ছয় মাসের মধ্যে দৈনিক সর্বোচ্চ সংক্রমণ দেখল যুক্তরাষ্ট্র
গত ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ করোনা সংক্রমণ দেখল যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল বুধবার দেশটিতে নতুন করে এক লাখের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে রয়টার্সের এক পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে। যেসব এলাকায় লোকজন ভ্যাকসিন নেয়নি সেখানে ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে শুরু করেছে।
টানা সাতদিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিনই ৯৪ হাজারের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে। দেশটির সংক্রামক রোগের বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যান্থনি ফসি সতর্ক করে বলেছেন, অতিসংক্রামক ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের কারণে আগামী দিনগুলোতে দৈনিক সংক্রমণ দ্বিগুণ হয়ে প্রতিদিন দুই লাখ সংক্রমণ শনাক্ত হতে পারে।
অ্যান্থনি ফসি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘সামনের দিনগুলোতে যদি করোনার এমন একটি ধরন আসে যেটা একই সঙ্গে শুধু সংক্রামকই নয় বরং, অনেক বেশি গুরুতরও, তবে আমরা সত্যিই খুব বিপদে পড়ে যাব।’
অ্যান্থনি ফসি বলেন, যারা ভ্যাকসিন নেননি তারা এটা ভাববেন না যে এটা শুধু তাদের ব্যাপার। কিন্তু এটা আসলে সবার জন্যই নিরাপদ।
সর্বপ্রথম ভারতে শনাক্ত হওয়ায় ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট ভারতীয় ধরন হিসেবেও পরিচিত। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার্স ফর ডিজেজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন জানিয়েছে, দেশটিতে নতুন শনাক্ত হওয়া সংক্রমণের মধ্যে ৮৩ শতাংশই ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট।
হোয়াইট হাউসের কোভিড-১৯ রেসপন্স টিমের তথ্য অনুযায়ী, নতুন সংক্রমণের মধ্যে ৯৭ শতাংশই ভ্যাকসিন নেয়নি।
গত কয়েক সপ্তাহে করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর হারও বেড়েছে। গত কয়েকদিনে গড়ে প্রতিদিনই প্রায় সাড়ে তিনশর বেশি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।
বর্তমানে ফ্লোরিডা, টেক্সাস এবং লুইজিয়ানার পরিস্থিতি সবচেয়ে উদ্বেগজনক। সেখানে হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকহারে বাড়তে শুরু করেছে।
এদিকে সংক্রমণের গতিরোধ করতে রেস্টুরেন্ট, জিম এবং অন্যান্য ব্যবসায়িক কেন্দ্রে ভ্যাকসিনের সার্টিফিকেট দেখানোর নিয়ম জারি করেছে নিউইয়র্ক। ওই অঙ্গরাজ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ কমপক্ষে ভ্যাকসিনের একটি ডোজ গ্রহণ করেছে। কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও তাদের কর্মী এবং ক্রেতাদের ভ্যাকসিন গ্রহণ বাধ্যতামূলক করেছে।
করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুতে এখন পর্যন্ত বিশ্বে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে তিন কোটি ৬১ লাখ ৭৬ হাজার ৪৭১ জনের। এদের মধ্যে মারা গেছে ছয় লাখ ৩১ হাজার ২৯৯ জন। আর সুস্থ হয়েছে দুই কোটি ৯৭ লাখ ৮৭ হাজার ৩১৬ জন।