কাতার সংকটের নেপথ্যে যেসব চুক্তি
সন্ত্রাসে অর্থায়নের অভিযোগে গত মাসে মধ্যপ্রাচ্যের প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ আয়তনে ছোট দেশ কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিকসহ সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন নয়টি দেশ। এ বিরোধের মূলে কী রয়েছে, তা নিয়ে বহু জল্পনার মধ্যেই নতুন করে বোমা ফাটিয়েছে সিএনএন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে বিরোধের নেপথ্যের কারণ হিসেবে দুটি চুক্তির কথা বলা হয়েছে।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে নানা সময়ে করা হয় বিভিন্ন চুক্তি। কিন্তু গোপনীয়তা রক্ষার্থে সেগুলো এত দিন জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি। সে ধরনের দুটি চুক্তির নথিপত্র পেয়েছে সিএনএন।
সিএনএনের প্রতিবেদনে উল্লেখিত দুটি চুক্তির প্রথমটি হয় ২০১৩ সালের ২৩ নভেম্বর। সৌদি আরব, কাতার ও কুয়েতের মধ্যে সেই চুক্তি সম্পাদন করা হয়। সেখানে উপসাগরীয় দেশগুলোর নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকার কথা বলা হয়। এ ছাড়া কোনো বিদ্রোহী ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আর্থিক ও রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়।
‘রিয়াদ চুক্তি’ নামে পরিচিত ওই চুক্তিটিতে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বলতে মূলত মুসলিম ব্রাদারহুডের কথা বলা হয়। কাতারকে একঘরে করার পেছনের অন্যতম কারণ এই সংগঠনটিকে সমর্থন।
একই চুক্তিতে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো ওই অঞ্চলে বৈরী অবস্থা সৃষ্টিকারী কোনো গণমাধ্যমকে সমর্থন করবে না। চুক্তিতে মূলত কাতার সরকারের আর্থিক সাহায্যে পরিচালিত টেলিভিশন চ্যানেল আলজাজিরার কথা বলা হয়।
সিএনএনের প্রতিবেদনে দ্বিতীয় যে চুক্তির কথা বলা হয়, সেটি সম্পাদিত হয় বাহরাইনের বাদশাহ, আবুধাবির যুবরাজ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে। সেখানে মিসরের রাজনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল রাখার অঙ্গীকার করা হয়। এ ছাড়া মিসর সরকারের বিরোধীদের সমর্থন দেওয়া থেকে আলজাজিরাকে বিরত রাখার কথাও বলা হয়।
সিএনএনের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, বিভিন্ন সময়ে কাতারের বিরুদ্ধে চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ আনে সৌদিসহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলো। এসব অভিযোগের জেরেই গত মাসে কাতারের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করে নয় দেশ। সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য কাতারকে ১৩টি শর্ত দেয় তারা। তবে ওই শর্তগুলো ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেয় কাতার।