বেলারুশে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনে চুক্তির ঘোষণা পুতিনের
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, তার দেশ প্রতিবেশি বেলারুশের ভূখণ্ডে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
গতকাল শনিবার (২৫ মার্চ) পুতিনের এই ঘোষণাটি এলো এমন সময়ে যখন ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে এবং কোনো কোনো ভাষ্যকারের ধারণা অনুসারে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে।খবর আলজাজিরার।
ভ্লাদিমির পুতিন জানান, বেলারুশের সঙ্গে এই চুক্তি পারমাণবিক নিরস্ত্রিকরণ চুক্তি লঙ্ঘণ করবে না, পাশাপাশি তিনি এটাও জানান যে, যুক্তরাষ্ট্র যুগ যুগ ধরে তার ইউরোপীয় মিত্রদের ভূখণ্ডে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করে রেখেছে।
পুতিন বলেন, ‘আমরা একই রকম কাজ করার বিষয়ে সম্মত হয়েছি আইনগত বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন না করে। আমি জোর দিয়ে বলছি পারমাণবিক নিরস্ত্রিকরণ বিষয়ে যে আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে তা আমরা লঙ্ঘন করব না।’
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে পুতিন বলেন, ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্র পোল্যান্ডের সঙ্গে সীমান্ত ঘেঁষা দেশ বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো তার দেশে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের বিষয়টির ওপর অনেক আগে থেকেই আলোকপাত করছিলেন।
পুতিন জানান, রাশিয়া আগামী জুলাই মাসের ১ তারিখেরে মধ্যে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মজুদ রাখার জন্য সংরক্ষণাগারের নির্মাণ কাজ শেষ করবে। তিনি আরও বলেন, রাশিয়া বেলারুশের কাছে অস্ত্রের পুরো নিয়ন্ত্রণ তুলে দেবে না।
পুতিন বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধে কিয়েভ যদি পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে স্বল্পমাত্রার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ গোলা গ্রহণ করে তবে তার দেশও সে ধরনের গোলা সরবরাহ করবে। যুক্তরাজ্য ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী এসব গোলা ইউক্রেনে পাঠানোর ঘোষণার পরপরই পুতিন এই ঘোষণা দিলেন।
পুতিন জানান, রাশিয়া ইতোমধ্যে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র বহণে সক্ষম ১০টি বিমান বেলারুশে মোতায়েন করেছে। তাছাড়া দেশটিতে পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম বেশ কিছু ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্রও হস্তান্তর করা হয়েছে।
পশ্চিমা দেশগুলো যদি ইউক্রেনকে স্বল্প মাত্রার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ গোলা সরবরাহ করে তবে তার সাড়া কীভাবে দেবে মস্কো- এমন প্রশ্নের জবাবে পুতিন বলেন, রাশিয়ার এ ধরনের অস্ত্রের বিপুল সম্ভার রয়েছে।
পুতিন বলেন, ‘জবাব দেওয়ার জন্য যা দরকার রাশিয়ার অবশ্যই তা আছে।’ রুশ টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি বাড়িয়ে বলছি না, এ ধরনের হাজার হাজার গোলা আমাদের রয়েছে। আর আমরা এগুলো এখনো ব্যবহার করিনি।’
এদিকে পারমাণবিক অস্ত্র বিলুপ্ত করার বিষয়ে আন্তর্জাতিক প্রচারণা সংস্থা আইসিএএন এই পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিপজ্জনক অবস্থার বিষয়ে ভীষণ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।