে জাপান পুলিশ তাদের ধরতে ইন্টারপোলের সহায়তা চেয়েছে।