চীনে করোনাভাইরাসে মৃত ২ হাজার ছাড়াল
চীনে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসজনিত কোভিড-নাইনটিন রোগে মৃতের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এবার তা দুই হাজার ছাড়িয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য কমিশনের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, এ পর্যন্ত দুই হাজার চারজন এই ভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছেন। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭৪ হাজার ছাড়িয়েছে।
চীনে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং এক হাজার ৭৪৯ জন নতুন করে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে নতুন করে যাঁরা মারা যাচ্ছেন এবং আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের বেশিরভাগই হুবেই প্রদেশের।
মৃতের সংখ্যার দিক থেকে সার্সকে অনেক আগেই ছাপিয়ে গেছে করোনা-গোত্রীয় কোভিড-১৯ ভাইরাস। আগের চেয়ে আক্রান্ত ও মৃতের হার কমে আসায় কিছুটা স্বস্তিতে চীন সরকার। যদিও বেইজিংভিত্তিক গণমাধ্যম সিয়াক্সিন বলছে, সরকারি বিবৃতিতে সংখ্যা কমিয়ে বলা হলেও চীনের তিন হাজার স্বাস্থ্যকর্মী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
এদিকে, সার্বিক করোনা পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে চীনের সেন্টার ফর ডিজিজি কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে ৮০ ভাগ রোগীর অবস্থা আশঙ্কামুক্ত। ঝুঁকিতে রয়েছে ১৪ শতাংশ আর প্রায় পাঁচ ভাগ সংকটাপন্ন। এই ভাইরাস নয় বছরের বেশি বয়সী শিশুদের চেয়ে বয়স্কদের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলে উল্লেখ করা হয় গবেষণা প্রতিবেদনে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রস আধানম বলেন, ‘চীন সরকার নতুন একটি তালিকা প্রকাশ করেছে, যেখানে ৪৪ হাজার আক্রান্তের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের মতো অন্য দেশগুলোকে তালিকা প্রকাশের আহ্বান জানাচ্ছি। তথ্য প্রকাশ করলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সময়োপযোগী কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে।’
নোভেল করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরির গবেষণা কাজ এগিয়ে নিতে অস্ট্রেলিয়া সরকার দুই মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেওয়ার কথা জানিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার মেলবোর্নের একটি হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এই বরাদ্দের ঘোষণা দেন। চীনফেরত অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক, যাঁরা ১৪ দিন ক্রিসমাস আইল্যান্ডে কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর বাড়ি ফিরেছেন, তাঁদের অভিনন্দনও জানান তিনি।
অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেন, ‘গোটা বিশ্ব একটি অরক্ষিত সময় পার করছে। এ মুহূর্তে নতুন করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছি আমরা। যা শুধু অস্ট্রেলিয়া নয়, বরং পুরো বিশ্বের জন্য জরুরি। এ ছাড়া চীনফেরত আমাদের নাগরিকরা যারা ১৪ দিন ধৈর্যসহ পর্যবেক্ষণে থেকে বাড়ি ফিরেছেন, তাঁদের অভিনন্দন।’
চীনে কোভিড-১৯ প্রকোপ ধীরে ধীরে কমতে থাকলেও জাপানের পরিস্থিতি কিছুটা বেগতিক। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইয়োকোহামায় কোয়ারেন্টাইনে থাকা প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসে আরো ৯৯ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়েছে। এর মধ্যে ৩৩ জন ফিলিপাইনের নাগরিক। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটির কারণে নিউইয়র্ক, লন্ডনসহ আরো গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি শহরে নিজেদের ফ্লাইট সীমিত করে দিয়েছে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস।