অ্যাপলের চার দশক
পৃথিবীকে অনেক নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। শুরু করেছে তথ্য ও প্রযুক্তির এক নতুন যুগ। গতকাল পয়লা এপ্রিল চল্লিশে পা দিলো দুনিয়া কাঁপানো অ্যাপল ইনকোরপোরেটেড। নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে এই লম্বা সময় পাড়ি দেওয়া অ্যাপল এখন দুনিয়ার সবচেয়ে দামি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান।
আইফোন, আইপ্যাড কিংবা আইপড দিয়ে দুনিয়া মাতানোর আগেও অ্যাপল বিশ্বকে চমকে দিয়েছিল অনন্য সব প্রযুক্তি পণ্য নির্মাণ করে। ৪০-এ পা রাখা অ্যাপল সম্পর্কে ব্যবসা ও প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট বিজনেস ইনসাইডার জানিয়েছে ১০ অজানা তথ্য
১. অ্যাপল নামটি কীভাবে এলো
অ্যাপলের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৬ সালের এপ্রিলের প্রথম দিনে। অ্যাপল নামকরণের ইতিহাসও বেশ ঘোলাটে ছিল। তবে তার সাফ জবাব মিলেছে স্টিভ জবসের মৃত্যুর পর প্রকাশিত আত্মজীবনীতে। স্টিভ জবস ছিলেন পাকা ‘ফলভোজী’ আর আপেল ছিল তাঁর সবচেয়ে পছন্দের ফল।
২. অ্যাপলের লোগো
স্টিভ জবস ও স্টিভ ওজনিয়াকের সাথে তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে অ্যাপলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ছিলেন রোনাল্ড ওয়েন। তবে মাত্র এক বছর পরই নিজের শেয়ার মাত্র ৮০০ ডলারে বিক্রি করে অ্যাপল থেকে ইস্তফা দেন রোনাল্ড। অ্যাপলের প্রথম লোগোটিও কিন্তু তাঁর তৈরি। বিজ্ঞানী নিউটন আর আপেলের বিখ্যাত গল্পকে উপজীব্য করে বানিয়েছিলেন তিনি এই লোগো।
৩. অ্যাপল ১
অ্যাপলের প্রথম কম্পিউটার ‘অ্যাপল ১’ কিন্তু একেবারে ‘রেডিমেড’ হিসেবে থাকত না। বরং ক্রেতাকে নিজের মতো করে কেসিং-এ সাজিয়ে নিতে হতো সব যন্ত্রাংশ। আর দামের দিকে থেকে আক্ষরিক অর্থেই যেন ‘দানবীয়’ ছিল অ্যাপল ১ কম্পিউটারটি। কিনতে খরচ করতে হতো ৬৬৬ দশমিক ৬৬ মার্কিন ডলার।
৪. অ্যাপলের শেয়ারের দাম
১৯৮০ সালে কেউ যদি ২২ ডলার দরে অ্যাপলের শেয়ার কিনে রাখত, তবে আজ তার প্রতিটি শেয়ার মূল্য হতো ৬ লাখ ডলার!
৫. লিসা
গত শতকের আশির দশকের শুরুর দিকে স্টিভ জবসের ডিজাইনে তৈরি হয় অ্যাপলের প্রথম গ্রাফিকাল ইন্টারফেস সংযুক্ত কম্পিউটার ‘লিসা’। তবে অতিরিক্ত দামের কারণে খুব একটা ক্রেতা টানতে পারেনি লিসা।
৬. ম্যাকিন্টোসের বিজ্ঞাপন
অ্যাপলের বিখ্যাত বিজ্ঞাপনগুলোর একটি অ্যাপল ম্যাকিন্টোসের। ১৯৮৪ সালে নির্মিত এই বিজ্ঞাপন দেখানো হয়েছিল ‘সুপার বল’-এর ২৮তম আসরের বিরতিতে। বিজ্ঞাপনটি নির্মাণ করেন হলিউডের বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক রিডলি স্কট, যার ঝুলিতে আছে ‘অ্যালিয়েন’ ‘ব্লেডরানার’ কিংবা ‘গ্লাডিয়েটর’-এর মতো চলচ্চিত্র।
৭. স্টিভ জবসের নেক্সট
১৯৮৫ সালে অ্যাপলের পরিচালনা বোর্ডের সদস্যদের ভোটে প্রধান নির্বাহীর পদ থেকে অপসারিত হন স্টিভ জবস। অ্যাপল ছেড়ে সে সময় তিনি নতুন এক প্রতিষ্ঠান চালু করেন। ‘নেক্সট’ নামক সেই প্রতিষ্ঠান বাজারে বেশ কিছু কম্পিউটার এনেছিল।
৮. লোকসানের মুখে অ্যাপল
গত শতকের আশি এবং নব্বইয়ের দশকে যখন অ্যাপল তাদের ম্যাক কম্পিউটার বিক্রিতে বেশ লোকসানের মুখে পড়েছিল তখন নানা রকম পণ্য বাজারে এনে লাভের মুখ দেখার চেষ্টা চালিয়েছিল তারা। ডিজিটাল ক্যামেরা, গেমিং কনসোল এমনকি তৈরি পোশাকের দিকেও ঝুঁকেছিল তারা।
৯. অ্যাপল ক্যাম্পাসে পোষা প্রাণী নিষিদ্ধ
দ্বিতীয়বারের মতো প্রধান নির্বাহী হয়ে অ্যাপলে ফিরেই স্টিভ জবস তাঁর কর্মীদের অ্যাপল ক্যাম্পাসে পোষাপ্রাণী নিয়ে আসা নিষিদ্ধ করে দেন। তবে তাদের সেই আফসোসে কর্মীদের মুখ যেন ভার না হয় সেজন্য ক্যাফেতে বেশ ভালো খাবারের ব্যবস্থা করে দেন তাঁদের জন্য।
১০. অ্যাপলের মূল্য
২০১১ সালে এসে জানা যায়, ব্যাংকে অ্যাপল ইনকোরপোরেডের যে পরিমাণ অর্থ সঞ্চিত রয়েছে পরিমাণে তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় কোষাগারের চাইতেও বেশি!