কাবুল বাদে সব গুরুত্বপূর্ণ শহর তালেবানের দখলে

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল বাদে সব গুরুত্বপূর্ণ শহর তালেবানের দখলে চলে গেছে। সর্বশেষ আজ রোববার সকালে জালালাবাদের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তালেবান। এর আগে গতকাল শনিবার উত্তরাঞ্চলের শহর মাজার-ই-শরিফ-এর দখল নেয় তালেবান। উত্তর আফগানিস্তানের এই শহরটিতেই শক্ত নিয়ন্ত্রণ ছিল আফগান সরকারের। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে এসব তথ্য জানানো হয়।
তালেবানবিরোধী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত শহর মাজার-ই-শরিফ বেহাত হওয়ায় আফগান সরকার বেশ বড় ধরনের একটি ধাক্কা খায়। এবার জালালাবাদের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তা চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে গেল।
যুক্তরাষ্ট্রের চূড়ান্ত সেনা প্রত্যাহারের পর থেকেই ক্ষিপ্র গতিতে একের পর এক শহর দখলে নিয়ে নিচ্ছে সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান।

কয়েকদিন আগেও প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি মাজার-ই-শরিফে সেনাবাহিনীর এক র্যালিতে যোগ দিতে যান। দেশের বেশির ভাগ অঞ্চল এরই মধ্যে তালেবানের দখলে চলে গেছে। রাজধানী কাবুলের নিকটবর্তী অবস্থানেও পৌঁছে গেছে তালেবান যোদ্ধারা।
মাজার-ই-শরিফের গুরুত্বপূর্ণ দুই মিলিশিয়া নেতা আত্তা মোহাম্মদ নূর ও আব্দুর রশিদ দোস্তুম পালিয়েছেন বলে জানা গেছে। একই সঙ্গে আফগান সেনা বাহিনীর গাড়িবহর মাজার-ই-শরিফ ছেড়ে গেছে।
অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শনিবার পাঁচ হাজার সেনা মোতায়েনের অনুমোদন দিয়েছেন। আফগানিস্তানে অবস্থানরত মার্কিনি সামরিক বাহিনীর লোকজনকে সুষ্ঠুভাবে ও নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে এই সেনা মোতায়েনের কথা বলা হয়েছে। এরই মধ্যে মার্কিন সেনারা কাবুলে পৌঁছেছে। এই পাঁচ হাজার সেনার মধ্যে এক হাজার ৮২তম বৈমানিক বিভাগের সৈন্য থাকার কথা রয়েছে।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, তাঁর প্রশাসনের লোকজন কাতারে তালেবানের প্রতিনিধিদের জানিয়ে দিয়েছে, মার্কিন নাগরিকদের ওপর কোনো ধরনের হামলা করা হলে যুক্তরাষ্ট্র দ্রুততার সঙ্গে সামরিক পন্থায় জবাব দেবে।
এদিকে, যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত আজ রোববার আফগানিস্তান ছাড়ার কথা রয়েছে। ব্রিটিশদের নিরাপদে আফগানিস্তান থেকে ফিরিয়ে আনতে ৬০০ সেনা পাঠিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, তালেবান খুবই অল্প সময়ের মধ্যে রাজধানী কাবুলে হামলা চালাতে পারে। আফগান সরকার যেকোনো কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রাখতে চাইবে। ফলে সেখানে ব্যাপক সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে বহু মানুষ। এ ছাড়া গত কয়েক দিনে আফগানিস্তানের বিভিন্ন শহর থেকে নিরাপদ ভেবে অনেকেই রাজধানী কাবুলে আশ্রয় নিয়েছেন।