‘চীন সরকারের গবেষণাগারেই তৈরি করোনা, আমার কাছে প্রমাণ আছে’
যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে, নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পেছনে চীন সরকারের ভূমিকা রয়েছে। চীনের গোপন গবেষণাগারে কৃত্রিম উপায়ে তৈরির পর ভাইরাসটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে—এমন দাবির পক্ষে প্রমাণ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন চীনের বিখ্যাত ভাইরোলজিস্ট লি মেং ইয়ান।
লি মেং দাবি করেছেন, চীনের গবেষণাগারেই তৈরি করা হয়েছে নভেল করোনাভাইরাস, অর্থাৎ এটি মানুষের তৈরি। লি মেংয়ের দাবি, তাঁর কাছে প্রমাণ আছে এ কথার। ভাইরাসজনিত রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হয়ে এমন দাবি করায় নড়েচড়ে বসেছে সবাই।
অজ্ঞাত স্থান থেকে যুক্তরাজ্যের ‘লুজ ওম্যান’ টক শোতে অংশ নিয়ে গত শুক্রবার এমন দাবি করেন লি মেং। হংকং স্কুল অব পাবলিক হেলথের এই ভাইরোলজিস্ট বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। তবে কোন শহরে কোথায় আছেন, নিরাপত্তাজনিত কারণে তা প্রকাশ করেননি তিনি।
চীন দাবি করে, উহানের স্থানীয় একটি বাজার থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু সে কথা অস্বীকার করে লি মেং জানিয়েছেন, স্থানীয় চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে প্রমাণ তিনি পেয়েছেন যে করোনাভাইরাস চীনের ল্যাবেই তৈরি হয়েছে।
এর আগে লি মেং দাবি করেন, করোনা সংক্রমণ নিয়ে মিথ্যা বলেছে চীন। চীন আগেই জানতে পেরেছিল, তাদের দেশে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে; তা-ও তারা এ রোগের বিষয়ে সঠিক তথ্য চেপে যায়।
লি মেং বলেছেন, চীনে ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসের শুরুর কয়েক দিন এবং জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের ‘নতুন নিউমোনিয়া’র উপদ্রব নিয়ে দুটি গবেষণা চালান তিনি। ওই গবেষণার ফল দেখালে তাঁর সুপারভাইজার তাঁকে ‘চুপ থাকতে বলেন, নয়তো গুম হয়ে যেতে পারেন’ বলে সতর্ক করেন তিনি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) কনসালট্যান্ট ওই সুপারভাইজার এমন কথা বলবেন, তা আশা করেননি লি মেং।
লি মেং বলছেন, ‘এই ভাইরাস প্রাকৃতিক উৎস থেকে আসা নয়। এটি চীনা মিলিটারি ইনস্টিটিউটে তৈরি।’ জানুয়ারি থেকে লি মেং এ নিয়ে কাজ করছেন। কয়েক দিনের মধ্যেই তাঁদের দুটি গবেষণার থেকে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। তাতে লি মেংয়ের দাবির পক্ষে বৈজ্ঞানিক প্রমাণ থাকবে। জিনোম সিকোয়েন্স অনুসরণ করে তিনি ভাইরাসের উৎস জানাবেন। কে এটি প্রস্তুত করেছে, তা জানা যাবে। এ বিষয়ে লি মেং বলেন, ‘জীববিজ্ঞানের প্রাথমিক জ্ঞানসম্পন্ন যে কেউ তা বুঝতে পারবে। ভাইরাসের উৎস চিহ্নিত না হওয়া পর্যন্ত এটি আমাদের সবার জন্য প্রাণঘাতীই থেকে যাবে।’