৯১-তে বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি!
যৌবনে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার শখ ছিল কিমলান জিনাকুলের। থাইল্যান্ডের বিদ্যমান সমাজ বাস্তবতায় সেই সাধ পূরণ হয়নি তাঁর। কিন্তু ইচ্ছাটাকে মনে পুষে রেখেছিলেন। ফলও পেয়েছেন। ১০ বছর চেষ্টার পর জীবন-সায়াহ্নে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জন করেছেন তিনি। প্রায় অসাধ্য সাধন করা থাই এই মহীয়সীর বয়স এখন ৯১ বছর।
বিবিসির থাই সার্ভিসের প্রতিবেদক ওয়াচিরানন্ত থংটেপকে জিনাকুল বলেন, তিনি জীবনের প্রথম দিনগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চেয়েও পারেননি। কিন্তু এর পরবর্তী সময়গুলোতে নিজেদের সন্তানদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে দেখেছেন। এতে তাঁর আগ্রহ দিন দিন বেড়েছে। একসময় সত্তরোর্ধ্ব হওয়ার পরও ভর্তি হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। এর এক দশক পর বুধবার তিনি ডিগ্রি নিতে পেরেছেন।
থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলীয় ল্যামপাং প্রদেশে বেড়ে ওঠেন জিনাকুল। শৈশবে তিনি ছিলেন মেধাবী ছাত্রী। ভর্তিও হয়েছিলেন প্রদেশের অন্যতম সেরা স্কুলে। সাফল্যের সঙ্গে স্কুলের পাঠও শেষ করেছিলেন। কিন্তু তাঁর স্কুলপাঠ শেষ হওয়ার পর পরিবার থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে চলে আসে। এর পর বিয়ে হয় জিনাকুলের। তখন থেকেই উচ্চশিক্ষার স্বপ্নভঙ্গ হয়।
‘এর পরও আমি সব সময়ই সন্তানদের শিক্ষা দিতে চেয়েছি। তাই তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চাইলে আমি উৎসাহ জুগিয়েছি’, বলেন জিনাকুল।
৯১ বছর বয়সী থাই এই নারীর পাঁচ সন্তানের মধ্যে চারজনই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার ডিগ্রি নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন যুক্তরাষ্ট্রে পিএইচডি করতে গেছেন। আর সন্তানদের এমন সাফল্যই জিনাকুলকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে উৎসাহিত করেছে।
৭২ বছর বয়সে প্রথমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু সে সময় এক মেয়ের মৃত্যুর পর পড়ালেখা চালানো হয়নি তাঁর। এর পর ৮৫ বছর বয়সে তিনি দ্বিতীয়বার চেষ্টা চালান। ভর্তি হন হিউম্যান ইকোলজি তথা মানব বাস্তুসংস্থান নামে একটি বিষয়ে। এ যাত্রায় আর ব্যর্থ হননি তিনি। শেষ করেন পড়ালেখা, জুটে যায় ডিগ্রি।