টয়লেট ব্যবহারে নগদ পুরস্কার
গত কয়েক দশকে অর্থনীতিসহ নানাবিধ ক্ষেত্রে ভারতের উন্নতি হয়েছে। কিন্তু টয়লেট ব্যবহার আর পয়োনিষ্কাশন সুবিধায় বেশ কয়েক বছর ধরেই সর্বনিম্নে ছিল দেশটি। এ নিয়ে সারা বিশ্বের পত্রপত্রিকায় কম লেখালেখি-সমালোচনা হয়নি। এই সমালোচনার জেরেই কিনা ভারত সরকার যত্রতত্র মলত্যাগ ঠেকাতে নানাবিধ উদ্যোগ নিয়েছে।
এমনই এক অভিনব উদ্যোগের কথা জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা বিবিসি। প্রকাশিত এক খবরে সংবাদ সংস্থাটি জানায়, ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদের নগর কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি একটি প্রকল্প চালু করেছে, যেখানে শিশুদের টয়লেট ব্যবহারের বিনিময়ে অর্থ দেওয়া হচ্ছে।
আহমেদাবাদের চন্ডোলিয়া নামে একটি এলাকার কয়েকটি বস্তির অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে গুজরাট স্যানিটেশন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের চেয়ারম্যান অনিল প্রজাপতি বলেন, ‘আমরা পাবলিক টয়লেট বানিয়েছি সত্যি, কিন্তু মানুষকে সেটা ব্যবহার করাতে পারিনি।’
অনিল প্রজাপতি আরো বলেন, ‘ খুবই হাস্যকর হলেও এটা সত্যি, কারো কারো ধারণা টয়লেটের ভেতরে ডাইনি রয়েছে। আবার কেউ বা মনে করে টয়লেটে গেলে তাদের সন্তানদের অপহরণ করা হবে। এরা গ্রাম থেকে এসেছে বলে টয়লেট ব্যবহারের অভ্যাসই এদের নেই।’
এসব অভিজ্ঞতার পর আহমেদাবাদের নগর কর্তৃপক্ষ শহরের প্রায় সব পাবলিক টয়লেট থেকে প্রবেশমূল্য সংগ্রহ বন্ধ করে দেয়। তারপরও কিছু শিশুকে দেখা যায় টয়লেটের সামনেই খোলা জায়গায় মলত্যাগ করতে।
পরবর্তী সময়ে নগর কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয় শিশুদেরকে টয়লেট ব্যবহারের বিনিময়ে প্রতিদিন এক রুপি করে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে শিশুদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য টয়লেট ব্যবহারের বিনিময়ে চকলেটও দেওয়া হচ্ছে শহরটিতে।
প্রাথমিকভাবে এই প্রকল্পে সুফল পাওয়া যাচ্ছে এবং কর্তৃপক্ষ এখন বড়দেরও এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসার চিন্তা করছে।
জাতিসংঘের হিসাবে, বিশ্বে ১০০ কোটি মানুষ এখনো খোলা জায়গায় মল ত্যাগ করে, এর মধ্যে ৬০ কোটি মানুষই রয়েছে ভারতে।
এর আগে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলায় খোলা স্থানে মলত্যাগ ঠেকাতে মলত্যাগকারীদের ছবি তুলে দেয়ালে সেঁটে দেওয়ার উদ্যোগ নিতে দেখা গিয়েছিল কর্তৃপক্ষকে।