মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের হামলার পর বেড়েছে তেলের দাম
ইরাকে দুটি মার্কিন বিমানঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও অয়েলপ্রাইস ডটকম জানায়, আজ বুধবার অপরিশোধিত তেলের দাম অন্তত ৪ শতাংশেরও বেশি বেড়ে প্রতি ব্যারেল ৬৫.৪৮ মার্কিন ডলারে বিক্রি হচ্ছে।
হামলার খবরের আগে গতকাল মঙ্গলবার ব্যারেলপ্রতি তেল ৬২.৭০ ডলারে বিক্রি হচ্ছিল। মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার খবরে দামের ঊর্ধ্বগতি শুরু হয়। এর আগে গত শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) ইরাকে মার্কিন হামলায় ইরানি জেনারেল কাসেম সোলেইমানি নিহতের পরও তেলের দাম বেড়ে যায়।
মধ্যপ্রাচ্যের চলমান পরিস্থিতিতে তেলের সরবরাহ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হতে পারে বলে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম এবং জাপানি মুদ্রার দামও দ্রুতগতিতে বেড়েছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার বিকেল থেকে পশ্চিম ইরাকের আল-আনবার প্রদেশের আল-আসাদ মার্কিন বিমানঘাঁটিতে এবং পরে মধ্য ইরাকের কুর্দি অধ্যুষিত এলাকা ইরবিলের মার্কিন বিমানঘাঁটিতে এক ডজনের বেশি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর পেন্টাগন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা জানিয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভির খবরে সুনির্দিষ্টভাবে ১৩টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর কথা বলা হয়।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি জানায়, বাগদাদে মার্কিন হামলায় ইরানি জেনারেল কাসেম সোলেইমানি হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে ইরাকে আল-আসাদ নামে মার্কিন সেনাঘাঁটিতে মিসাইল হামলা চালিয়েছে ইরান।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ইরাকের ওই দুটি মার্কিন বিমানঘাঁটিতে মার্কিন সেনারা অবস্থান করছিল। প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হওয়ার কথা স্বীকার করলেও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে এখনো কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র স্টেফানি গ্রিসাম এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ইরাকে আমাদের স্থাপনায় হামলার বিষয়ে আমরা অবগত আছি। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতীয় নিরাপত্তা টিমের সঙ্গে নিবিড়ভাবে তা পর্যবেক্ষণ করছেন।’
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, মার্কিন বিমানঘাঁটিতে হামলা চালানোর কথা স্বীকার করেছে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড। ইরানি মদদপুষ্ট কোনো গোষ্ঠীর মাধ্যমে হামলা চালানো হয়নি। দেশটির রাষ্ট্রীয় প্রেসটিভি এক টুইট বার্তায় উল্লেখ করেছে, একটি মার্কিন বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার কথা বলা হয়। যদি যুক্তরাষ্ট্র ফের কোনো হামলা চালায়, তবে আরো কঠোর প্রত্যাঘাত করা হবে।
গত শুক্রবার ভোরে ইরাকের বাগদাদে মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানি জেনারেল কাশেম সোলেইমানি নিহত হয়েছেন। সোলেইমানি হত্যার ঘটনায় ইরান চরম প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দেয়। এর প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাল্টা হুমকি দিয়ে বলেন, ইরান হামলা চালালে দেশটির ৫২টি স্থাপনায় খুব দ্রুত ও শক্তিশালী হামলা চালানো হবে।