উইঘুরবাসীকে বাধ্য করে পণ্য উৎপাদন, আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
উইঘুর মুসলিমদের জোর করে শ্রম দিতে বাধ্য করায় চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে উৎপাদিত পণ্য আমদানি বন্ধ করছে যুক্তরাষ্ট্র। আমদানি নিষেধাজ্ঞা প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ওয়াশিংটনের তিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস এমন খবর দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া চীনা পণ্যের মধ্যে থাকছে তুলা, টেক্সটাইল পণ্য ও টমেটো; যা চীনের প্রধান রপ্তানি পণ্য। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন জানিয়েছে, জিনজিয়াং প্রদেশের ডিটেনশন ক্যাম্পে ১০ লাখের বেশি উইঘুর মুসলিমকে নিপীড়নের প্রতিক্রিয়ায় চীনের বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রটেকশন (সিবিপি) কর্তৃপক্ষ বলছে, জাহাজে থাকা এসব চীনা পণ্য তারা খালাসের অনুমতিও দেবে না। উইঘুর মুসলিমদের জোর করে চীন যেসব পণ্য উৎপাদন করছে, তার তালিকাও তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।
সিবিপির দাবি, তাদের হাতে যে প্রমাণ আছে তা থেকে বোঝা যাচ্ছে, শ্রমিকদের ঋণজালে বেঁধে ফেলা হচ্ছে। স্বাধীনভাবে যাতায়াত করতে দেওয়া হচ্ছে না। ভয় দেখানো হচ্ছে। বেতন বন্ধ রাখা হচ্ছে। গালাগাল দেওয়া হচ্ছে এবং তাঁদের জীবনযাপনের মানও খুব খারাপ।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র গত সোমবার জানিয়েছিলেন, চীনের কমিউনিস্ট পার্টিকে জিনজিয়াংয়ে জোর করে শ্রমের কাজ বন্ধ করতে হবে। জিনজিয়াংয়ে ১০ লাখ উইঘুর মুসলিম যে বন্দিশিবিরে আছেন, তার উপযুক্ত প্রমাণ তাদের হাতে আছে। তা ছাড়া উইঘুরদের ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখার প্রমাণ তাদের হাতে আছে বলেও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর দাবি করে আসছে।
বিশ্বের তুলা উৎপাদনের ২০ ভাগ হয় চীনে। আর তাদের ৮০ ভাগ তুলার উৎপাদন হয় জিনজিয়াংয়ে। আর বিশ্বের মোট টমেটো উৎপাদনের ২ শতাংশ হয় চীনে। তবে ২০১৫ থেকে তারা টমেটোর উৎপাদন ও রপ্তানি দ্রুত বাড়াচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুসারে কোনো জিনিস জোর করে শ্রমের ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে জানতে পারলে তা আটক করবে সিবিপি। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে সিবিপি জানিয়েছে, চীনের তুলা ও টমেটোয় আপাতত তারা রিলিজ অর্ডার দেবে না। সিবিপির কর্মকর্তা ব্রেন্ডা স্মিথ বলেন, ‘আমাদের কাছে যুক্তিগ্রাহ্য প্রমাণ আছে, তবে সেটি নির্ণায়ক নয়। জিনজিয়াং থেকে আসা টমেটো, তুলা ও তুলাজাত পণ্যের ক্ষেত্রে জোর করে শ্রমের ঝুঁকি সব সময়ই থাকে। আমরা তদন্ত চালিয়ে যাব।