‘মিয়ানমারের’ বিমান হামলায় চীনে নিহত ৪
মিয়ানমারের বিমান হামলায় ইউনান প্রদেশে চার নাগরিক নিহত হওয়ার অভিযোগ করেছে চীন। আর মিয়ানমারের দাবি, চীনের সঙ্গে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ তৈরি করতে বিদ্রোহীদের পরিকল্পনায় কাজটি হয়ে থাকতে পারে।
আজ শনিবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের সীমান্তে মিয়ানমারের বিমান থেকে নিক্ষিপ্ত বোমায় চারজন চীনা নাগরিক নিহত হয়েছেন।
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে দ্য গার্ডিয়ান জানায়, শুক্রবার ইউনানের লিনকাং শহরের কাছে একটি আখক্ষেতে বোমাটি বিস্ফোরিত হয়। এতে চারজন নিহত ও আরো নয়জন আহত হয়েছেন।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বেইজিং আজ শনিবার মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে। এতে চীনা উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী লিউ ঝেনমিন মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত থিট লিন ওহনকে সীমান্তে বিমান থেকে বোমাবর্ষণের ঘটনাটি তদন্ত করা ও সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বোমাবর্ষণের ঘটনা ও সীমান্তে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযানে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে সীমান্তে নজরদারি করার জন্য ওই এলাকায় বিমানবাহিনীর আরো টহল বিমান পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন চীনের বিমানবাহিনীর এক মুখপাত্র।
চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার সীমান্ত আছে।
মিয়ানমার সরকার গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে চীনের চাপের মুখে সীমান্তবর্তী কোকাং এলাকায় উত্তেজনা কমানোর জন্য বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। এই অভিযানে চলতি মাসের প্রথমদিকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিক্ষিপ্ত গোলা দিকভ্রষ্ট হয়ে চীনা সীমান্ত এলাকায় একটি বাড়িতে আঘাত হানে। ওই ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছিল চীন। এর মধ্যেই ইউনান প্রদেশে এ বোমাবর্ষণের ঘটনা ঘটল।
গার্ডিয়ান জানিয়েছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে কোকাংয়ে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযান শুরু করার পর ওই এলাকায় ঘরবাড়ি ছেড়ে চীনে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন লক্ষাধিক বাসিন্দা, যাদের বেশির ভাগই চীনা নৃগোষ্ঠীর মানুষ।
মিয়ানমার জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট সেনা (এমএনডিএএ) নামে পরিচিত কোকাংয়ে বিদ্রোহীদের অধিকাংশও এই চীনা নৃগোষ্ঠীরই মানুষ; যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন জাতিগতভাবে চীনা নৃগোষ্ঠীর পেং জিয়াশেং।
কমিউনিস্ট মতাদর্শে বিশ্বাসী ও চীনা সমর্থনপুষ্ট এই বিদ্রোহী দল ১৯৮৯ সাল থেকে কোকাং এলাকায় গেরিলা যুদ্ধ করে আসছে।